বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘করোনা ঝুঁকিতে’ শাবি থেকে ছাত্রলীগের মেডিক্যাল টিম প্রত্যাহার

  •    
  • ২৫ জানুয়ারি, ২০২২ ১৫:২৬

মেডিক্যাল টিমের সমন্বয়ক ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হাসান বলেন, ‘অনশনকারীদের অনেকেরই করোনার উপসর্গ আছে, কিন্তু তারা টেস্ট করাতে রাজি হচ্ছেন না। সেভাবে স্বাস্থ্যবিধিও মানছেন না। এতে আমরা ঝুঁকিতে পড়ছি। আমাদের অনেককেই আবার হাসপাতালে ফিরতে হয়। ফলে অন্যরাও ঝুঁকিতে পড়ছেন।’

করোনা ঝুঁকির কথা জানিয়ে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি) থেকে মেডিক্যাল টিম প্রত্যাহার করেছে ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ছাত্রলীগ।

ইন্টার্ন চিকিৎসকদের দলটি সোমবার গভীর রাত থেকে নিজেদের কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়।

গত বৃহস্পতিবার থেকে তারা শাবির অনশনরত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসাসেবা দিচ্ছিলেন।

মেডিক্যাল টিমের সমন্বয়ক ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হাসান নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

নাজমুল বলেন, ‘অনশনকারীদের অনেকেরই করোনার উপসর্গ আছে, কিন্তু তারা টেস্ট করাতে রাজি হচ্ছেন না। সেভাবে স্বাস্থ্যবিধিও মানছেন না। এতে আমরা ঝুঁকিতে পড়ছি। আমাদের অনেককেই আবার হাসপাতালে ফিরতে হয়। ফলে অন্যরাও ঝুঁকিতে পড়ছেন।

‘গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় আমরা যেসব অনশনকারীকে হাসপাতালে পাঠাই, তারা হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র না নিয়েই আবার ক্যাম্পাসে চলে যান। ফলে তাদের জীবন যেমন সংকটে পড়ছে, তেমনি আমরাও সমস্যায় পড়ছি।’

নাজমুল আরও বলেন, ‘শাবির শিক্ষার্থীদের সেবা দিতে গিয়ে আমাদের মেডিক্যাল টিমের একজনের এরই মধ্যে করোনা হয়েছে। আরও কয়েকজনের উপসর্গ দেখা দিয়েছে। তারা করোনা পরীক্ষার নমুনা দিয়েছেন। আপাতত আমরা শাবিতে কার্যক্রম বন্ধ রাখছি।’

ছাত্রলীগের মেডিক্যাল টিম প্রত্যাহার করায় বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা আর কারো কাছ থেকে কোনো চিকিৎসা সহায়তা পাচ্ছেন না।

গত ২১ জানুয়ারি শিক্ষার্থীদের কাছে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল টিম গেলে তারা তাদের প্রত্যাখ্যান করেন।

মঙ্গলবার প্রক্টর আলমগীর কবির নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা বারবার শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যালের টিমের পক্ষ থেকে চিকিৎসাসেবা দিতে চেয়েছি। তবে তারা সেটা প্রত্যাখ্যান করেছেন। এখন শিক্ষার্থীদের যে শারীরিক অবস্থা তাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের টিম দিয়ে চিকিৎসা দেয়া সম্ভব নয়। আমরা তাদের অনশন ভেঙে হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নেয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি।’

তবে শিক্ষার্থীরা জানান, উপাচার্য পদত্যাগ না করা পর্যন্ত তারা অনশন ভাঙবেন না।

প্রেক্ষাপট

শাবি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের শুরু ১৩ জানুয়ারি। রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রাধ্যক্ষ জাফরিন আহমেদ লিজার বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ তুলে তার পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন হলের কয়েক শ ছাত্রী।

১৬ জানুয়ারি বিকেলে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি ভবনে উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করেন। তখন শিক্ষার্থীদের লাঠিপেটা করে উপাচার্যকে মুক্ত করে পুলিশ।

এরপর পুলিশ ৩০০ জনকে আসামি করে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মামলা করে। সেদিন রাতে বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দেয় কর্তৃপক্ষ। শিক্ষার্থীরা তা উপেক্ষা করে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে তার পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলন নামেন।

বাসভবনের সামনে অবস্থানের কারণে গত ১৭ জানুয়ারি থেকেই অবরুদ্ধ অবস্থায় আছেন উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমদ।

১৯ জানুয়ারি দুপুর ৩টা থেকে উপাচার্যের পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আমরণ অনশনে বসেন ২৪ শিক্ষার্থী।

তাদের মধ্যে একজনের বাবা হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ায় তিনি অনশন শুরুর পরদিনই বাড়ি চলে যান। ২৩ জানুয়ারি আরও চারজন ও ২৪ জানুয়ারি একজন শিক্ষার্থী অনশনে যোগ দেন।

এর মাঝে উপাচার্য ইস্যুতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ২২ জানুয়ারি গভীর রাতে ভার্চুয়ালি বৈঠক করেন শিক্ষামন্ত্রী। বৈঠকে উপাচার্যের পদত্যাগের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত না এলেও দাবিগুলো লিখিতভাবে জমা দেয়ার পরামর্শ দেন তিনি।

তবে বৈঠকের পর শিক্ষার্থীরা জানান, তাদের মূল দাবি উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমদের পদত্যাগ। এই দাবি না মানা পর্যন্ত তারা আন্দোলন থেকে সরবেন না।

২৩ জানুয়ারি দুপুরের পর শিক্ষার্থীদের আবার শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। তবে তা না হওয়ায় তারা উপাচার্যকে অবরুদ্ধের ঘোষণা দেন।

ওই দিন রাত ৮টার দিকে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের বাসভবনের পানি ও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। ২৮ ঘণ্টা পর সোমবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে বিদ্যুৎ সংযোগ চালু করেন তারা।

এ বিভাগের আরো খবর