অনেক প্রতিকূলতা ও সীমাবদ্ধতা নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কাজ করছে বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দিন আবদুল্লাহ।
দুর্নীতি দমনে দুদক ধীরে ধীরে এগিয়ে চলেছে। এ ব্যাপারে তিনি বলেছেন, ‘আজ ঘুমাতে যাবেন, কালই দেশ দুর্নীতিমুক্ত হয়ে যাবে- এমনটা সম্ভব নয়।’
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) বাংলাদেশের দুর্নীতির ধারণা সূচক প্রতিবেদনের বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে দুদক চেয়ারম্যান এসব কথা বলেন।
বুধবার বিকেলে সাংবাদিকদের দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘টিআইবির প্রতিবেদনের ব্যাপারে আমাদের কোনো রি-অ্যাকশন নেই। এটা গ্রহণ করার বিষয় না, প্রত্যাহারেরও বিষয় না।
‘এটি বার্লিনভিত্তিক টিআই ইন্টারন্যাশনালের একটি প্রতিবেদন। তারা একটা রিপোর্ট দিয়েছে, তাদের ক্রাইটেরিয়া আছে। ৮ প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন ইনডেক্স থেকে কোড করে তারা এটা করেছে।’
দুর্নীতিবিরোধী আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল (টিআই) ১৮০টি দেশের দুর্নীতির ধারণা সূচক (সিপিআই)-২০২১ প্রকাশ করে মঙ্গলবার। এরই অংশ হিসেবে এদিন বাংলাদেশের দুর্নীতির ধারণা সূচক প্রকাশ করে টিআইর অঙ্গসংগঠন টিআইবি।
প্রতিবেদনের তথ্য দুদক আমলে নেবে জানিয়ে মঈনউদ্দিন আবদুল্লাহ বলেন, ‘আমরা এটা যাচাই করে দেখব। এতে আমাদের কাজের কোনো সুপারিশ থাকলে এবং তা বাস্তবসম্মত হলে ভবিষ্যতের উন্নতির জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নেব।’
কোন খাতে কেমন দুর্নীতি হয়- এ বিষয়ে কোনো গবেষণা আছে কি না জানতে চাইলে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমাদের একটি রিসার্চ উইং আছে। কোভিডের জন্য দুই বছর ধরে আমাদের প্রতিরোধ কার্যক্রম একটু স্তিমিত। দুর্নীতি বন্ধে ২২টি মন্ত্রণালয়ে আমরা সুপারিশ করেছি। সেগুলো মন্ত্রণালয় বাস্তবায়ন করছে কি না তা দেখার এক্সিকিউটিভ ক্ষমতা আমাদের নেই। সেটা তাদের বিষয়।’
দুর্নীতি বেড়েছে না কমেছে- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘দুর্নীতি বাড়ল না কমল বা দুর্নীতি কী জন্য এটা আমরা বলব না। আমাদের কাছে দুর্নীতির অভিযোগ এলে সেটা অনুসন্ধান করে বিচারের আওতায় আনা হলো আমাদের কাজ। মিডিয়ায় বিভিন্ন খবর উঠে আসছে। এগুলোর ওপর নির্ভর করে সাংবাদিকরা বলবেন দুর্নীতি বাড়ল না কমল। আর টিআইবি কী হিসাব করে দুর্নীতির সংখ্যা বের করছে, সেটা আমাদের জানা নেই।
‘কোভিডের কারণে গত দুই বছর দুদকে অভিযোগ কম এসেছে। তবে সেটা সরলীকরণ করা যাবে না। অভিযোগ কম আসছে বলেই কি আমি বলতে পারি যে, দুর্নীতি কম হয়েছে? টিআইবি কিসের ভিত্তিতে কী হিসাব করে দুর্নীতির সংখ্যা বের করছে, সেটা আমাদের জানা নেই।’
বিভিন্ন সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও দুদক কাজ করে যাচ্ছে উল্লেখ করে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমরা চাচ্ছি দুর্নীতি দমন হোক, দিন দিন অবস্থার উন্নতি হোক। আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু জনগণের প্রত্যাশা অনেক বেশি। দুর্নীতির ব্যাপারে নমনীয় বা জিরো টলারেন্স এটা দেখানোর সুযোগ দুদকের নেই। দুদকের একমাত্র কাজ দুর্নীতি দমন। পৃথিবীর সব দেশেই দুর্নীতি আছে, মাত্রা কম আর বেশি। প্রযুক্তির উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে দুর্নীতির ধারণাই পাল্টে যাচ্ছে। এ জন্য আমাদের প্রশিক্ষিত লোকবল দরকার।’