শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবি) উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগ একমাত্র সমাধান নয় এবং এটি পরিস্থিতিকে আরও ঘোলাটে করবে বলে বিবৃতি দিয়েছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন।
ফেডারেশনের দাবি, শাবির বর্তমান উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয় এবং শিক্ষার্থীদের উন্নয়নে অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছেন। তার পদত্যাগে পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটতে পারে।
বৃহস্পতিবার রাতে ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যাপক ড. ফরিদা ইয়াসমিন বারী ও মহাসচিব অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভূঁইয়া স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তি দিয়ে এমন দাবি করা হয়।
১৩ জানুয়ারি রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রাধ্যক্ষ জাফরিন আহমেদের বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ এনে তার পদত্যাগসহ তিন দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের হলের কয়েক শ ছাত্রী। ১৫ জানুয়ারি সন্ধ্যায় আন্দোলনরত ছাত্রীদের ওপর হামলার অভিযোগ ওঠে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে।
পরের দিন বিকেলে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি ভবনে উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করেন। তখন পুলিশ শিক্ষার্থীদের লাঠিপেটা করে, শটগানের গুলি ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে। ওই দিন রাত সাড়ে ৮টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ও শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার ঘোষণা দিলেও শিক্ষার্থীরা তা উপেক্ষা করে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।
প্রাধ্যক্ষের পদত্যাগের পর শিক্ষার্থীরা উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমদের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলন করছেন। বুধবার বেলা ৩টার দিকে এই দাবিতে আমরণ অনশনে বসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৪ শিক্ষার্থী। এদের মধ্যে বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত ৮ জনকে হাসপাতালে নেয়া হয়েছে।
এরই মধ্যে উপাচার্যের পক্ষে এমন বিবৃতি দিল ফেডারেশন।
বিজ্ঞপ্তিতে শিক্ষক নেতারা বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ইতোমধ্যে বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলে নতুন প্রভোস্ট নিয়োগ দেয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হলেও একটি মহল কোমলমতি শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক আন্দোলনকে ‘সরকারবিরোধী’ আন্দোলনে পরিণত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত আছেন।
এমন অপচেষ্টায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে বিরাজমান শান্ত পরিবেশকে বিঘ্নিত করে শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করে একটি মহলের এমন অপচেষ্টা দেশকে অস্থিতিশীল করার অব্যাহত চক্রান্তের একটি অংশ।
সরকারের গোয়েন্দা সংস্থাসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি গুরুত্বসহকারে খতিয়ে দেখার আহ্বান জানানো হয় বিজ্ঞপ্তিতে।
পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক সব দাবিদাওয়া মেনে নিয়ে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জন্য শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবিও জানায় বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন।