বাসে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধে সরকার নির্ধারিত ভাড়া আদায়ে প্রতি বাস স্টপেজে ভাড়ার তালিকা টাঙানোর নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। এটা বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষকে দেয়া নির্দেশে হাইকোর্ট বলেছে, আগামী ৩০ দিনের মধ্যে বাস থামার প্রতিটি জায়গায় প্রকাশ্যে ও যাত্রীদের কাছে সহজে দৃশ্যমান স্থানে ভাড়ার তালিকা টাঙানো এবং ইলেকট্রনিক বিলবোর্ডের মাধ্যমে প্রদর্শন করতে হবে।
বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খন্দকার দিলিরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ সোমবার এ আদেশ দেয়।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন মো. আবু তালেব, তার সঙ্গে ছিলেন মোখলেসুর রহমান ও ব্যারিস্টার মুসতাসীম তানজীর। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।
আবু তালেব নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আদালত এ নির্দেশনার পাশাপাশি রুল জারি করেছেন।’
রুলে সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ এর ১২২ ধারা অনুযায়ী, বাস, মিনিবাস তথা গণপরিবহনে ভাড়া বৃদ্ধি সংক্রান্ত বিধিমালা প্রনয়ণ না করার ব্যর্থতা, ভাড়ার তালিকা প্রকাশ্য স্থানে প্রদর্শন এবং যাত্রীদের কাছ থেকে বাস মালিক, কনডাক্টরদের বেশি ভাড়া আদায় বন্ধ করার ব্যর্থতা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চাওয়া হয়েছে।
গত বছরের ৩ নভেম্বর মধ্যরাত থেকে সরকার জ্বালানি তেল ডিজেলের দাম লিটারে ১৫ টাকা করে বাড়িয়ে দেয়। তেলের দাম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাস ভাড়া বাড়ানোর জন্য আন্দোলন শুরু করে বাস মালিকরা।
তিন দিন সারা দেশে বাস বন্ধ রাখে মালিক সমিতি। পরে ৭ নভেম্বর বাস ভাড়া বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন দেয় সরকার। শুধু ডিজেলচালিত বাসের ভাড়া বাড়ানোর কথা বলা হলেও সে সময় গ্যাসে চলা বাসের ভাড়াও বাড়িয়ে আদায় শুরু করে চালক-সহকারীরা।
রাজধানীতে ওয়ে বিল নামে এক ধরনের ভাড়ার প্রচলন আগে থেকেই ছিল। সেটি বন্ধ করার শর্তে ভাড়া বাড়ানো হলেও কয়েকদিন পর আবারও ওয়ে বিল ব্যবস্থায় ভাড়া আদায় শুরু করে বাস চালক ও কন্ডাক্টররা। এতে অনেক যাত্রীকে আগের চেয়ে দ্বিগুণ ভাড়াও গুনতে হচ্ছে।
বাসে ভাড়ার তালিকা রাখার কথা বলা হলেও কোনো বাসেই ভাড়ার কোনো তালিকা থাকে না। এমনকি থাকলেও সে অনুযায়ী নেয়া হয় না ভাড়া।
গণপরিবহনে প্রচলিত ওয়ে বিল বাতিল চেয়ে গত ৪ জানুয়ারি হাইকোর্টে রিট করেন আইনজীবী আবু তালেব।
গত ২ ডিসেম্বর সাত দফা দাবি জানিয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের (সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ) সচিব, বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) এর চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন অধিদপ্তর (বিআইডব্লিউটিএ) এর চেয়ারম্যানকে আইনি নোটিশ দিয়েছিলেন তিনি।