কক্সবাজারের রামু উপজেলার দুর্গম পাহাড়ি জনপদ ব্যাংডেবা।
গত ১৬ জানুয়ারি ওই গ্রামের প্রধান (হেডম্যান) আলী আহমেদকে কে বা কারা হত্যা করে পালিয়ে যায়। পরে এ ঘটনায় রামু থানায় পাঁচজনকে আসামি করে মামলা করেন নিহতের ভাই মঞ্জুর আলম।
সবশেষ র্যাবের তদন্তে বেরিয়ে এসেছে, মূলত গরু চুরি ও বনের গাছ কাটতে বাধা দেয়ায় ১০ থেকে ১২ জনের একটি চক্র পরিকল্পিতভাবে আলী আহমেদকে হত্যা করেছে।
সোমবার রাতে বান্দরবানের আলীকদম থেকে আলী হত্যা মামলার প্রধান আসামিসহ দুইজনকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তারা হলেন, ২০ বছরের সাজ্জাদ হোসেন ও ২১ বছরের সানাউল্লাহ। তাদের মধ্যে সাজ্জাদ হোসেন হত্যাকাণ্ডটির পরিকল্পনাকারী ও প্রধান আসামি।
র্যাবের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সাজ্জাদ বলেন, ‘আমার বাবা সৌদি প্রবাসী নুরুল আজিম বন বিভাগের কিছু জমিতে চাষ করতেন। এ বছর সেই জমিতে চাষে গিয়ে একটি গাছ কাটতে চাইলে বাধা দেন হেডম্যান।’
সাজ্জাদ জানান, মামলাটির দুই নম্বর আসামি সফর আলমকে গরু চুরির দায়ে এলাকা ছাড়া করেছিলেন হেডম্যান আলী। কিছুদিন আগে সেই সফর এলাকায় ফিরে এলে তার সঙ্গে বসে আলীকে আহমেদকে হত্যার পরিকল্পনা করেন সাজ্জাদ।
হত্যাকাণ্ডের বিবরণ দিতে গিয়ে সাজ্জাদ বলেন, ‘সেদিন রাতে আমরা প্রথমে বিট অফিসে তালা দেই। পরে পাঁচ বন প্রহরীকে বেঁধে রাখি একটি কক্ষে। অস্ত্রাগারে তালা থাকলেও আমরা আরও একটি তালা দেই। তারপর আলী আহমেদের বাড়িতে গিয়ে ৩০ মিনিটের মধ্যে তাকে কুপিয়ে হত্যা করে ফাঁকা গুলি ছুড়ে পালিয়ে যাই।’
ঘটনাটি যেন ডাকাতির মতো মনে হয়, সে জন্য আলী আহমেদের স্ত্রীর স্বর্ণালংকার, মোবাইল ও কিছু টাকাও ছিনিয়ে নেন সাজ্জাদ, সফর ও তাদের সঙ্গীরা।
মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া দুই আসামি
এ বিষয়ে র্যাব-১৫-এর সহকারী পরিচালক এএসপি নিত্যানন্দ দাশ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘হত্যাকাণ্ডটি বেশ আলোচিত। ঘটনার গভীরে যেতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও ছায়াতদন্ত শুরু হয়। পরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারি, বান্দরবানের আলীকদমের একটি বাসায় আত্মগোপন করেছে মূল আসামিসহ দুজন। পরে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করি।’
র্যাব-১৫-এর উপ-অধিনায়ক তানভীর হাসান বলেন, ‘গ্রেপ্তার সাজ্জাদ এই মামলার প্রধান আসামি ও অপরজন ৫ নং আসামি সানাউল্লাহ। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।