‘শিক্ষা আইন’ চূড়ান্ত করার কাজ প্রায় শেষ। এ-সংক্রান্ত কমিটি আইনটি পর্যালোচনা করেছে। শিগগিরই এই আইনের খসড়া সংসদে উঠবে।
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি সোমবার এক আলোচনা সভায় এ কথা বলেন।
রাজধানীর বাংলাদেশ শিক্ষা তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরো (ব্যানবেইস) ভবনে ‘পরিবর্তনশীল গতিপথ, রূপান্তরিত শিক্ষা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে দীপু মনি বলেন, ‘দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর ২০১০ সালে আমরা একটি জাতীয় শিক্ষানীতি পেয়েছিলাম। তা প্রস্তুত করা হয়েছিল সংবিধানের চার মূলনীতি ও ১৯৭৪ সালের কুদরাত-ই-খুদা শিক্ষা কমিশনের ওপর ভিত্তি করে।
‘শিক্ষার কাঠামো ঠিক রাখা, সমসাময়িক অসংগতি-অনিয়ম দূর করার জন্য আমাদের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা শিক্ষা আইন। এই আইন চূড়ান্ত করার কাজ শেষের দিকে। এ-সংক্রান্ত কমিটি আইনটির খসড়া পর্যালোচনা করেছে।’
মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর কিছু পরিবর্তন-পরিমার্জন শেষে আইনটি সংসদে পাঠানো হবে বলে জানান মন্ত্রী।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘শিক্ষাব্যবস্থায় আমরা আমূল পরিবর্তন আনার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। এর জন্য আমরা নতুন যে কারিকুলাম তৈরি করেছি, তা ফেব্রুয়ারি মাসের গোড়া থেকে বাস্তবায়নে যাওয়ার কথা। তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যেহেতু বন্ধ আছে, আমরা ভাবছি অনলাইনে হলেও এটা শুরু করব। সরাসরি পাঠদান শুরু হলে তখন শ্রেণিকক্ষেই সেটি বাস্তবায়ন হবে।’
দীপু মনি বলেন, ‘আমাদের শিক্ষাকে রূপান্তরিত করতে হবে। কারণ বিশ্ব প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হচ্ছে। জাতীয় উন্নয়নে দক্ষ ও যোগ্য মানবসম্পদ প্রয়োজন। তাই প্রাথমিক থেকে উচ্চ শিক্ষা পর্যন্ত শিক্ষার প্রতিটি পর্যায় নিয়ে আমরা কাজ করছি।’
মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা প্রতিবন্ধীদের জন্য কারিগরিনির্ভর শিক্ষাকাঠামো তৈরি করছি। আমরা চেষ্টা করছি যেন মানসম্মত শিক্ষাব্যবস্থা থেকে কেউ বাদ না যায়। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী থেকে শুরু করে দুর্গম অঞ্চলের বাসিন্দাদেরও শিক্ষার আওতায় নিয়ে আসার লক্ষ্যে কাজ করছি। সবাই মিলে চেষ্টা করলে নিশ্চয় তা বাস্তবায়ন সম্ভব।’
শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, ‘করোনায় আমরা কঠিন সময় পার করছি। সর্বতোভাবে আমরা এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কাজ করছি। সমন্বিত চেষ্টায় এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আমরা সক্ষম হব বলে বিশ্বাস করি।’
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব ও বিএনসিইউর মহাসচিব আবু বকর ছিদ্দীকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব গোলাম মো. হাসিবুল আলম, বাংলাদেশে ইউনেস্কোর প্রতিনিধি মিজ বিয়াট্রিস কালদুন এবং বিএনসিইউর ডেপুটি সেক্রেটারি সোহেল ইমাম খান বক্তব্য দেন।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সাংবাদিক ও শিক্ষাবিদ আবুল মোমেন।