বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

পতন ঠেকাল সংশোধনে থাকা বেক্সিমকো গ্রুপ

  •    
  • ২০ জানুয়ারি, ২০২২ ১৫:৩২

১৮৭ টাকা থেকে পড়তে পড়তে ১৪৪ টানায় নেমে আসা বেক্সিমকো লিমিটেড ঘুরে দাঁড়ায় বুধবার। সেদিন শেয়ারদর বাড়ে ৭ টাকা ৬০ পয়সা। পরদিন বাড়ল আরও ৮ টাকা ৭০ পয়সা। অন্যদিকে বেক্সিমকো ফার্মার শেয়ারদর বুধবার বাড়ে ৩ টাকা ৪০ পয়সা, পরের দিন তা বাড়ল আরও ৪ টাকা ৭০ পয়সা।

দুই মাসের বেশি সময় ধরে সংশোধনে থাকা বেক্সিমকো লিমিটেডে ভর করে টানা ‍দুই দিন সূচক বাড়ল পুঁজিবাজারে। ওয়ালটনের দরপতনের ধাক্কা সামলানোর ক্ষেত্রে এ কোম্পানিটির পাশাপাশি বেক্সিমকো ফার্মার ভূমিকাও ছিল।

সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস বৃহস্পতিবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে সূচক বাড়ল ১৬ দশমিক ২৬ পয়েন্ট। এর মধ্যে বেক্সিমকো গ্রুপের দুই কোম্পানির মধ্যে বেক্সিমকো লিমিটেড বাড়িয়েছে ১২ দশমিক ২৩ পয়েন্ট আর বেক্সিমকো ফার্মা বাড়িয়েছে ৩ দশমিক ৩৬ পয়েন্ট।

এ নিয়ে চলতি সপ্তাহের পাঁচ দিনই সূচক অল্প অল্প করে বেড়েছে।

গত বছরের শেষ প্রান্তিকে পুঁজিবাজারে ক্রমাগত দরপতন হতে থাকলেও চলতি বছরের শুরুটা হয়েছে ঝলমলে। তিন সপ্তাহের ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে সূচক কমেছে কেবল দুই দিন, বেড়েছে বাকি ১৩ দিন।

সংশোধন কাটিয়ে সূচকে চাঙাভাব ফেরার পর যে প্রবণতা দেখা যাচ্ছে, সেটি হলো সূচক লাফ দিচ্ছে না, বাড়ছে অল্প অল্প করে। লেনদেনও বাড়ছে ধীরে ধীরে।

২০২০-এর মাঝামাঝি থেকে ২০২১ সালের অক্টোবর পর্যন্ত পুঁজিবাজারে সূচকের যে ব্যাপক উত্থান হয়েছিল সেখানে বেক্সিমকো গ্রুপের, বিশেষ করে বেক্সিমকো লিমিটেডের উত্থান ছিল সবচেয়ে বেশি।

তবে বেক্সিমকো গ্রুপের কোম্পানিগুলোর অক্টোবর ও নভেম্বর থেকে দর হারাতে শুরু করে। গত এক বছরের সর্বোচ্চ দরের তুলনায় এই কদিনে ২২ শতাংশের বেশি দর হারায় বেক্সিমকো লিমিটেড, বেক্সিমকো ফার্মা দর হারায় প্রায় ২৫ শতাংশ, আইএফআইসি ব্যাংক প্রায় ২০ শতাংশ আর শাইনপুকুর সিরামিকস দর হারায় ৩৫ শতাংশের বেশি।

বৃহস্পতিবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের লেনদেনের চিত্র

১৮৭ টাকা থেকে পড়তে পড়তে ১৪৪ টানায় নেমে আসা বেক্সিমকো লিমিটেড ঘুরে দাঁড়ায় বুধবার। সেদিন শেয়ারদর বাড়ে ৭ টাকা ৬০ পয়সা। পরদিন বাড়ল আরও ৮ টাকা ৭০ পয়সা।

