বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বিদ্যুৎ-পানি বন্ধ করাকে আন্দোলন বলে না: তথ্যমন্ত্রী

  •    
  • ২৪ জানুয়ারি, ২০২২ ১৫:১১

তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমরাও ছাত্র থাকা অবস্থায় ভিসিবিরোধী আন্দোলন করেছি। কিন্তু কখনো বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করিনি। এটাকে আন্দোলন বলা যায় না। জেলের কয়েদিরাও পানি পান, খাবার পান।’

সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবি) উপাচার্য বাসভবনের পানি ও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে শিক্ষার্থীরা যে আন্দোলন করছেন তার সমালোচনা করেছেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।

সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে সোমবার এ প্রসঙ্গে কথা বলেন তিনি। তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আমাদের সন্তান ও সন্তানের মত। তাদের দাবি-দাওয়ার প্রতি সরকার সহানুভুতিশীল। আমরাও বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকাকালীন নানা দাবি-দাওয়া নিয়ে আন্দোলন করেছি।

‘ভিসির পদত্যাগের জন্য আমি নিজেও ছাত্র রাজনীতি করার সময় আন্দোলন করেছি। ভিসির বাসভবনের সামনে অবস্থান ধর্মঘট আমরাও করেছি, আমি নিজেও করেছি। কিন্তু আমরা কখনো বাড়ির বিদ্যুতের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করিনি।’

তিনি বলেন, ‘আজকে শুনতে পেলাম ভিসির বাংলোতে পানি প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না, ভিসির জন্য খাবার পাঠানো হয়েছিল, সেই খাবারও ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। দেখুন জেলখানার কয়েদিরাও খাবার পান, পানি পান। তাকে তো সেগুলো থেকে বঞ্চিত করা যায় না।

‘যখন আন্দোলনের কথা বলে এগুলো করা হয়, সেগুলোকে তো আন্দোলন বলা যায় না। আমি ছাত্রছাত্রীদের অনুরোধ জানাব, এই যে খাবার বন্ধ করে দেয়া, ভিসির বাংলোয় কিংবা ক্যাম্পাসে বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে দেওয়া বা কেটে দেওয়ার জন্য চেষ্টা করা এগুলোতো আন্দোলন হতে পারে না, এগুলো আন্দোলনের অংশ হতে পারে না। এগুলো তো প্রতিহিংসামূলক।’

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হচ্ছে কিনা তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমি ছাত্রছাত্রীদের অনুরোধ জানাব, রাজনৈতিক ক্রীড়ানক হিসেবে তাদের যেন কেউ ব্যবহার না করে। সরকারের কাছে খবর আছে, রাজনৈতিক উদ্দেশে ছাত্রছাত্রীদের ব্যবহার করার চেষ্টা হচ্ছে।

‘অনেকে না বুঝেই ব্যবহৃত হচ্ছে। যেহেতু বিষয়টি শিক্ষা মন্ত্রণালয় দেখছে, আশা করব খুব সহসা এটির একটি যৌক্তিক সমাধান হবে।’

এর আগে রোববার রাতে আন্দোলনের একপর্যায়ে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বাসভবনের পানি ও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন শিক্ষার্থীরা। এতে ভোগান্তিতে পড়তে হয় উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদকে।

অবশ্য বিদ্যুতের বিকল্প ব্যবস্থায় রাত পার করেছেন উপাচার্য। জেনারেটরের মাধ্যমে বিদ্যুতের ও পানিরও ব্যবস্থা করা হয়। সোমবার দুপুর পর্যন্ত উপাচার্য ভবনে কারো যাতায়াত লক্ষ করা যায়নি। বিদ্যুৎ-পানির সমস্যার কথা জানিয়ে উপাচার্যের পক্ষ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়াও আসেনি।

শাবি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের শুরু ১৩ জানুয়ারি। রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রাধ্যক্ষ জাফরিন আহমেদ লিজার বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ তুলে তার পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন হলের কয়েক শ ছাত্রী।

১৬ জানুয়ারি বিকেলে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি ভবনে উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করেন। তখন শিক্ষার্থীদের লাঠিপেটা করে উপাচার্যকে মুক্ত করে পুলিশ।

এরপর পুলিশ ৩০০ জনকে আসামি করে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মামলা করে। সেদিন রাতে বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দেয় কর্তৃপক্ষ। শিক্ষার্থীরা তা উপেক্ষা করে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে তার পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলনে নামেন।

বাসভবনের সামনে অবস্থানের কারণে গত ১৭ জানুয়ারি থেকেই অবরুদ্ধ অবস্থায় আছেন উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদ। ১৯ জানুয়ারি দুপুর আড়াইটা থেকে উপাচার্যের পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আমরণ অনশনে বসেন ২৪ শিক্ষার্থী।

তাদের মধ্যে একজনের বাবা হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ায় তিনি অনশন শুরুর পরদিনই বাড়ি চলে যান। বাকি ২৩ অনশনকারীর মধ্যে ১৬ জন অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন। ২৩ জানুয়ারি আরও চারজন শিক্ষার্থী অনশনে যোগ দেন।

এর মাঝে উপাচার্য ইস্যুতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ২২ জানুয়ারি গভীর রাতে ভার্চুয়ালি বৈঠক করেন শিক্ষামন্ত্রী। বৈঠকে উপাচার্যের পদত্যাগের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত না এলেও দাবিগুলো লিখিতভাবে জমা দেয়ার পরামর্শ দেন তিনি।

তবে বৈঠকের পর শিক্ষার্থীরা জানান, তাদের মূল দাবি উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগ। এই দাবি না মানা পর্যন্ত তারা আন্দোলন থেকে সরবেন না।

২৩ জানুয়ারি দুপুরের পর শিক্ষার্থীদের আবার শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। তবে তা না হওয়ায় তারা উপাচার্যকে অবরুদ্ধের ঘোষণা দেন।

এ বিভাগের আরো খবর