ক্রিকেট বিশ্বের অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানের মালিকানাধীন মোনার্ক হোল্ডিং আগামী সপ্তাহ থেকে বিও হিসাব খোলার ঘোষণা দিয়েছে। এরপরই লেনদেন শুরু হবে।
এমনটি নিউজবাংলাকে জানিয়েছেন মোনার্ক হোল্ডিংয়ের আইটি প্রধান রাইসুল হাসান।
নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি যে ৫২টি নতুন ব্রোকারেজ হাউসের অনুমোদন দিয়েছে তার মধ্যে এটি প্রথম, যেটি লেনদেন শুরুর দ্বারপ্রান্তে।
রাইসুল হাসান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আগামী সপ্তাহের সোমবার থেকে আমাদের এখানে বিও (বেনিফিশিয়ারি ওনার্স) হিসাব খোলা শুরু হবে। বিও হিসাব খোলা শুরু হওয়ার দ্রুততম সময়ে লেনদেনে যাওয়া যাবে।’
এরই মধ্যে ডিএসই থেকে মোনার্ক হোল্ডিংকে লেনদেন শুরুর অনুমোদন দেয়া হয়েছে। প্রয়োজনীয় লিংকও ডিএসই থেকে সরবরাহ করা হয়েছে।
গত বছরের ২১ মে পুঁজিবাজারে ব্রোকারেজ হাউসের (অনুমোদিত শেয়ার কেনাবেচা হাউস) ব্যবসা করার অনুমতি পায় ক্রিকেটের বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার ও পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির শুভেচ্ছা দূত সাকিব আল হাসান।
সাকিবের মালিকানাধীন ব্রোকারেজ হাউসের নাম মোনার্ক হোল্ডিং। মতিঝিলের সিটি সেন্টারে নেয়া হয়েছে করপোরেট অফিস।
নতুন অনুমোদন পাওয়া ব্রোকারেজ হাউসগুলোর বিষয়ে ডিএসই আইসিটি বিভাগের সহকারী ব্যবস্থাপনা পরিচালক রুহুল আমিন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘নতুন যে কয়টি ট্রেক বা ব্রোকারেজ হাউসের অনুমোদন দেয়া হয়েছে, তাদের বেশির ভাগই এখনও লেনদেন পরিচালনা করার অবস্থায় যায়নি।
‘প্রতিষ্ঠানগুলোর অবকাঠামো প্রস্তুত হওয়ার পর ডিএসইকে অবহিত করতে হবে। এরই মধ্যে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান তাদের লেনদেন উপযোগী করেছে বলে জানিয়েছে। ডিএসইর পক্ষ থেকে সেগুলো পরিদর্শন করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘পরিদর্শনের পর যদি মনে হয়, ব্রোকারেজ হাউস পুঁজিবাজারে লেনদেন পরিচালনা করতে সক্ষম, তখন তাকে প্রয়োজনীয় লিংক ও পাসওয়ার্ড দেয়া হবে।’
মোনার্ক হোল্ডিংয়ের পরিশোধিত মূলধন ১০ কোটি টাকা। বিও হিসাব খোলার মাধ্যমে পুঁজিবাজারে শেয়ার ক্রয়-বিক্রির ব্রোকারেজ হাউসের ব্যবসায় সরাসরি সম্পৃক্ত হবেন সাকিব আল হাসান।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে নতুন ৫২টি ব্রোকারেজ হাউস বা ট্রেককে (ট্রেডিং রাইট এনটাইটেলমেন্ট সার্টিফিকেট) লাইসেন্স দেয় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)।
নিয়ম অনুযায়ী ট্রেক লাইসেন্স পাওয়ার এক বছরের মধ্যে চূড়ান্ত লেনদেনে আসার কথা।
অনুমোদন পাওয়া ব্রোকারেজ হাউসগুলো যাতে দ্রুত লেনদেনে আসে, সে জন্য ডিএসইকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করতে গত অক্টোবরে চিঠি দেয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি।
যেখানে নতুন ব্রোকারেজ হাউসগুলোতে অর্ডার ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (ওএমএস) স্থাপনে প্রযুক্তিগত সহায়তাসহ সিকিউরিটিজ ও এক্সচেঞ্জ কমিশন (স্টক-ডিলার/স্টক-ব্রোকার/অনুমানকৃত) নিয়মমালা, ২০০০ অনুযায়ী নিবন্ধন সার্টিফিকেট গ্রহণ প্রক্রিয়ায় সহায়তা করতে বলা হয়।
মোনার্ক হোল্ডিংয়ের রাইসুল হাসান বলেন, ‘এর সব কিছুই নিশ্চিত করা হয়েছে।’
অনুমোদন পাওয়া ব্রোকারেজ হাউসগুলোর কার্যক্রম শুরু করতে দেরির প্রসঙ্গে রুহুল আমিন বলেন, ‘নতুন ৫২টি ব্রোকারেজ হাউসের মধ্যে ১০ থেকে ১২টি প্রতিষ্ঠান স্টক-ডিলার ও স্টক-ব্রোকারের লাইসেন্সের জন্য অবেদন করেছে। এই প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিজস্ব অর্ডার ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম চালু করতে হবে। একই সঙ্গে ব্যাক অফিস সিস্টেমও চালু করতে হবে। বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠান এখনও এগুলো শেষ করতে পারেনি।’
নতুন ব্রোকারেজ হাউসগুলোর আইটি সিস্টেম ডেভেলপ বড় সমস্যা হিসেবে দেখছেন রুহুল আমিন।
নতুন করে ট্রেক বা ব্রোকারেজ হাউসের সার্টিফিকেট পেতে ৬৬টি প্রতিষ্ঠান আবেদন করে। এখান থেকে ডিএসই ১৫টি প্রতিষ্ঠানের আবেদন বাতিল করে ৫১টি প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন দিতে বিএসইসির কাছে পাঠায়। পরে আরও ৪টি প্রতিষ্ঠান যুক্ত করে ১৮ মে ৩০টি, ২১ জুন ২৬টি ও ২৬ আগস্ট ৯টি ব্রোকারেজ হাউসকে অনুমোদন দেয়া হয়।
গত ৪ সেপ্টেম্বর ডিএসইর নিকুঞ্জে আনুষ্ঠানিক নতুন স্টেকহোল্ডারদের লাইসেন্স বিতরণ করেন বিএসইসি চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত উল ইসলাম।