চাঁদপুরের এক স্কুল শিক্ষকের মৃত্যু নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। তিনি আত্মহত্যা করেছেন নাকি তাকে বিষ খাওয়ানো হয়েছে তা নিয়ে চলছে আলোচনা।
শহরের তালতলা বিষ্ণুদী আজিমিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তিনতলার শ্রেণিকক্ষ থেকে বুধবার বিকেল ৪টার দিকে অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করা হয় শিক্ষক রফিকুল ইসলামকে। চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতাল থেকে ঢাকায় নেয়ার পথে মৃত্যু হয় তার।
নিউজবাংলাকে এ তথ্য জানান চাঁদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আসিফ মহিউদ্দিন।
৫৫ বছর বয়সী ওই প্রধান শিক্ষকের নাম মো. রফিকুল ইসলাম। তার বাড়ি জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলার গল্লাক শ্রীকালিয়া গ্রামে। পরিবার নিয়ে শহরের নাজিরপাড়া এলাকায় চাঁদপুর পৌরসভার সচিব আবুল কালাম ভুঁইয়ার বাড়িতে ভাড়া থাকতেন তিনি।
পরিবার ও সহকর্মীদের বরাতে পুলিশ জানায়, কাজ শেষে সবাই চলে গেলেও রফিকুল ইসলাম বিদ্যালয়ে বৈঠক হবে বলে থেকে যান। তিনি বাসায় না যাওয়ায় বিকেলে তার স্ত্রী মিলি বেগম বিদ্যালয়ে আসেন এবং তৃতীয় তলার একটি কক্ষে তাকে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে।
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিক নারগিস বেগম স্বপ্না বলেন, ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে তিনি এই বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। এরপর করোনার কারণে বিদ্যালয় বন্ধ ছিল। এ বছর তিনি বিদ্যালয় ভর্তিসহ যাবতীয় শিক্ষক কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছেন। শিক্ষকদের সঙ্গে তিনি কম কথা বলতেন। একটু শান্ত প্রকৃতির ছিলেন।
চাঁদপুর সহকারী জেনারেল হাসপাতালের দায়িত্বরত মেডিক্যাল অফিসার সাগর মজুমদার বলেন, ‘রোগীটিকে আমাদের কাছে একদম শেষ অবস্থায় নিয়ে আসে। আমরা যখন পেয়েছি তখন তার শরীরে কোন পালস ছিল না, ব্লাড প্রেসার ছিল না অর্থাৎ শরীর কোনো রেসপন্স ছিল না। আমরা তাৎক্ষণিক তাকে ঢাকা রেফার করি। পরবর্তীতে জানতে পারি তিনি মারা গিয়েছেন। তবে বিষক্রিয়া নাকি অন্য কারণে মারা গেছে তা এখনি বলতে পারছি না।’
ময়নাতদন্তের মাধ্যমে তার মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে বলে জানান তিনি।
এ ব্যাপারে পুলিশ সুপার আসিফ মহিউদ্দিন বলেন, ‘আমরা ঘটনাস্থল থেকে একটি নোট ও বিষের বোতল উদ্ধার করেছি। এগুলো আমাদের তদন্ত ও পর্যালোচনার বিষয় রয়েছে। আমরা তদন্ত করে দেখছি। পরিবার থেকে মামলার প্রক্রিয়া চলছে।’
তিনি আরও জানান, মরদেহ সুরতহাল করা হয়েছে। তার শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।