জমি দখলের অভিযোগে সংবাদ সম্মেলনের পর এবার আদালতে মামলা করলেন বরিশালের বানারীপাড়ার উদয়কাঠী ইউনিয়নের পশ্চিম তেতলা গ্রামের রতন ঘরামী।
বরিশালের অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিমের (বানারীপাড়া আমলি) আদালতে বৃহস্পতিবার দুপুরে মামলাটি হয়।
এর আগে জমি দখল চেষ্টার অভিযোগে মঙ্গলবার বিকালে বরিশাল প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন রতন।
নিউজবাংলাকে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. হাফিজ বলেন, ‘রতন ঘরামী চারজনের বিরুদ্ধে আদালতে আবেদন করলে বিচারক মামলাটি আমলে নেন। তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দেন বিচারক। এক মাসের মধ্যে তদন্ত সংস্থাকে প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।’
আসামিরা হলেন বরিশাল-২ আসনের সংসদ সদস্য শাহে আলমের ম্যানেজার আল আমিন, সহযোগী তুহিন গাজী, ইলিয়াস খান ও স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. ইব্রাহিম ব্যাপারী।
মামলায় আসামিদের নামের তালিকায় এমপি শাহে আলমের নাম না থাকলেও এজাহারের বিবরণে তার নাম উল্লেখ রয়েছে।
এজাহারে বলা হয়, বাদী পেশায় কৃষক। ১৫ দিন আগে আনুমানিক রাত ৮টার দিকে স্থানীয় সংসদ সদস্য শাহে আলম তার বাসায় বাদীকে ডেকে পাঠান। কৃষক রতন ঘরামী সংসদ সদস্যের বাসায় গেলে তাকে প্রজেক্টের জন্য তার ১৫ কাঠা জমি লিখে দিতে বলেন।
বাদী উত্তর না দিয়ে চলে আসেন। এরপর ২৪ জানুয়ারি রাতে শাহে আলমের ম্যানেজার আল আমিনসহ মামলার আসামিরা রতনের বাড়িতে এসে ওই জমি এমপির নামে লিখে দিতে বলেন। জানান, তা না করলে দেশে থাকতে পারবে না।
আরও বলা হয়, সোমবার রাতে এমপির নির্দেশে স্থানীয় মেম্বার ইব্রাহীম, এমপির ম্যানেজার আল আমিন, তুহিন গাজী ও ইলিয়াস খান তার বাড়িতে গিয়ে তাকে আটকে রাখে। তারা জানায়, সকালে রেজিস্ট্রি অফিসে গিয়ে দলিলে সই করতে হবে।
ঘটনাটি জেনে তার স্বজনরা জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ ফোন করলে রাত ২টা ২০ মিনিটে পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে। একই সঙ্গে তুহিন গাজী ও ইলিয়াস খানকে আটক করে। কিন্তু মঙ্গলবার সকালেই তাদের ছেড়ে দেয়া হয়।
ছয় মাস ধরে আসামিরা রতনকে ভয়ভীতি ও নানাভাবে হয়রানি করছে বলেও এজাহারে বলা হয়।
নিউজবাংলাকে আইনজীবী মজিবর রহমান বলেন, ‘৩৪২, ৩৮৭, ৩৮৯ ধারায় করা এ মামলায় ন্যায়বিচার পাওয়ার বিষয়ে আশাবাদী।’
রতন ঘরামী জানান, তিনিসহ ১৩ সংখ্যালঘু পরিবারের ওপর অত্যাচার ও জমি দখলের চেষ্টার বিরুদ্ধে প্রতিকার চেয়ে জেলা প্রশাসক, জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহকে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
এসব অভিযোগকে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন দাবি করে এমপি শাহে আলম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ষড়যন্ত্র করে বিরোধী পক্ষ এটাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করছে। এ ছাড়া রতন আমার কাছে জমি বিক্রি করতে চেয়েছে, দখলের বিষয় আসবে কেন।’