পণ্য খালাস বা কর দেয়ার ক্ষেত্রে হয়রানির সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম।
রাজধানীর সেগুনবাগিচায় এনবিআরের সম্মেলনকক্ষে আন্তর্জাতিক কাস্টম দিবসের আগের দিন মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
বন্দরগুলোতে পণ্য খালাস ও কর আদায় নিয়ে হয়রানির অভিযোগ প্রসঙ্গে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘ঢালাওভাবে অভিযোগ করা ঠিক নয়। অভিযোগের সত্যতা থাকতে হবে। আমাদেরকে লিখিতভাবে জানান। অভিযোগ প্রমাণিত হলে অবশ্যই যে কর্মকর্তা হয়রানি করেছে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
সম্প্রতি এফবিসিসিআইয়ের এক সভায় মাঠ পর্যায়ের ব্যবসায়ীরা কাস্টমস ও ভ্যাট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে হয়রানির অভিযোগ তোলেন। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে সরাসরি কোনো মন্তব্য করেননি এনবিআর চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, ‘আমাদের কাছে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ জানাতে হবে। জেনারেল কথা বলে কোনো লাভ নেই।’
ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ করে রহমাতুল মুনিম বলেন, ‘কবে কোথায় কখন কীভাবে হয়রানির শিকার হয়েছেন লিখিত অভিযোগ দেন। তারপর আমরা ব্যবস্থা নেব। সাংবাদিক কিংবা ব্যবসায়ী নেতাদের কাছে অভিযোগ করলে হবে না। অভিযোগ জানাতে হবে এনবিআরের কাছে।
‘যদি কোনো ব্যবস্থা না নেয়া হয়, তাহলে প্রশ্ন করতে পারেন। অযথা ভিত্তিহীন অভিযোগ করে কোনো লাভ নেই। এতে কোনো পক্ষ উপকৃত হবে না।’
কাস্টমসে অহেতুক কোনো পণ্য আটকানো হয় না বলে দাবি করেন এনবিআর চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, কোনো ব্যবসায়ীর মালামাল আটক করলে অবশ্যই কোনো কারণ থাকে।
স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের পর শুল্ক আদায়ে কোনো চ্যালেঞ্জ হবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘এটা ঠিক আমরা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারি। তবে এর জন্য আমাদের প্রস্তুতি আছে।’
চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবকে আহ্বায়ক করে জাতীয় কমিটি গঠন করা হয়েছে বলেও জানান এনবিআর চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, অনেকগুলো সাব কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারাও কাজ করছে।
রহমাতুল মুনিম বলেন, ‘কাজ করতে গিয়ে অনেক চ্যালেঞ্জ আসবে। তা মোকাবিলা করাই হবে আমাদের লক্ষ্য। আয়কর ও ভ্যাট আদায় বাড়ছে। এর মাধ্যমে কাস্টমসের ক্ষতি পুষিয়ে নেয়া যাবে।’
সংবাদ সম্মেলনে এনবিআরের সদস্য (শুল্কনীতি) মাসুদ সাদিক জানান, চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে প্রতিদিন পণ্য খালাসের জন্য প্রায় সাড়ে ৭ হাজার বিল অফ এন্ট্রি দাখিল করা হয়। এর মধ্যে আমদানিকৃত বিল অফ এন্ট্রির সংখ্যা আড়াই হাজার।
তিনি বলেন, ‘এত বিপুলসংখ্যক পণ্য খালাসে কিছু অভিযোগ তো থাকতেই পারে। তবে আমরা চেষ্টা করছি যেখানে অভিযোগ পাওয়া গেলে তার সমাধান করতে। পণ্য খালাসের সময় অনেক রকম প্রত্যয়ন পত্র দাখিল করতে হয়। কেউ সংক্ষুব্ধ হলে অভিযোগ করতে পারেন। এতে দুপক্ষের শুনানির সুযোগ রয়েছে।’
সংবাদ সম্মেলন জানানো হয়, এবারের কাস্টম দিবসের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে, ‘তথ্য সংস্কৃতির বিকাশ এবং তথ্য ইকোসিস্টেম বিনির্মাণের মাধ্যমে ডিজিটাল কাস্টমসের সম্প্রসারণ’।
দিবসটি পালন উপলক্ষে একটি সেমিনারের আয়োজন করবে এনবিআর। কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।