বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সুবিধা না বাড়লে ৫০ ভাগ ব্যবসায়ীই খেলাপি: এফবিসিসিআই

  •    
  • ২২ জানুয়ারি, ২০২২ ২০:৫৭

অনুষ্ঠানে ব্যবসায়ী নেতারা জানান, করোনা মহামারির মধ্যে এখনও দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। এমন অবস্থায় ঋণের কিস্তি পরিশোধে অন্তত জুন পর্যন্ত সময় দাবি করেন তারা।

ঋণ শ্রেণীকরণ সুবিধার মেয়াদ না বাড়ালে অন্তত ৫০ শতাংশ ব্যবসায়ীর খেলাপি হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অফ বাংলাদেশ চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই)।

শনিবার কাউন্সিল অফ চেম্বার প্রেসিডেন্টস ২০২২-এর মতবিনিময় সভায় এমন আশঙ্কার কথা জানান এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন। রাজধানীর মতিঝিলে এফবিসিসিআই এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন তিনি।

কাউন্সিল অফ চেম্বার প্রেসিডেন্টসের সভাপতি ও এফবিসিসিআইয়ের সিনিয়র সহসভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় সারা দেশ থেকে আসা জেলা, সিটি ও নারী উদ্যোক্তাদের চেম্বারগুলোর সভাপতি, সহসভাপতিরা বক্তব্য দেন।

অনুষ্ঠানে ব্যবসায়ী নেতারা জানান, করোনা মহামারির মধ্যে এখনও দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। এমন অবস্থায় ঋণের কিস্তি পরিশোধে অন্তত জুন পর্যন্ত সময় দাবি করেন তারা।

তারা বলেন, করোনার দ্বিতীয় ধাক্কার পর এখন ওমিক্রন ধরনের সংক্রমণে আবারও ব্যবসা-বাণিজ্যে নাজুক পরিস্থিত তৈরি হয়েছে। এমন অবস্থায় অনেক ব্যবসায়ীর ঋণের কিস্তি দেয়ার সক্ষমতা নেই।

ব্যবসায়ীরা জানান, বাংলাদেশ ব্যাংক সময় না বাড়ালে ঋণগ্রহীতাদের অনেকেই খেলাপি হবেন, যা দীর্ঘমেয়াদে দেশের অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর হবে।

এ সময় ব্যবসায়ীদের দাবির প্রতি সমর্থন জানান এফবিসিসিআই সভাপতি জসিম উদ্দিন। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, ‘ঋণ শ্রেণীকরণ সুবিধার মেয়াদ না বাড়ালে অন্তত ৫০ শতাংশ ব্যবসায়ী খেলাপি হবেন।

‘তাই মহামারিকালীন মন্দা কাটিয়ে উঠতে বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতি সহায়তা এখন আগের চেয়ে আরও বেশি দরকার। তা না হলে ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনীতি পুনরুদ্ধার কঠিন হয়ে পড়বে।’

এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, ‘করোনা মহামারি নিয়ন্ত্রণে সরকারের নির্দেশে যেসব খাতের ব্যবসায়িক কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছিল, সে খাতগুলোই এখনও প্রণোদনার ঋণ পায়নি। মহামারিতে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তারা। কিন্তু অন্যান্য প্রণোদনা তহবিলের অর্থ প্রায় শতভাগ ছাড় হলেও এসএমই প্রণোদনার বড় অংশ বিতরণ হয়নি।’

ক্ষুদ্র ও মাঝারি খাতে ছোট আকারের ঋণ দিতে ব্যাংকগুলোর অনীহা আছে উল্লেখ করে এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, ‘ব্যাংকগুলো মনে করে ছোট আকারের ঋণ দেয়া লাভজনক নয়। বড় ব্যবসা খাতে ঋণ দিলে ব্যাংকের জনবল ও খরচ কম হয়। কিন্তু এ ধারণা ভুল, বরং এতে মন্দ ঋণের ঝুঁকি বাড়ে। এসএমই খাতে খেলাপি ঋণ নেই বললেই চলে।’

দেশে ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ তৈরিতে সরকারের নীতিনির্ধারণী বৈঠকে বেসরকারি খাতকে রাখার আহ্বান জানান এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন।

