উপাচার্য ইস্যুতে সময়ের সঙ্গে জটিল হয়ে উঠছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় পরিস্থিতি। এবার গণ-অনশনের ঘোষণা দিয়েছেন উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
সংকট সমাধানে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনির সঙ্গে শিক্ষক প্রতিনিধি দলের আলোচনা চলার মধ্যেই এ ঘোষণা এলো।
শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে সংবাদ সম্মেলনে ঘোষণাটি দেন বিক্ষুব্ধরা। জানান, শনিবার রাত থেকেই গণ-অনশন শুরু হবে।
ইয়াসির সরকার নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘অনশনকারী শিক্ষার্থীদের কষ্ট ও অসুস্থতা আমরা কেউ মেনে নিতে পারছি না। আমাদেরও কষ্ট হচ্ছে। তাই তাদের সঙ্গে আমরাও গণ-অনশন শুরুর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
‘আমাদের এখানে একটি কাগজ থাকবে। সেখানে নাম লিপিবদ্ধ করে যে কেউ অনশনে যোগ দিতে পারবেন। ইতোমধ্যে তিনজন গণ-অনশনের জন্য নাম লিপিবদ্ধ করেছেন।’
ইয়াসির আরও বলেন, ‘১৫ জানুয়ারি পুলিশ আমাদের শান্তিপূর্ণ অবস্থানে লাঠিচার্জ করে। রাবার বুলেট ও শব্দ বোমা ছোড়ে। এতে আহত অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী যখন হাসপাতালে ও একজন আইসিইউতে, ঠিক সে সময়ে উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করেন। এসব ঘটনার জন্য উল্টো শিক্ষার্থীদের দায়ী করেন।
‘প্রতিবাদে আমরা তাকে ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করি। অনশন শুরু করি। কিন্তু অনশনে অনেকের জীবন সংকটাপন্ন হয়ে পড়লেও উপাচার্য পদত্যাগ করেননি।’
তিনি বলেন, ‘ফরিদ উদ্দিন আহমদের পদত্যাগপত্র সচক্ষে না দেখা পর্যন্ত আমাদের আমরণ অনশন চলবে। এতে যদি কোনো শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়, তার দায় ফরিদ উদ্দিনকেই নিতে হবে।’
শিক্ষামন্ত্রীর আলোচনার প্রস্তাব প্রশ্নে ইয়াসির বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা তাতে সম্মত হলেও অনশনরতদের শারীরিক ও মানসিক অবস্থা বিবেচনায় আমন্ত্রণ রাখতে পারিনি। মন্ত্রীকে সিলেটে এসে আমাদের অবস্থা দেখে যাওয়ার অনুরোধ করেছি। তা না হলে ভার্চুয়ালি আলোচনা হতে পারে।’
উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগ দাবিতে গত বুধবার থেকে অনশন শুরু করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৪ শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ায় ১৬ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
সেবায় কিছুটা সুস্থ হয়ে তিন শিক্ষার্থী ফের উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অনশনে যোগ দিয়েছেন। আর হাসপাতালে ভর্তিরা সেখান থেকেই কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন।
উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অনশনে থাকাদের শারীরিক অবস্থা অবনতির দিকে। তাদের বেশির ভাগেরই স্যালাইন চলছে।