বরগুনার বেতাগীতে টেন্ডারের শিডিউল বিক্রির আগেই কাজ শুরু করেছেন ঠিকাদার।
অভিযোগ, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) কর্মকর্তাদের যোগসাজশে প্রায় অর্ধ কোটি টাকার ওই কাজটি পছন্দের ঠিকাদারের মাঝে বণ্টন করা হয়েছে।
ইতিমধ্যে ওই ঠিকাদার কাজও শুরু করেছেন। গত ১৫ দিন ধরে চলছে এ সব কাজ।
দরপত্রে অংশগ্রহণ ছাড়া এভাবে হঠাৎ করে কাজ শুরু করায় ক্ষুব্ধ স্থানীয় ঠিকাদাররা।
বিষয়টি স্বীকার করে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বলেন, টেন্ডার সম্পন্ন হবার পর ঠিকাদারকে কাজ বুঝিয়ে দেয়া হবে।
এলজিইডি বেগাতী উপজেলা প্রকৌশলী কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ৯ জানুয়ারি বিবিচিনি ইউনিয়নের বেগম লুৎফুন্নেছা মেমোরিয়াল ব্রিট স্কুলের সীমানা প্রাচীর ও স্কুলের ভেতরে আরসিসি রাস্তা নির্মাণের জন্য দরপত্র আহবান করে এলজিইডি বেতাগী উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয়। এর সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয় প্রায় ৪৮ লাখ টাকা।
ওই দুইটি প্যাকেজের শিডিউল বিক্রির শেষ সময় উল্লেখ করা হয় চলতি বছরের ২৬ জানুয়ারি বিকাল ৫টা। দরপত্র জমা দেয়ার শেষ সময় আগামী ২৭ জানুয়ারি দুপুর ১টা।
ই-টেন্ডার পদ্ধতি হওয়ায় সারাদেশ থেকেই অনলাইনে টেন্ডার শিডিউল ক্রয় ও জমা দেয়ার কথা। সেই হিসেবে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদাররাও প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।
কিন্ত দরপত্র বিক্রির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই জাকির হোসেন নামের একজন ঠিকাদার গত ১৯ জানুয়ারি ওই স্কুলের সীমানা প্রাচীর নির্মাণ কাজ শুরু করেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বেশ কয়েকজন ঠিকাদার অভিযোগ করেন, দরপত্র আহবান করার পর এতে অংশগ্রহণ ছাড়াই কাজ শুরু করা নজিরবিহীন। এলজিইডি কর্মকর্তাদের যোগসাজশে অনৈতিকভাবে কাজটি বন্টন করা হয়েছে।
নিয়মতান্ত্রিকভাবে দরপত্রে অংশণে প্রতিযোগীতার মাধ্যমে কাজটির ঠিকাদার নির্বাচিত হলে সরকারের অনেক টাকা সাশ্রয় হতো বলে মনে করেন তারা।
মঙ্গলবার বেগম লুৎফুন্নেছা মেমোরিয়াল ব্রিট স্কুলে গিয়ে দেখা গেছে, স্কুলের সীমানা প্রাচীর নির্মাণের কাজ চলছে। ইতিমধ্যে সীমানা প্রাচীর নির্মাণের জন্য স্কুলের চারপাশে কলাম ঢালাই এবং মাটি কাটার কাজ চলছে। সেখানে ৭/৮ জন শ্রমিক কাজ করছেন। শ্রমিকরা জানান, ঠিকাদার জাকির এই কাজ করছেন।
নিউজবাংলাকে প্রতিষ্ঠানটির (ব্রিট সেন্টার) ইনচার্জ মো. মাইনুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারিভাবে এই প্রতিষ্ঠানের সীমানা প্রাচীর নির্মাণের কাজ চলছে। এরপর রাস্তার কাজ শুরু হবে।’
গত ১৫ দিন আগে এই কাজ শুরু হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এই কাজের টেন্ডার এখনও সম্পন্ন হয়েছে কিনা সে বিষয়ে আমি কিছু জানি না।’
যোগাযোগ করা হলে ঠিকাদার মো. জাকির বলেন, ‘কর্তৃপক্ষ আমাকে কাজ করতে বলেছে, তাই আমি কাজ করছি। আমি নিজেও দরপত্র ক্রয় করেছি। পরবর্তীতে যে কাজ পাবে তার সাথে সমন্বয় করে নিব।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) বেতাগী উপজেলা প্রকৌশলী মো. রাইসুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ওইখানে এখন কে কাজ করে সেটা আমার দেখার বিষয় না।’
ব্যক্তিগতভাবে কেউ এই কাজ করতে পারে দাবি করে তিনি বলেন, ‘টেন্ডার সম্পন্ন হবার পর আমি ঠিকাদারকে কাজ বুঝিয়ে দিব।’
নিউজবাংলাকে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর বরগুনার নির্বাহী প্রকৌশলী এসকে আরিফুল ইসলাম বলেন ‘এই কাজটি আমার দপ্তরের না। আমি এই বিষয়ে কিছু জানি না।’