বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সড়কে ‘গোঁজামিল সংস্কারে’ ভোগান্তি চরমে

  •    
  • ২৪ জানুয়ারি, ২০২২ ১৩:৩২

সড়কের পাশে ইউনিক এলাকার চা দোকানি জসিম উদ্দিন বলেন, ‘গত ৫ থেকে ৭ বছর ধরে দেখছি রাস্তা বেহাল। মাঝেমধ্যেই সড়কে রিকশা, ভ্যান, মোটরসাইকেল, অটোরিকশা, বাস, মালবোঝাই ট্রাক, লরিসহ বিভিন্ন ধরনের যান এসব গর্তে আটকা পড়ে। যান উল্টে চোখের সামনে দুর্ঘটনাও ঘটতে দেখেছি অনেক।’

ঢাকার সাভারের একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক টঙ্গী-আশুলিয়া-ইপিজেড সড়ক। প্রতিদিন প্রায় লাখখানেক ভারী যান চলাচল করে এ সড়ক দিয়ে।

কিন্তু সড়কের প্রায় চার কিলোমিটার এলাকাজুড়ে খানাখন্দ থাকায় দীর্ধদিন ধরে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন যানচালক ও যাত্রীরা।

রাজধানী থেকে দেশের উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলে যাওয়ার এ সড়কে শিল্পকারখানার কাঁচামাল পরিবাহী ভারী যান, বাস, ট্রাক ও প্রাইভেট কারসহ বিভিন্ন পরিবহন চলাচলে দীর্ঘ যানজটের চিত্র নিত্যদিনের।

তবে ভাঙা ও খানাখন্দে ভরা সড়কটি কোনো রকম সংস্কার করা হলেও তা আসলে কাজেই আসছে না বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। আর সড়কে যানজটের জন্য ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কর্তৃপক্ষকেই দুষছেন তারা।

সরেজমিনে মহাসড়কের জিরাবো, নরসিংহপুর, জামগড়া ও ইউনিক এলাকায় চোখে পড়ে বিভিন্ন স্থানে খানখন্দের চিত্র। এ ছাড়া ড্রেনেজব্যবস্থা না থাকায় শুকনা মৌসুমেও বিভিন্ন কারখানা ও বাসাবাড়ির ব্যবহৃত পানি গড়িয়ে পড়তে দেখা গেছে সড়কটিতে। এ অবস্থায় বিপাকে পড়েছেন যানের চালক, যাত্রী ও পথচারীরা।

এ সময় স্থানীয় ও পথচারীরা জানান, ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজের পাশাপাশি সড়কটিতে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে কাজ করছেন এক্সপ্রেসওয়ে কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে বর্ষাকালে সড়কটির বিভিন্ন স্থানে পানি জমে গর্ত হয়েছে। সেই গর্তগুলো নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ও রাবিশ (ইটের অংশবিশেষ) দিয়ে কোনো রকম সংস্কার করা হলেও তা মূলত কাজে আসেনি।

মহাসড়কে যানবাহনের চাপে প্রতিনিয়ত উঠে যাচ্ছে ইট, কখনও ভেঙে গুঁড়াও হয়ে যাচ্ছে। খানাখন্দে একদিকে যানবাহনের ক্ষতি হচ্ছে, অন্যদিকে বিভিন্ন সময় ঘটছে দুর্ঘটনাও। এ ছাড়া ধুলো-ময়লায় মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকির মুখে পড়ছেন সাধারণ মানুষ।

সড়কে নিম্নমানের রাবিশ ফেলে দায়সাড়াভাবে চলছে সংস্কারের কাজ। ছবি: নিউজবাংলা

মোটরসাইকেলে করে এ মহাসড়ক দিয়েই জিরাবো এলাকায় কাজে যান পোশাক কারখানার কর্মকর্তা মাহবুবুল আলম রিপন।

তিনি নিউজবাংলাকে জানান, বর্ষা মৌসুমে সড়কে সব সময় হাঁটুপানি জমে থাকে। শুকনা মৌসুমে একটু ভালো থাকার কথা থাকলেও এখনও বাজে অবস্থা। সড়কে এক থেকে তিন ফুট পরপর রয়েছে ছোট-বড় অসংখ্য গর্ত।

এ সব গর্তে কোনো রকমে ইটের টুকরা দিয়ে মেরামত করা হলেও মোটরসাইকেল চালিয়ে যাওয়া কঠিন। এর মধ্যে অসংখ্য ভারী যান চলাচলে নিম্নমানের ইটের টুকরা ভেঙে প্রচুর ধুলাবালিরও সৃষ্টি হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ একটি সড়ক বেহাল বছরের পর বছর।

সড়কের পাশে ইউনিক এলাকার চা দোকানি জসিম উদ্দিন বলেন, ‘গত ৫ থেকে ৭ বছর ধরেই দেখছি রাস্তার এ বেহাল অবস্থা। মাঝেমধ্যেই সড়কে রিকশা, ভ্যান, মোটরসাইকেল, অটোরিকশা, বাস, মালবোঝাই ট্রাক, পিকআপ, লরিসহ বিভিন্ন যান এসব গর্তে আটকা পড়ে যায়। যান উল্টে চোখের সামনে দুর্ঘটনাও ঘটতে দেখেছি অনেক।’

এ বিষয়ে ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের প্রজেক্ট ম্যানেজার মো. সাহাবুদ্দিন জানান, ঢাকার দ্বিতীয় এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে হিসেবে ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ২০২৬ সালের জুনে চালু হবে।

এই ২৪ কিলোমিটার এক্সপ্রেসওয়ে হযরত শাহজাহাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরকে আবদুল্লাহপুর, আশুলিয়া, বাইপাইল ও নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের ঢাকা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলের (ডিইপিজেড) সঙ্গে সংযুক্ত করবে। এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের পাশাপাশি সড়কটি চার লেনে উন্নীতকরণের কাজও চলবে।

তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘দুই মাস আগে সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) কাছ থেকে নেয়া সময়ই সড়কটি আমরা দুরবস্থায় পেয়েছি। কিছুদিনের জন্য এটি মোটামুটি ঠিকঠাক রাখা হবে, কারণ এক্সপ্রেসওয়ের পিলার বসাতে হবে রাস্তার মাঝ দিয়ে।

‘তবে পিলারগুলো বসানোর আগে রাস্তার দুই পাশ ঠিক করা হবে, যাতে যান চলাচলে কোনো সমস্যা না হয়।’

নিম্নমানের রাবিশ দিয়ে সড়ক সংস্কারের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘রাবিশ দিয়ে সড়ক সংস্কার করা হচ্ছে অস্থায়ীভাবে যেন এটি আগের চেয়ে খারাপ না হয়। ঠিকাদারকে জোর করে আন-অফিশিয়ালি এটি করানো হচ্ছে। সড়কের প্রধান কাজ এখনও শুরুই করতে পারিনি।’

পরিপূর্ণভাবে কাজ শুরু কবে থেকে হবে- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘এরই মধ্যে সড়কের সয়েল টেস্টসহ খুঁটিনাটি কাজ শেষ হয়েছে। মোবিলাইজেশন দিলেই সড়কের কাজ পরিপূর্ণভাবে শুরু হবে।’

এ বিভাগের আরো খবর