বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

উপচে পড়া অর্ডার, কর্মীসংকটে চট্টগ্রামের পোশাক খাত

  • নিউজবাংলা ডেস্ক   
  • ২৭ জানুয়ারি, ২০২২ ০৯:১১

এর মধ্যে অনেক কারখানা দুই শিফটে কাজ করছে। বাড়তি অর্ডার থাকলেও উৎপাদন সক্ষমতার তুলনায় বেশির ভাগ কারখানাতেই কর্মী ঘাটতি ১৫-২০ শতাংশ।

করোনাভাইরাসের কারণে গত বছরের ধাক্কা থেকে ঘুরে দাঁড়িয়েছে দেশের পোশাক খাত। একের পর এক অর্ডার আসছেই। উপচে পড়া অর্ডার পেয়ে ঢাকার মতোই ব্যস্ত বন্দরনগরী চট্টগ্রামের পোশাক কারখানাগুলোও।

অর্ডারের চাপ সামলাতে প্রায় প্রতিটি কারখানায় লোক নিয়োগ চলছে। অধিকাংশ কারখানার গেটেই দেখা যায় জরুরি ভিত্তিতে কর্মী নিয়োগ দেয়ার বিজ্ঞপ্তি। সময়মতো শিপমেন্ট ধরে রাখতে কাজের এই বাড়তি চাপ সামাল দিতে দরকার হচ্ছে বাড়তি লোকবল।

এর মধ্যে অনেক কারখানা দুই শিফটে কাজ করছে। বাড়তি অর্ডার থাকলেও উৎপাদন সক্ষমতার তুলনায় বেশির ভাগ কারখানাতেই কর্মী ঘাটতি ১৫-২০ শতাংশ।

কর্মীসংকটের মাঝে চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন। ফলে সতর্কতার সঙ্গে কাজ চালিয়ে যেতে হচ্ছে কারখানা মালিকদের।

মালিকরা বলছেন, চাহিদার তুলনায় তারা আশানুরূপ কর্মী পাচ্ছেন না। নতুন নতুন অর্ডার পেলেও কর্মীর অভাবে তা ফিরিয়ে দিতে বাধ্য হচ্ছেন। এমন কর্মীসংকটেও মালিকরা উৎপাদন ঠিক রেখে বিদেশি ক্রেতাদের নির্দিষ্ট সময়ে পণ্য সরবরাহের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

তাদের আশঙ্কা যে হারে করোনার সংক্রমণ বাড়ছে, তা চলমান থাকলে প্রভাব পড়বে পুরো পোশাকশিল্প খাতে। এ ছাড়া বিশ্বজুড়ে আবার লকডাউনের হিড়িক পড়েছে। দেশে যদি সরকার ফের লকডাউন দেয় তাহলে ঘুরে দাঁড়ানো পোশাক খাত বিশাল ক্ষতির সম্মুখীন হবে।

বিজিএমইএ এর তথ্যানুযায়ী, কোভিড-১৯-এর আগে পোশাক খাতে মোটামুটি ৪৪ লাখ কর্মী ছিল, এখন তা কমে ৩৩ লাখে নেমে এসেছে। তবে বাজারের বর্তমান চাহিদা বজায় রাখতে বর্তমানে কমপক্ষে ৩৮ লাখ শ্রমিক প্রয়োজন।

চটগ্রামে রপ্তানিমুখী নিবন্ধিত পোশাক কারখানা আছে ৬৯৪টি। এর মধ্যে চালু থাকা ২৫৩টি কারখানায় কর্মরত আছে প্রায় ৪ লাখ কর্মী। ঘাটতি পূরণে প্রয়োজন আরও ১ লাখ কর্মী।

খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, করোনায় লকডাউন প্রভাবে বিগত বছরগুলোতে বহু কর্মী গ্রামে চলে গেছেন, তাদের অধিকাংশই ফেরেননি। ফলে নতুন ক্রয়াদেশ অনুযায়ী উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য বাড়তি কর্মী চাহিদা বেড়েছে।