অন্যদিকে বেক্সিমকো ফার্মার শেয়ারদর বুধবার বাড়ে ৩ টাকা ৪০ পয়সা, পরের দিন তা বাড়ল আরও ৪ টাকা ৭০ পয়সা।

এই দুই দিনে গ্রুপের আরেক কোম্পানি শাইনপুকুর সিরামিকসের দরে যোগ হয়েছে ২ টাকা বা ৬ দশমিক ৮৪ শতাংশ। তবে আইএফআইসি ব্যাংক এখনও ঠায় দাঁড়িয়ে একটি দরে। অন্যদিকে লেনদেন শুরুর পরেই অভিহিত মূল্যের চেয়ে নিচে নেমে যাওয়া বেক্সিমকো গ্রিন সুকুক দর হারিয়েছে সাড়ে ৯ শতাংশ।

কেবল সূচকের উত্থানে নয়, লেনদেনেও বেক্সিমকোর ভূমিকা ছিল প্রধান। এর মধ্যে বেক্সিমকো লিমিটেডে লেনদেন হয়েছে ২৪৬ কোটি ৫৪ লাখ ৮১ হাজার টাকা। এটি মোট লেনদেনের ১৫ দশমিক ৩৯ শতাংশ।

সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসে সূচক বাড়লেও বেশির ভাগ শেয়ারের দর অবশ্য কমেছে। সব মিলিয়ে বেড়েছে ১৬২টি কোম্পানির দর, কমেছে ১৭৪টির। অপরিবর্তিত ছিল বাকি ৪২টির দর।

লেনদেনও খানিকটা কমেছে। দিন শেষে হাতবদল হয়েছে ১ হাজার ৬০১ কোটি ২০ লাখ ২৬ হাজার টাকা। আগের দিন হাতবদল হয়েছিল ১ হাজার ৭৩৫ কোটি ৫৭ লাখ ৪১ হাজার টাকা।

এদিন বিবিধি খাতের বেক্সিমকো লিমিটেড ছাড়াও লেনদেনে ৫০ শতাংশের বেশি কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে ওষুধ ও রসায়ন খাতের ৫৮ শতাংশ।

প্রধান খাতগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে সাধারণ বিমা খাতের শেয়ারদর। এই খাতের ৬৬ শতাংশ কোম্পানির দর বেড়েছে। ব্যাংক খাতের ৩৪ শতাংশ কোম্পানির শেয়ারদর কমেছে। একই হারে বেড়েছেও। আর্থিক খাতের শেয়ারদর বেড়েছে ৩১ শতাংশ।

খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতের ৬০ শতাংশ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে, কমেছে ৩৫ শতাংশের।

সূচক বেড়েছে যেসব কোম্পানির অবদান বেশি

বেক্সিমকো লিমিটেড ও বেক্সিমকো ফার্মা ছাড়া তৃতীয় কোম্পানি হিসেবে সূচকে সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছে লিন্ডে বিডি। এই কোম্পানিটি যোগ করেছে ২ দশমিক ৪১ পয়েন্ট।

সূচক সবচেয়ে বেশি বাড়িয়েছে এই ১০টি কোম্পানি

সূচক বৃদ্ধিতে ইতিবাচক অবদান রেখেছে স্কয়ার ফার্মা, কেয়া কসমেটিকস, এসিআইও। সূচকে এই তিন কোম্পানির অবদান ছিল ৪ দশমিক ৪৫ পয়েন্ট।

এর বাইরে ট্রাস্ট ব্যাংক শূন্য দশমিক ৮২ পয়েন্ট, উত্তরা ব্যাংক শূন্য দশমিক ৬৬ পয়েন্ট, বিকনফার্মা শূন্য দশমিক ৬১ পয়েন্ট ও সোনালী পেপার শূন্য দশমিক ৫৯ পয়েন্ট সূচক বাড়িয়েছে।

সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানি সূচকে যোগ করেছে ২৪ দশমিক ৮১ পয়েন্ট।

