বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

পুলিশে থিংক ট্যাংক তৈরির তাগিদ রাষ্ট্রপতির

  •    
  • ২৫ জানুয়ারি, ২০২২ ২০:২৫

পুলিশ সপ্তাহ উপলক্ষে এক ভাষণে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘গবেষণা ও উদ্ভাবনী ক্ষেত্রে অগ্রগতি না হলে বাংলাদেশ উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে সক্ষম হবে না। উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় গবেষণা, উদ্ভাবন এবং সর্বাধুনিক প্রযুক্তি আত্তীকরণের মাধ্যমে বাংলাদেশ পুলিশকে এগিয়ে যেতে হবে।’

বাংলাদেশ পুলিশের উদ্ভাবনী সক্ষমতা বাড়াতে বাহিনীতে থিংক ট্যাংক তৈরির তাগিদ দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। পুলিশ সপ্তাহ উপলক্ষে মঙ্গলবার দেয়া এক ভাষণে এই তাগিদ দেন রাষ্ট্রপ্রধান।

রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘গবেষণা ও উদ্ভাবনী ক্ষেত্রে অগ্রগতি না হলে বাংলাদেশ উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে সক্ষম হবে না। উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় গবেষণা, উদ্ভাবন এবং সর্বাধুনিক প্রযুক্তি আত্তীকরণের মাধ্যমে বাংলাদেশ পুলিশকে এগিয়ে যেতে হবে। নতুন নতুন গবেষণা ও উদ্ভাবনী ক্ষেত্রে বাংলাদেশ পুলিশকে সমৃদ্ধ হতে হবে।’

আব্দুল হামিদ বলেন, ‘আমি মনে করি, এ জন্য বাংলাদেশ পুলিশে একটি থিংক ট্যাংক থাকা অত্যন্ত প্রয়োজন। এই থিংক ট্যাংক বাংলাদেশ পুলিশের অপারেশনাল কার্যক্রম ও তদন্তে বৈজ্ঞানিক কৌশলের সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিতকরণের পাশাপাশি প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি তথা নিয়োগ, পদোন্নতি, পদায়ন, প্রশিক্ষণসহ সার্বিক কার্যক্রমে উৎকর্ষ সাধনে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।’

সেবাপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষ যেন কখনোই হয়রানির শিকার না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে পুলিশ সদস্যদের নির্দেশ দেন রাষ্ট্রপ্রধান। তিনি বলেন, ‘সাধারণ মানুষ বিপদে পড়েই আইনি সেবা পেতে পুলিশের কাছে আসে। আপনারা এসব বিপদাপন্ন মানুষের সমস্যা ও অভিযোগ মনোযোগ দিয়ে শুনবেন, তাদেরকে আন্তরিকতার সঙ্গে আইনি সেবা দিতে কখনো কুণ্ঠা বোধ করবেন না।

‘মনে রাখবেন, স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম পুলিশ সপ্তাহে ১৯৭৫ সালের ১৫ জানুয়ারি রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন- তোমরা জনগণের পুলিশ।

‘আপনারা প্রকৃত অর্থে জনগণের পুলিশ হওয়ার লক্ষ্যে বন্ধু হিসেবে জনগণের পাশে দাঁড়াবেন, মানবিক পুলিশ হবেন এবং জনগণকে সেবা প্রদান এবং তাদের আস্থা অর্জনের মধ্য দিয়ে দায়িত্ব পালন করবেন।’

‘জঙ্গি দমন বাংলাদেশ পুলিশের অন্যতম প্রধান সাফল্য হিসেবে বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হয়েছে। জঙ্গিবাদ প্রতিরোধে জনগণকে সম্পৃক্ত করতে হবে, জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জনসচেতনতা বাড়াতে হবে।’

মুক্তিযুদ্ধে পুলিশ বাহিনীর ভূমিকাও স্মরণ করেন রাষ্ট্রপতি। তিনি বলেন, ‘বর্তমান সরকার সরকারি সব সেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছাতে অঙ্গীকারবদ্ধ। জনগণকে দ্রুততম সময়ে পুলিশি সেবা প্রদান আপনাদের অন্যতম প্রধান দায়িত্ব। জনগণের সেবাপ্রাপ্তি সহজীকরণে আপনাদেরকে আরও তৎপর ও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে।

‘সেবাপ্রত্যাশী মানুষের সমস্যাকে গুরুত্ব দিয়ে তাদেরকে দ্রুত আইনি সেবা প্রদানে আন্তরিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে হবে। জনগণের সম্পৃক্ততা ছাড়া পুলিশের একার পক্ষে অপরাধ দমন সম্ভব নয়।’

কমিউনিটি পুলিশিং এবং বিট পুলিশিংয়ের মাধ্যমে জনগণের সঙ্গে আরও নিবিড় সম্পর্ক স্থাপন ও সম্পৃক্ততা বাড়াতেও পুলিশকে নির্দেশ দেন রাষ্ট্রপতি হামিদ। গুরুত্ব দেন পুলিশ সদস্যদের প্রশিক্ষণের ওপরও।

রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘বাংলাদেশ পুলিশে সব পদমর্যাদার সব সদস্যের জন্য নিয়মিত প্রশিক্ষণের পাশাপাশি বছরে কমপক্ষে একবার বাধ্যতামূলক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে, যা অত্যন্ত সময়োপযোগী। এ ধরনের প্রশিক্ষণের ফলে পুলিশ সদস্যদের পেশাগত উৎকর্ষ সাধিত হবে বলে আমার বিশ্বাস।

‘বাংলাদেশ পুলিশের প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানসমূহের সক্ষমতা বাড়িয়ে এগুলোকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার জন্য আমি আপনাদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিশ্বমানের পর্যায়ে এমনভাবে গড়ে তুলতে হবে যেন বিদেশি পুলিশ কর্মকর্তারাও বাংলাদেশে এসে প্রশিক্ষণ গ্রহণে আগ্রহী হন।’

সাইবার অপরাধ দমনে পুলিশকে সক্ষমতা বাড়ানোরও তাগিদ দেন রাষ্ট্রপতি। তিনি বলেন, ‘বিকাশমান প্রযুক্তির বর্তমান বিশ্বে অন্যান্য অপরাধের পাশাপাশি সাইবার অপরাধ অতি দ্রুত বাড়ছে। সাইবার অপরাধীরা দেশীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক এবং বিভিন্ন অ্যাপস ব্যবহার করে এ ধরনের অপরাধ করছে, যা দমন করা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তথ্য-প্রযুক্তির আধুনিক কলাকৌশলে সমৃদ্ধ, প্রশিক্ষিত ও দক্ষ জনবল তৈরি করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘জঙ্গি দমন বাংলাদেশ পুলিশের অন্যতম প্রধান সাফল্য হিসেবে বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হয়েছে। জঙ্গিবাদ প্রতিরোধে জনগণকে সম্পৃক্ত করতে হবে, জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জনসচেতনতা বাড়াতে হবে।

‘দেশের তরুণ সমাজের একটি অংশ মাদক সংক্রান্ত অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। পুলিশসহ সরকারি বিভিন্ন দফতরের কিছু অসাধু কর্মচারীও এ অপরাধে জড়িত থাকার বিষয়ে প্রায়ই গণমাধ্যমে রিপোর্ট প্রকাশিত হয়, যা খুবই অনভিপ্রেত ও দুঃখজনক। যুব সমাজকে মাদকের ভয়াবহ ছোবল থেকে রক্ষা করতে হবে। পুলিশকে এক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নিয়ে আরও বেশি সক্রিয় ও তৎপর হতে হবে। প্রয়োজনে শুদ্ধি অভিযানের মাধ্যমে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।’

পুলিশকে ত্রিমাত্রিক বাহিনী হিসেবে গড়ে তুলতে বাহিনীতে দুটি হেলিকপ্টার সংযোজনের পরিকল্পনার কথা জানান রাষ্ট্রপতি। তিনি বলেন, ‘এর ফলে পুলিশের অপারেশনাল কার্যক্রম বিশেষ করে দুর্গম এলাকায় সহজে ও দ্রুততম সময়ে অভিযান পরিচালনা সম্ভব হবে।

‘এ কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য দেশ-বিদেশে উন্নত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এভিয়েশন ব্যবস্থাপনায় প্রয়োজনীয় দক্ষ জনবল গড়ে তুলতে হবে।’

পুলিশের বিভিন্ন উদ্যোগের উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘তথ্য প্রযুক্তির প্রসারের সাথে সাথে জনগণের পুলিশি সেবা প্রাপ্তিও সহজ করা হয়েছে। জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯, অনলাইন পুলিশ ক্লিয়ারেন্স, অনলাইন জিডি, ই-ট্রাফিক প্রসিকিউশন ইত্যাদি সেবা জনগণ দ্রুত পাচ্ছে। ৯৯৯ সার্ভিসের উন্নয়নে এর কার্যক্রম নিয়মিত মনিটরিং করা ও উদ্ভাবনী চিন্তা-ভাবনার প্রয়োগ জরুরি।

‘সরকার বাংলাদেশ পুলিশকে একটি আধুনিক ও উন্নত দেশের উপযোগী বাহিনী হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করছে। ইতোমধ্যে সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে যুগোপযোগী পুলিশি সেবা প্রদানের লক্ষ্যে নতুন নতুন ইউনিট গঠন করা হয়েছে। আমি আশা করি, এর ফলে পুলিশের কার্যক্রম আরও গতিশীল হবে এবং জনগণ সহজে আরও উন্নত পুলিশি সেবা পাবে।’

এ বিভাগের আরো খবর