তিনি বলেন, ‘অর্থনীতিতে ৮২ শতাংশ অবদান রাখছে বেসরকারি খাত। তাই বেসরকারি খাতের প্রতিনিধিত্বকারী হিসেবে যেকোনো নীতি প্রণয়নে এফবিসিসিআইয়ের মতামত থাকা জরুরি।’

এফবিসিসিআই সভাপতিকে প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদা দাবি

কাউন্সিল অফ চেম্বার প্রেসিডেন্টস সভায় সারা দেশ থেকে আসা বিভিন্ন চেম্বারের নেতারা বলেন, সরকারি কর্মকর্তারা বাস্তবতা না বুঝে নিজেদের মতো করে নীতি প্রণয়ন করেন। ফলে অনেক সময় এসব নীতি বাস্তবায়নযোগ্য হয় না। ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ তৈরির লক্ষ্যে নীতিনির্ধারণী সভায় এফবিসিসিআইয়ের মতামত দেয়ার সুযোগ থাকতে হবে। এফবিসিসিআইকে গুরুত্ব দিতে হবে।

তাই এফবিসিসিআইকে শক্তিশালী করতে সংগঠনের সভাপতিকে তারা প্রতিমন্ত্রীর সমমর্যাদা দেয়ার দাবি তোলেন।

নানা অভিযোগ ব্যবসায়ীদের

সভাপতির বক্তব্যে মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু বলেন, ‘দেশে এখনও শুল্ক-কর ও ভ্যাট আদায়ে হয়রানির শিকার হচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। কোম্পানি আইন, আমদানি ও রপ্তানি আইন নতুন করে হচ্ছে। এসব আইন যেন ব্যবসাবান্ধব হয়, সে জন্য এফবিসিসিআই কাজ করে যাচ্ছে।’

এ সময় ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন, করোনা মহামারিতে বিপর্যস্ত ব্যবসা-বাণিজ্যের মধ্যেও রাজস্ব আদায় করতে নানাভাবে তাদের নানাভাবে হয়রানি ও ভীতির পরিবেশ তৈরি করছেন রাজস্ব কর্মকর্তারা। স্থানীয় পর্যায়ে চাঁদাবাজিরও শিকার হচ্ছেন।

করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পরও জেলা পর্যায়ের ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তারা সরকার ঘোষিত প্রণোদনা পাচ্ছেন না বলেও অভিযোগ অনেকের। তারা জানান, এসব কারণে প্রান্তিক ব্যবসায়ীদের পক্ষের মহামারি-পরবর্তী উত্তরণ কঠিন হয়ে পড়ছে।

এ ছাড়া অডিটে সিঙ্গেল অ্যাকাউন্ট বাস্তবায়ন হলে তা পুরো অর্থনীতিতে বিপর্যয় আনবে বলেও মত দেন ব্যবসায়ীরা। তারা বলেন, কারখানা স্থাপনে ৩৩টি লাইসেন্সের দরকার হয়। এসব সনদ নিতে বিপুল পরিমাণ ভোগান্তির শিকার হতে হয় উদ্যোক্তাদের।

এই সমস্যা সমাধানে ওয়ান স্টপ সার্ভিস চালুর দাবি জানান ব্যবসায়ীরা। একই সঙ্গে লাভ-ক্ষতি নির্বিশেষে টার্নওভার ট্যাক্সের বিধান বাতিল করে শুধু আয়ের ওপর কর আরোপের দাবি জানান তারা।মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন কিশোরগঞ্জ চেম্বারের সভাপতি মোহাম্মদ মুজিবুর রহমান বেলাল, রাজশাহী ওমেন চেম্বারের সহসভাপতি তাহেরা হাসেন, সাতক্ষীরা চেম্বারের সভাপতি নাসিম ফারুক খান মিঠু, রংপুর মেট্রোপলিটন চেম্বারের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ গোলাম জাকারিয়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়া চেম্বারের সভাপতি আজিজুল হক প্রমুখ।

এফবিসিসিআইয়ের পরিচালকদের মধ্যে বক্তব্য দেন মো. রেজউল করিম রেজনু, তাহমিন আহমেদ, প্রীতি চক্রবর্তী, মো. নিজাম উদ্দিন, আনোয়ার উল আলম চৌধুরী পারভেজ প্রমুখ।

এ বিভাগের আরো খবর