অন্যদিকে সূচক সবচেয়ে বেশি কমিয়েছে ওয়ালটন। কোম্পানিটির অর্ধবার্ষিক আয় কমে যাওয়ার পর শেয়ারদর ৩ দশমিক ৭ শতাংশ কমায় সূচক কমে গেছে ২০ দশমিক ৩৭ পয়েন্ট।

দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা গ্রামীণফোন ৩ দশমিক ৬৮ পয়েন্ট এবং লাফার্জ হোলসিম সিমেন্ট সূচক কমিয়েছে ৩ দশমিক ৫৪ পয়েন্ট।

তিতাস গ্যাস, ফরচুন সুজ, বাংলাদেশ সাবমেরিন কেব্‌ল, আইসিবি, ব্র্যাক ব্যাংক, জিপিএইচ ইস্পাত, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকও সূচক কমিয়েছে।

সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানিই সূচক কমিয়েছে ৩৬ দশমিক ৪৫ পয়েন্ট।

এই ১০ টি কোম্পানির সূচক নিচের দিকে টেনে নামিয়েছে

দর বৃদ্ধির শীর্ষে দুর্বল কোম্পানি

যে ১০টি কোম্পানির দর সবচেয়ে বেশি বেড়েছে, তার মধ্যে আটটি ‘বি‘ ক্যাটাগরির কোম্পানি, একটি নতুন তালিকাভুক্ত, একটি জেড ক্যাটাগরির।

যে কোম্পানি লভ্যাংশ দেয় না, সেগুলো জেড ক্যাটাগরিতে থাকে, যে সব কোম্পানি ১০ শতাংশের কম লভ্যাংশ দেয়, সেগুলো ‘বি’ ক্যাটাগরির কোম্পানি আর যেসব কোম্পানি ১০ শতাংশ বা তার চেয়ে বেশি লভ্যাংশ দেয়, সেটি ‘এ’ ক্যাটাগরির কোম্পানি।

লেনদেনে সবচেয়ে বেশি দর বেড়েছে কেয়া কসমেটিকসের ১০ শতাংশ। ৭ টাকার শেয়ার বেড়ে হয়েছে ৭ টাকা ৭০ পয়সা। ২০২০ সালের জন্য এক শতাংশ লভ্যাংশ দেয়া এই কোম্পানিটি ২০২১ সালের জন্য এখনও লভ্যাংশ ঘোষণা করেনি।

বৃহস্পতিবার মোট ৫টি খাতে একশ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে

২০২১ সালে শেয়ার প্রতি ৫০ পয়সা লভ্যাংশ দেয়া দেশবন্ধু পলিমারের দর বেড়েছে ৯.৯১ শতাংশ, শেয়ার প্রতি সাড়ে ২৭ পয়সা লভ্যাংশ দেয়া গোল্ডেনসনের দর ৯.৯০ শতাংশ, শেয়ার প্রতি ৫০ পয়সা লভ্যাংশ দেয়া গোল্ডেন হ্যাভি ক্যামিকেলের দর ৯.৮০ শতাংশ আর নতুন তালিকাভুক্ত ইউনিয়ন ইন্স্যুরেন্সের দর বেড়েছে ৯.৫৮ শতাংশ।

সাত শতাংশের বেশি শেয়ার দর বেড়েছে দুটি কোম্পানির। এর মধ্যে শেয়ার প্রতি ৩০ পয়সা লভ্যাংশ দেয়া গোল্ডেন হারভেস্টের ৭.৮২ শতাংশ আর শেয়ার প্রতি এক টাকা লভ্যাংশ ঘোষণা করা পেপার প্রসেসিং অ্যান্ড প্রিন্টিংয়ের ৭.১৯ শতাংশ শেয়ার দর বেড়েছে।

২০২১ সালে শেয়ার প্রতি ৫০ পয়সা লভ্যাংশ ঘোষণা করা বেঙ্গল উইন্ডসোরের দর ৬.১১ শতাংশ, লোকসানের কারণে লভ্যাংশ না দেয়ার ঘোষণা দেয়া ইয়াকিন পলিমারের দর ৫.৯২ শতাংশ এবং শেয়ার প্রতি এক টাকা লভ্যাংশ ঘোষণা করা মনোস্পোল পেপারের দর বেড়েছে ৫.৬৮ শতাংশ।

