করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ব্যাপক হারে বেড়ে যাওয়ায় ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে সরকার। তবে এই সময়ে অনলাইন বা ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে ক্লাস চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর।
এ বিষয়ে রোববার রাতে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কে এম রুহুল আমিনের সই করা ১১ দফা নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।
এতে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে ১২-১৭ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনেশন কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে মাদ্রাসায় শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে অফিস কার্যক্রম যথারীতি চালিয়ে যাওয়া হবে বলে জানানো হয়।
মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের অধীন সকল দপ্তর ও মাদ্রাসায় কর্মরত সব কর্মকর্তা, শিক্ষক ও কর্মচারীকে অবশ্যই টিকা সনদ গ্রহণ করার কথাও বলা হয়েছে নির্দেশনায়।
এর আগে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদপ্তরও এক নির্দেশনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের সময়টাতে অনলাইন বা ভার্চুয়াল ক্লাস চালু রাখার ঘোষণা দেয়।
১১ দফা নির্দেশনা
০১. আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২ পর্যন্ত সশরীরে শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।
০২. এ সময়ে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ বাস্তবতার ভিত্তিতে অনলাইন বা ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে শিখন-শেখানা কার্যক্রম অব্যাহত রাখবে। এ ছাড়া, বাংলাদেশ টেলিভিশনে সম্প্রচারিত ‘আমার ঘরে আমার মাদ্রাসা’ শিরোনামে চলমান অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীর উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে।
০৩. যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে ১২-১৭ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনেশন কার্যক্রম চলমান থাকবে।
০৪. মাদ্রাসা বন্ধের সময়ে শ্রেণিকক্ষ, গ্রন্থাগার, গবেষণাগারসহ প্রতিষ্ঠানের সব বিদ্যুৎ, টেলিফোন, ইন্টারনেট পানি এবং গ্যাস সংযোগ নিরবচ্ছিন্ন ও নিরাপদ রাখতে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
০৫. এ সময়ে মাদ্রাসার সকল সম্পদ রক্ষণাবেক্ষণ ও সামগ্রিক নিরাপত্তার বিষয়টির প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে।
০৬. মাদ্রাসার প্রধান প্রতিষ্ঠানের জরুরি প্রয়োজনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষক ও কর্মচারীদের দায়িত্বে নিয়োজিত রাখতে পারবেন।
০৭. যেসব মাদ্রসায় ছাত্রবাস বা ছাত্রীনিবাসে বৈধ আবাসিক শিক্ষার্থীরা অবস্থান করছেন তাদের পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত ছাত্রাবাস বা ছাত্রীনিবাসগুলো খোলা থাকবে। তবে সবাইকে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে।
০৮. অধিদপ্তরের অধীন সকল দপ্তর ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত সকল কর্মকর্তা, শিক্ষক ও কর্মচারীর অবশ্যই টিকা সনদ গ্রহণ করতে হবে।
০৯. মাদ্রাসার কার্যালয় যথারীতি চালু থাকবে; সেখানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে দৈনন্দিন কার্যক্রম পরিচালিত হবে।
১০. জাতীয় স্কুল, মাদ্রাসা ও কারিগরি ক্রীড়া সমিতির আয়োজনে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে চলমান ক্রীড়া প্রতিযোগিতা পরবর্তী নির্দেশনা দেয়া পর্যন্ত স্থগিত থাকবে।
১১. মাদ্রাসায় নিয়মিত পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে হবে।
করোনার তৃতীয় ঢেউ ছড়িয়ে পড়ার পরিপ্রেক্ষিতে গত ২১ জানুয়ারি এক আদেশে সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সশরীরে ক্লাস আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে সরকার।
করোনার কারণে এর আগে ২০২০ সালের মার্চে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শুরুতে সীমিত সময়ের জন্য বন্ধ করা হলেও পরে বারবার এর মেয়াদ বাড়ানো হয়। সে সময় সব মিলিয়ে দেড় বছর বন্ধ থাকে শিক্ষাঙ্গন। ক্লাস-পরীক্ষা নেয়া হয় অনলাইনে।