চলমান কোভিড পরিস্থিতি ও স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণ বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ওয়ার্ল্ড ব্যাংক গ্রুপ ও ওয়ার্ল্ড ট্রেড অর্গানাইজেশনের (ডব্লিউটিও) সহযোগিতা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
বাণিজ্যমন্ত্রী সোমবার রাতে ভার্চুয়ালি ওয়ার্ল্ড ব্যাংক গ্রুপ ও ডব্লিউটিও আয়োজিত জয়েন্ট পলিসি নোট তৈরির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।
ওয়ার্ল্ড ব্যাংক গ্রুপ ও ডব্লিউটিওর কাছে প্রত্যাশার কথা জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘এলডিসি থেকে উত্তরণের পরও বাংলাদেশের জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাণিজ্য সুবিধা অব্যাহত রাখা, ফার্মাসিটিক্যাল পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে এলডিসিভুক্ত দেশের বাণিজ্য সুবিধা অব্যাহত রাখা প্রয়োজন। সেইসঙ্গে নামমাত্র সুদে বিশ্ব ব্যাংকের ঋণ সহায়তা ও উন্নত দেশের বাণিজ্য ও টেকনিক্যাল সহযোগিতাও প্রয়োজন।’
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ গত ২৪ নভেম্বর বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হবার সুপারিশ অনুমোদন করেছে। ২০২৬ সালের পর বাংলাদেশকে ব্যবসা-বাণিজ্যসহ অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। করোনা মহামারির কারণে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশকেও কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হচ্ছে। সরকার প্রণোদনা প্যাকেজের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিকে সচল রাখতে ব্যবসায়ীদের সহায়তা করে যাচ্ছে।’
বাংলাদেশের সামনে ব্যবসা-বাণিজ্য ও কর্মসংস্থানের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছের বলে জানান বাণিজ্যমন্ত্রী। বলেন, ‘গত এক দশকে বাংলাদেশের অভাবনীয় উন্নতি হয়েছে। ২০০৯ থেকে ২০২১ সালে বাংলাদেশের গড় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ছিল ৬.৩ শতাংশ। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আগামী ২০২১-২০২২ অর্থবছরে তা ৭.২ শতাংশে উন্নীত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। বাংলাদেশের মানুষের বর্তমান মাথাপিছু আয় ২,৫৫৪ মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে, দেশের অর্থনীতির আকার এখন প্রায় ৪০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।’
‘বাংলাদেশ রপ্তানি বাণিজ্যে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ উন্নত বিশ্বের বাণিজ্য ক্ষেত্রে সহায়তা বাংলাদেশকে উৎসাহিত করেছে।’
পরিস্থিতি মোকাবিলায় এ সহযোগিতা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান তিনি।
টিপু মুনশি বলেন, ‘বিশ্ববাজারের চাহিদার ৬.৫ শতাংশ তৈরি পোশাক রপ্তানি করে বাংলাদেশ এখন দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে, প্রথম অবস্থানে রয়েছে চীন। দেশে প্রায় সাড়ে চার হাজার উন্নত ফ্যাক্টরিতে শ্রমিকবান্ধব ও নিরাপদ পরিবেশে ৪০ লাখ মানুষ কাজ করছে, এর ৬০ শতাংশই নারী। বাংলাদেশের রপ্তানির প্রায় ৮১ ভাগ আসে তৈরি পোশাক খাত থেকে।
‘বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্য বৃদ্ধির বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। এর মধ্যে মেডিকেল পণ্য, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, প্রক্রিয়াজাত কৃষি পণ্য, প্লাস্টিক, হোম টেক্সটাইল ও তথ্য প্রযুক্তি অন্যতম। বাংলাদেশ সরকার এসব খাতের রপ্তানি বৃদ্ধি করতে উদ্যোগ নিয়েছে। এসব সেক্টর প্রসার লাভ করলে দেশের রপ্তানি বাড়বে, কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।’