দর পতনে ১০ কোম্পানি

লভ্যাংশ সংক্রান্ত ঘোষণার কারণে বৃহস্পতিবার তাল্লু স্পিনিংয়ের শেয়ার দরে কোনো সীমা ছিল না। ফলে স্বাভাবিক দরের চেয়ে বেশি বৃদ্ধি ও কমার সুযোগ ছিল কোম্পানিটির।

গত তিন বছরের জন্য কোনো লভ্যাংশ ঘোষণা না করার পর কোম্পানিটির শেয়ার দর এক দিনেই কমেছে ২৫.১৭ শতাংশ। আগের দিন দর ছিল ১৪ টাকা ৩০ পয়সা, সেটি নেমে এসেছে ১০ টাকা ৭০ পয়সায়।

বৃহস্পতিবার বেশিরভাগ খাতেই লেনদেন কমেছে পুঁজিবাজারে

দর পতনের দ্বিতীয় তালিকায় ছিল ফুওয়াং ফুড, যার দর কমেছে ৬.৪৩ শতাংশ। তৃতীয় অবস্থানে থাকা ফারইস্ট লাইফ ইন্স্যুরেন্স দর হারিয়েছে ৬.৩২ শতাংশ।

এছাড়া দেশ গার্মেন্টসের দর ৬.০৬ শতাংশ, প্রাইম লাইফের দর ৫.৬২ শতাংশ, ওরিয়ন ইনফিউশনের দর ৫.০৪ শতাংশ, ইস্টার্ন লুব্রিকেন্টসের দর ৪.৯৯ শতাংশ, সিনোবাংলা ইন্ডাস্ট্রিজের দর ৪.৫১ শতাংশ ও ফরচুন সুজের দর ৪.৩৭ শতাংশ কমেছে।

দর পতনের শীর্ষ দশে থাকা অপর কোম্পানিটি হলো অগ্নি সিস্টেমস। ৪.০৩ শতাংশ দর হারিয়ে ২৪ টাকা ৮০ পয়সা দরের শেয়ার নেমেছে ২৩ টাকা ৮০ পয়সায়।

লেনদেনে সেরা ১০

এদিন সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে বেক্সিমকো লিমিটেডের ২৪৬ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। শেয়ার হাতবদল হয়েছে ১ কোটি ৫৭ লাখ ২৪ হাজার ২৯৩টি।

দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের লেনদেন হয়েছে ৭১ কোটি ৪০ লাখ টাকার।

লেনদেনের তৃতীয় স্থানে ছিল ফরচুন সুজ। কোম্পানিটির মোট ৪১ কোটি ৩১ লাখ টাকার ৩২ লাখ ৯৫ হাজার ৭১৬টি শেয়ার হাতবদল হয়েছে।

চতুর্থ অবস্থানে থাকা সাইফ পাওয়ারটেকের লেনদেন হয়েছে ৪০ কোটি ৮ লাখ টাকা। এসিআই শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৩৪ কোটি ৮১ লাখ টাকার।

ষষ্ঠ স্থানে থাকা জিপিএইচ ইস্পাতে লেনদেন হয়েছে ৩৪ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। শেয়ার হাতবদল হয়েছে ৫৬ লাখ ৭৫ হাজার ২১৩টি।

এছাড়া পাওয়ারগ্রিডে ২৮ কোটি ৩৯ লাখ টাকা, একটিভ ফাইনে ২৬ কোটি ৬১ লাখ টাকা, লিনডে বিডির ২৫ কোটি ১০ লাখ টাকা, এশিয়া ইন্স্যুরেন্সে ২৩ কোটি ৪৬ লাখ টাকা, প্যারামাউন্ড টেক্সটাইলে ২৩ কোটি ২৭ লাখ টাকা, লাফার্জ হোলসিম সিমেন্টের লেনদেন হয়েছে ২১ কোটি ৭৮ লাখ টাকা।

এ বিভাগের আরো খবর