এরিয়ন ড্রেস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আতিক নিউজবাংলাকে জানান, গত দুই বছর দফায় দফায় লকডাউনে অনেক কর্মী চাকরি হারিয়েছেন। কেউ কেউ পেশা পরিবর্তন করেছেন। ১০ থেকে ১৫ শতাংশ নারী শ্রমিক বিয়ে কিংবা গ্রামে কাজ পাওয়ার কারণে আর ফিরে আসেননি।

বিজিএমইএর সাবেক এই পরিচালক বলেন, সংকটের মধ্যেই রপ্তানি অর্ডার সবচেয়ে বেশি এসেছে। চট্টগ্রামের প্রতিটি কারখানা ক্যাপাসিটির চেয়ে বেশি অর্ডার নিয়েছে। ফলে অর্ডার অনুযায়ী উৎপাদন ঠিক রাখতে হিমশিম খাচ্ছে। আতিক বলেন, ‘রাতারাতি কর্মীসংকট কাটিয়ে ওঠা সম্ভব নয়। বিকল্প হিসেবে অনেক কারখানা মালিক অত্যাধুনিক মেশিন এনে সংকট সামাল দেয়ার চেষ্টা করছেন। কেউ আবার দুই শিফটে কারখানা চালু রাখছেন।’

চট্টগ্রামের পোশাক কারখানাগুলো ঘুরে দেখা গেছে, বেশির ভাগ কারখানাতে দুই শিফটে শ্রমিকরা কাজ করছেন। এতে উৎপাদন সচল থাকলেও অতিরিক্ত চাপ পড়ছে শ্রমিকদের ওপর। অবশ্য তাদের সুযোগ-সুবিধাও বাড়ানো হয়েছে।

চট্টগ্রাম ইপিজেডের একটি কারখানার অপারেটর শিউলি আক্তার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কারখানায় দম ফেলার সময় নেই। রাত-দিন মেশিন চলছে। নির্দিষ্ট সময়ে পণ্য তৈরি করতে মালিক-শ্রমিক সবাই একসঙ্গে চেষ্টা করছেন। শিফটিংয়ে কাজ করলেও কারখানাগুলো সুযোগ-সুবিধাও বাড়িয়েছে।’

করোনার সংক্রমণ বাড়লেও চট্টগ্রামে পোশাককর্মীদের টিকাদান কর্মসূচি অব্যাহত রয়েছে। তবে এখনও অর্ধেকেরও বেশি কর্মী টিকার আওতায় আসেনি।

করোনার নতুন ঢেউ নিয়ে ভয়ের কথা জানালেন চট্টগ্রামের সনেট টেক্সটাইল লিমিটেড ও বিকেএমইএ-এর পরিচালক লায়ন গাজী মো. শহীদ উল্লাহ।

নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘যেভাবে করোনার সংক্রমণ প্রতিদিন বাড়ছে তাতে ভয়ের মধ্যে আছি। পরিস্থিতি কোন দিকে যায় বুঝে উঠতে পারছি না। এবার আশাতীত অর্ডার পেয়েছে কারখানাগুলো, কিন্তু অর্ডারের তুলনায় কর্মী ঘাটতি বেশি।

‘উৎপাদন ক্ষমতার চেয়ে কর্মী ঘাটতির হার ১৫-২০ শতাংশ। এ সংকটের মধ্যে নতুন করে চিন্তায় ফেলেছে ওমিক্রন। এ ছাড়া কাঁচামালের দাম বৃদ্ধি, কনটেইনার-সংকট তো আছেই।’

বিজিএমইএ-এর সহসভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা টিকার দিকে জোর দিচ্ছি। সরকারের কাছ থেকে যথেষ্ট সহযোগিতা পাচ্ছি। যদি লকডাউন পরিস্থিতি তৈরি না হয়, আশা করি কর্মীসংকট কাটিয়েও অর্ডারগুলো ঠিকঠাক দিতে পারব।’

এ বিভাগের আরো খবর