বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বিকল্প বিদ্যুতে রাত পার শাবি উপাচার্যের

  •    
  • ২৪ জানুয়ারি, ২০২২ ১০:১৫

নাম প্রকাশ না করার শর্তে শাবির কর্মকর্তা অ্যাসোসিয়েশনের এক শীর্ষ নেতা জানান, রোববার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার পরই উপাচার্য ভবনে জেনারেটরের মাধ্যমে বিদ্যুতের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পানিরও ব্যবস্থা হয়েছে। ফলে রোববার রাতে উপাচার্যকে বিদ্যুৎহীন থাকতে হয়নি।

আন্দোলনের একপর্যায়ে সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) উপাচার্য বাসভবনের পানি ও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হলেও খুব বেশি ভোগান্তিতে পড়তে হয়নি উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদকে। বিদ্যুতের বিকল্প ব্যবস্থায় রাত পার করেছেন তিনি।

তবে ১৪ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও উপাচার্য ভবনে কারো যাতায়াত লক্ষ করা যায়নি। বিদ্যুৎ-পানির সমস্যার কথা জানিয়ে উপাচার্যের পক্ষ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়াও আসেনি।

বিদ্যুৎ-পানিবিহীন রাত কেমন কেটেছে তা জানতে সোমবার সকালে উপাচার্যের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি কল ধরেননি।

গভীর রাত পর্যন্ত উপাচার্য ভবনে ছিলেন শাবির কর্মকর্তা অ্যাসোসিয়েশনের এক শীর্ষ নেতা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে সকালে নিউজবাংলাকে তিনি জানান, রোববার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার পরই উপাচার্য ভবনে জেনারেটরের মাধ্যমে বিদ্যুতের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এতে পানিরও ব্যবস্থা হয়েছে। ফলে রোববার রাতে তাকে বিদ্যুৎহীন থাকতে হয়নি।

ওই কর্মকর্তা বলেন, উনার বাসার জেনারেটরে তেলের মজুত পর্যাপ্ত নয়, যা আছে তা দিয়ে আজকের দিন পর্যন্ত চলতে পারে। এই অবস্থা দীর্ঘায়িত হলে সমস্যায় পড়তে হবে। তা ছাড়া আন্দোলনকারীরা বাইরে থেকে কাউকে ভেতরে ঢুকতেও দিচ্ছে না। ফলে তেল শেষ হলে বাইরে থেকে নিয়ে যাওয়া যাবে না।

উপাচার্য সুস্থ আছেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কিছুটা দুশ্চিন্তায় তো আছেনই। তা ছাড়া তার হার্টের অসুখও আছে।’

পদত্যাগ দাবির বিষয়ে ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘এ বিষয়ে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী তিনি সিদ্ধান্ত নেবেন।’

শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, পদত্যাগ না করা পর্যন্ত এভাবেই উপাচার্যকে অবরুদ্ধ রাখা হবে।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা রোববার রাত পৌনে ৮টার দিকে উপাচার্যের বাসভবনের জরুরি পরিষেবাগুলো বিচ্ছিন্ন করে দেন।

এর আগে শিক্ষার্থীদের পক্ষে মোহাইমিনুল বাশার রাজ সংবাদ সম্মেলনে এসে বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা প্রায় ১০০ ঘণ্টা ধরে অনশন করছেন। অথচ এখন পর্যন্ত উপাচার্যের পদত্যাগের কোনো লক্ষণ নেই। এ অবস্থা চলতে থাকলে আমরা উপাচার্যকে পূর্ণ অবরুদ্ধ করতে বাধ্য হব।

‘তখন তার বাসার জরুরি পরিষেবাও (পানি, বিদ্যুৎ) বন্ধ করে দেব আমরা। আর আজ থেকে পুলিশ ছাড়া কেউ তার বাসায় প্রবেশ করতে পারবেন না।’

প্রেক্ষাপট

শাবি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের শুরু ১৩ জানুয়ারি। রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রাধ্যক্ষ জাফরিন আহমেদ লিজার বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ তুলে তার পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন হলের কয়েক শ ছাত্রী।

১৬ জানুয়ারি বিকেলে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি ভবনে উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করেন। তখন শিক্ষার্থীদের লাঠিপেটা করে উপাচার্যকে মুক্ত করে পুলিশ।

এরপর পুলিশ ৩০০ জনকে আসামি করে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মামলা করে। সেদিন রাতে বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দেয় কর্তৃপক্ষ। শিক্ষার্থীরা তা উপেক্ষা করে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে তার পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলনে নামেন।

বাসভবনের সামনে অবস্থানের কারণে গত ১৭ জানুয়ারি থেকেই অবরুদ্ধ অবস্থায় আছেন উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদ।

১৯ জানুয়ারি দুপুর আড়াইটা থেকে উপাচার্যের পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আমরণ অনশনে বসেন ২৪ শিক্ষার্থী।

তাদের মধ্যে একজনের বাবা হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ায় তিনি অনশন শুরুর পরদিনই বাড়ি চলে যান। বাকি ২৩ অনশনকারীর মধ্যে ১৬ জন অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন। ২৩ জানুয়ারি আরও চারজন শিক্ষার্থী অনশনে যোগ দেন।

এর মাঝে উপাচার্য ইস্যুতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ২২ জানুয়ারি গভীর রাতে ভার্চুয়ালি বৈঠক করেন শিক্ষামন্ত্রী। বৈঠকে উপাচার্যের পদত্যাগের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত না এলেও দাবিগুলো লিখিতভাবে জমা দেয়ার পরামর্শ দেন তিনি।

তবে বৈঠকের পর শিক্ষার্থীরা জানান, তাদের মূল দাবি উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগ। এই দাবি না মানা পর্যন্ত তারা আন্দোলন থেকে সরবেন না।

২৩ জানুয়ারি দুপুরের পর শিক্ষার্থীদের আবার শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। তবে তা না হওয়ায় তারা উপাচার্যকে অবরুদ্ধের ঘোষণা দেন।

এ বিভাগের আরো খবর