গোলাপ ফুল হাতে থানার ফটকের সামনে দাঁড়িয়ে দুই পুলিশ। সেবাপ্রার্থীরা থানায় প্রবেশ করতেই তাকে সেই ফুল দিয়ে জানানো হচ্ছে অভ্যর্থনা। ভেতরে গেলে তাদের আপ্যায়ন করা হচ্ছে চা ও চকলেট দিয়ে।
এটি চুয়াডাঙ্গা সদর থানার চিত্র। পুলিশের এই উদ্যোগে মুগ্ধ সেবাপ্রার্থীরা। থানার ওসি জানিয়েছেন, সেবাপ্রার্থীদের মনে পুলিশি সেবা নিয়ে যে ভয় বা অস্বস্তি আছে, তা দূর করতে এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী মৌমিতা খাতুন সকালে সদর থানায় গিয়ে চমকে যান। তিনি বলেন, ‘আমার এসএসসি পরীক্ষার মূল সনদ হারিয়ে গেছে। এ কারণে থানায় সাধারণ ডায়েরি করতে এসেছি। থানায় সেবা নিতে পুলিশ কোনো টাকা নেয়নি বরং ফুল দিয়ে বরণ ও চকলেট দিয়ে আপ্যায়ন করেছে।
‘আসলে পুলিশ বা থানা সম্পর্কে আমাদের নেতিবাচক ধারণা ছিল, কিন্তু থানায় সেবা নিতে এসে সে ধারণা ভেঙে গেল। আমি সত্যিই খুব খুশি এমন সেবা পেয়ে।’
৬৫ বছরে আব্দুল হান্নানের বাড়ি সদর উপজেলার জাফরপুর গ্রামে। তিনি বলেন, ‘থানায় একটি অভিযোগ দিতে এসেছিলাম। থানায় ঢোকার সঙ্গে সঙ্গেই আমাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান পুলিশ সদস্যরা। আমাকে চেয়ার বসালেন ওসি সাহেব। আগে চা খাওয়ালেন। পরে কথা শুনলেন। কাজ শেষে যাওয়ার সময় চকলেট খাওয়ালেন ওসি সাহেব।’
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন জানান, ২০২০ সালে ফেব্রুয়ারি থেকে থানায় চকলেট দিয়ে আপ্যায়নের রীতি চালু করেন উপপরিদর্শক শামীম হাসান। ২০২১ সালে ওসি হিসেবে যোগ দিয়ে তিনি চকলেটের সঙ্গে চা যোগ করেন। আর রোববার থেকে শুরু হলো ফুল দেয়া।
ওসি বলেন, ‘আমরা পুলিশ সম্পর্কে মানুষের ভেতরে থাকা ভুয় ভীতি দূর করতে চাই। তাই এই আয়োজন। থানায় আগত প্রত্যেক সেবাপ্রার্থীকেই এভাবে অভ্যর্থনা জানানো হচ্ছে। পুলিশকে আরও জনবান্ধব করতে এই কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।’