বিচারক ছুটিতে থাকায় গোপালগঞ্জে জাকিয়া বেগম নামের এক গৃহবধূ খুনের মামলার রায় পিছিয়ে আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেছে আদালত।
বৃহস্পতিবার মামলাটির রায় ঘোষণার তারিখ নির্ধারণ করা ছিল। কিন্তু ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-২-এর বিচারক মো. জাকির হোসেন ছুটিতে থাকায় ভারপ্রাপ্ত বিচারক জেসমিন আরা বেগম রায়ের নতুন তারিখ নির্ধারণ করে দেন।
বিষয়টি নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আবু আব্দুল্লাহ ভূঁইঞা। তিনি জানান, আদালতে চার আসামির মধ্যে তিনজন উপস্থিত ছিলেন।
মামলাটির রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয় গত ১৩ জানুয়ারি। সেদিন জানিয়ে দেয়া হয়, ২৭ জানুয়ারি মামলার রায় ঘোষণা করা হবে।
মামলার আসামিরা হলেন জাকিয়ার স্বামী মোর্শেদায়ান নিশান, নিশানের ভাই এহসান সুশান, ভগ্নিপতি হাসান শেখ ও ম্যানেজার আনিছুর রহমান।
নিশান মাছরাঙা টেলিভিশনের গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি ও স্থানীয় দৈনিক আমাদের গোপালগঞ্জ পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন।
মোর্শেদায়ান নিশান পলাতক রয়েছেন। অপর তিন আসামি জামিনে ছিলেন। গত ১৩ জানুয়ারি আদালত তিন আসামির জামিন বাতিল করে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বিচারক।
জাকিয়া আক্তারকে খুনের ঘটনায় তার বাবা জালাল উদ্দিন মল্লিক চারজনের নামে ২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি গোপালগঞ্জ সদর থানায় মামলা করেন।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০০৬ সালে নিশানের সঙ্গে জাকিয়া বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তাদের একটি পুত্রসন্তান রয়েছে। বিয়ের পর থেকেই নিশানের ও তার পরিবারের সদস্যরা এক কোটি টাকা যৌতুকের জন্য জাকিয়ার ওপর চাপ সৃষ্টি করত। তাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করত। সন্তানের কথা চিন্তা করে নির্যাতন সহ্য করতেন জাকিয়া।
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, ২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাতে আসামিরা জাকিয়ার কাছে মোর্শেদায়ান নিশানের নামে ঢাকায় ফ্ল্যাট কিনে দেয়ার জন্য এক কোটি টাকা যৌতুক দাবি করেন। জাকিয়া যৌতুক দিতে অস্বীকৃতি জানালে আসামিরা জাকিয়াকে জোর করে শোয়ার ঘর থেকে রান্নার ঘরে নিয়ে যান। নিশান অন্য আসামিদের প্ররোচনায় তাকে কুপিয়ে হত্যা করেন।
মামলা তদন্ত করে ওই বছরের ৯ জুন গোপালগঞ্জ জেলার ডিবি পুলিশের পরিদর্শক সওগতুল আলম চারজনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করেন। এরপর গোপালগঞ্জ জেলা জজ আদালতে চার আসামির বিচার শুরু হয়।
মামলায় সাতজনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়। দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে মামলাটি আসার পর আরও ১৩ জন সাক্ষ্য দেন। চার্জশিটভুক্ত ২০ সাক্ষীর মধ্যে ২০ জনেরই সাক্ষ্যগ্রহণ করে আদালত।
গত ৩০ ডিসেম্বর মামলাটি রায়ের জন্য ধার্য ছিল। ওই দিন রায় থেকে মামলাটি উত্তোলন করে আবার আসামিদের আত্মপক্ষ শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। পরে আবার রায়ের দিন ধার্য করা হয়।