ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) বিশ্বের দুর্নীতির সূচকে বাংলাদেশকে ১৩তম আখ্যা দিয়ে যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে তা ভুলে ভরা, একপেশে ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
তিনি দাবি করেছেন, ‘এই প্রতিবেদন গতানুগতিক ছাড়া কিছুই নয়। কারণ টিআইবি ও বিএনপির বিবৃতির মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। টিআইবি আসলে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহৃত হয়।’
বুধবার সচিবালয়ে টিআইবি ও সমসাময়িক বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন। তথ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এই ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘টিআইবি একটি এনজিও। একে আমাদের দেশে অনেক গুরুত্ব দেয়া হয়। বিশ্বের অনেক দেশ টিআইবির প্রতিবেদনকে গুরুত্ব দেয় না। তবে আমরা মনে করি, এ ধরনের সংগঠন থাকা ভালো।’
টিআইবির প্রতিবেদন একপেশে বলে দাবি করেন তথ্যমন্ত্রী। বলেন, ‘কোনো সংগঠনের প্রতিবেদন যদি ভুল তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে হয়, ফরমায়েশি কিংবা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়, তখন সেই সংস্থাটির মর্যাদাই ক্ষুণ্ন হয়। সেটি একপেশে হয়। টিআইবির প্রতিবেদনটিও একপেশে।’
সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমি আপনাদের স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, কয়েক দিন আগে নির্বাচন কমিশন আইন নিয়ে টিআইবি বিবৃতি দিয়েছে। টিআইবি কাজ করে দুর্নীতি নিয়ে। অন্যদিকে নির্বাচন কমিশন আইন কিংবা নির্বাচন কমিশন গঠন পুরো বিষয়টি হচ্ছে রাজনৈতিক।
‘কিন্তু এ বিষয়ে টিআইবি বিবৃতি দিয়ে প্রমাণ করেছে, তারা রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহৃত হয়। টিআইবি ও বিএনপির বিবৃতির মধ্যে পার্থক্য নেই। অর্থাৎ তারা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে প্রতিবেদন প্রকাশ করে।’
টিআইবির একটি প্রতিবেদনের উদাহরণ দিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘টিআইবি বলেছে, কোনো দেশের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা কতটুকু আছে, সেটিও তারা বিবেচনায় নেয়। আমি প্রশ্ন রাখতে চাই, তাদের যে প্রতিবেদন সেখানে সিঙ্গাপুরকে দুর্নীতিমুক্ত দেশ হিসেবে বলেছে। এখানে যদি মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে দুর্নীতির একটি অনুষঙ্গ হিসেবে বিবেচনা করে থাকে, তাহলে দেখবেন সিঙ্গাপুরে হাতে গোনা কয়েকটি টেলিভিশন চ্যানেল ও হাতে গোনা কয়েকটি পত্রিকা চালু রয়েছে। সেখানে আমাদের দেশের মতো মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নেই।
‘আমি বলতে পারি, আমাদের দেশের মতো মতপ্রকাশের স্বাধীনতা কিংবা আমাদের দেশের মতো এত গণমাধ্যম সিঙ্গাপুরে নেই। পাকিস্তানের দুর্নীতির কথা সারা দুনিয়ার সবাই জানে। সেই পাকিস্তানেরও নিচে টিআইবি দুর্নীতিতে দেখিয়েছে বাংলাদেশকে।’
লবিস্ট নিয়োগের বিষয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে উদ্দেশ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ফখরুল সাহেবের কমিকস নিশ্চয়ই আপনারা দেখেছেন টেলিভিশনে। তিনি বললেন, বিএনপির ভালোর জন্যই লবিস্ট নিয়োগ করে। তারা যে এতদিন ধরে বলে আসছিল লবিস্ট নিয়োগ করেনি, সেটি সত্য নয়।’