বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

নাট্যকর্মীদের প্রতি রামেন্দুর খোলা চিঠি

  •    
  • ২৩ জানুয়ারি, ২০২২ ২৩:৫১

নিউজবাংলাকে রামেন্দু মজুমদার লিখেছেন, ‘এখন নাটক নয়, তথাকথিত ক্ষমতার রাজনীতিই প্রধান হয়ে উঠেছে। জাতীয় নির্বাচনের মতো ফেডারেশনের নির্বাচনে প্রার্থীরা দেশব্যাপী ঘুরে প্রচার চালান। প্রতিনিধিরা ঢাকায় এলে তাদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করেন। কেবল ভোটের আশায়। কী এমন মধু আছে ফেডারেশনে আমি বুঝতে পারি না।’

টাকা আত্মসাৎসহ নানা অভিযোগে বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক কামাল বায়েজীদকে শনিবার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়।

এমন খবরে বিষ্ময় প্রকাশ করেছেন দেশের বরেণ্য নাট্য ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার। এ বিষয়ের উল্লেখ করে রোববার তিনি একটি খোলা চিঠি লিখেছেন। তা প্রকাশ পেয়েছে থিয়েটার বিষয়ক পত্রিকা ‘ক্ষ্যাপা’-এর ফেসবুক পেজে।

খোলা চিঠিতে রামেন্দু লেখেন-

প্রিয় স্বজন,

বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনকে কেন্দ্র করে বর্তমানে যা ঘটছে, তা জানতে পেরে আমি অত্যন্ত মর্মাহত। অনেকেই আমাকে টেলিফোন করে এ অবস্থার নিরসনে ভূমিকা রাখার অনুরোধ করেছেন। সেই প্রেক্ষিতে আমি সংবাদপত্রে প্রকাশ করে জনসমক্ষে আমাদের নিজেদের অনাকাঙ্ক্ষিত চেহারাটা তুলে না ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সহায়তায় আপনাদের কাছে আমার ব্যক্তিগত মতামত ব্যক্ত করছি।

দীর্ঘদিন ধরেই আমি ফেডারেশনের ব্যাপারে নির্লিপ্ত। থিয়েটার পত্রিকার সম্পাদক হিসেবে ১৯৮০ সালে আমার আহ্বানে নাট্যকর্মীরা সভায় মিলিত হয়ে ফেভারেশন গঠনে একমত হন এবং আমি প্রথম চেয়ারম্যান নির্বাচিত হই। তাই সংকটকালে একটা দায়িত্ববোধ অনুভব করছি।

আমরা প্রতিষ্ঠাকালে যে ফেডারেশনের স্বপ্ন দেখেছিলাম, আজকের পরিস্থিতি আমাদের কল্পনারও অতীত ছিল। অনেক কষ্ট করে সব মত ও পথের মানুষকে ফেডারেশনের পতাকাতলে এক করে সংগঠনকে নাট্যকর্মীদের একটি বিশাল শক্তি হিসেবে গড়ে তুলতে পেরেছিলাম। কোনো সরকারি আর্থিক অনুদান ছাড়া নিজেরা পরিশ্রম করে বিভিন্ন জায়গা থেকে অর্থ সংগ্রহ করে দীর্ঘদিন ফেডারেশনের কাজকর্ম চালিয়েছি। আমরা সমবয়সী হলেও একে অন্যের সিদ্ধান্ত মেনে চলেছি, অন্যের মতামতকে শ্রদ্ধা করেছি।

এখন দেখছি- নাটক নয়, তথাকথিত ক্ষমতার রাজনীতিই প্রধান হয়ে উঠেছে। জাতীয় নির্বাচনের মতো ফেডারেশনের নির্বাচনে প্রার্থীরা দেশব্যাপী ঘুরে প্রচার চালান। প্রতিনিধিরা ঢাকায় এলে তাদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করেন। কেবল ভোটের আশায়। কী এমন মধু আছে ফেডারেশনে আমি বুঝতে পারি না।

বর্তমানে ফেডারেশনের কর্তা ব্যক্তিদের এই বিরোধ জনসমক্ষে নাট্যকর্মীদের ভাবমূর্তিকে চরমভাবে কালিমালিপ্ত করেছে। এর দায় নাট্যকর্মীরা কেন নেবেন? তারা সুন্দর পরিবেশে নাটক করতে চান, নোংরা রাজনীতি চান না।

এমন অবস্থায় আমার ব্যক্তিগত মত হচ্ছে, অনির্দিষ্টকালের জন্য বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের সব কর্মকাণ্ড স্থগিত করা হোক। এবং ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করে রাখা হোক। গঠনতান্ত্রিক উপায়ে কাজটি করার জন্য ফেডারেশনের একটি জরুরি সাধারণ সভা আহ্বান করে এসব সিদ্ধান্ত নিতে হবে। বর্তমান নির্বাহী ও কেন্দ্রীয় পরিষদ বাতিল করে ৭/৮ জনের একটি অ্যাডহক কমিটি করে দেয়া যেতে পারে, যারা বেশ কিছুদিন পর পরিস্থিতি শীতল হলে ফেডারেশনকে ঢেলে সাজিয়ে নতুনভাবে যাত্রা শুরু করবেন।

আবারও বলছি, এটা একান্তই আমার ব্যক্তিগত মত। সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা ফেডারেশনের সাধারণ সদস্যদের। আমরা কোনোভাবেই চাই না নাট্যকর্মীদের এমন একটি প্রতিষ্ঠান নষ্ট হয়ে যাক।

আসুন সবাই নিজ নিজ দলের নাট্যকর্মে মনোযোগ দেই। কারণ আমাদের প্রধান কাজ নাটক করা, নাটক নিয়ে রাজনীতি করা নয়। অতিমারিকালে সব সতর্কতা অবলম্বন করবেন। আপনাদের সবার মঙ্গল কামনা করি।

প্রীতি ও শুভেচ্ছান্তে,

রামেন্দু মজুমদার

এ বিভাগের আরো খবর