বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাবে উদ্বিগ্ন ব্যবসায়ীরা

  •    
  • ১৯ জানুয়ারি, ২০২২ ২১:১১

দাম বাড়ানোর উদ্যোগের বিরোধিতা করেছেন দেশের শিল্পোদ্যোক্তারা। তারা বলেছেন, ‘এ মুহূর্তে গ্যাসের দাম বাড়ানো ঠিক হবে না। গ্যাসের দাম বাড়ালে উৎপাদন খরচ বাড়বে, যা শিল্পের প্রতিযোগিতার সক্ষমতা কমিয়ে দেবে। ব্যাহত হবে শিল্পোৎপাদন।’

গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাবে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে পাওয়ার, এনার্জি, ইউটিলিটিস বিষয়ক এফবিসিসিআইয়ের স্ট্যান্ডিং কমিটি।

মতিঝিলে ফেডারেশন অফ বাংলাদেশ চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) কার্যালয়ে বুধবার অনুষ্ঠিত বৈঠকে উদ্বেগ প্রকাশ করেন কমিটির সদস্যরা।

দাম বাড়ানোর উদ্যোগের বিরোধিতা করেছেন দেশের শিল্পোদ্যোক্তারা। তারা বলেছেন, ‘এ মুহূর্তে গ্যাসের দাম বাড়ানো ঠিক হবে না। গ্যাসের দাম বাড়ালে উৎপাদন খরচ বাড়বে, যা শিল্পের প্রতিযোগিতার সক্ষমতা কমিয়ে দেবে। ব্যাহত হবে শিল্পোৎপাদন।’

বৈঠকে এফবিসিসিআইয়ের সিনিয়র সহসভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু বলেন, ‘অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে চীন ও ভারত আরও ২০ বছর কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু রাখবে। বাংলাদেশেও শিল্পের বিকাশের স্বার্থে দেশে মজুত থাকা কয়লার সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করার উদ্যোগ নেয়া উচিত সরকারের।’

গ্যাস অনুসন্ধানের কাজ ব্যাপকভাবে শুরু করার ওপর গুরুত্ব দেন মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু।

তিনি বলেন, ‘বাপেক্স একা না পারলে বেসরকারি খাতের সঙ্গে যৌথ অংশীদারিত্বে অনুসন্ধান কূপ খননে গতি আনা উচিত।’

স্ট্যান্ডিং কমিটির ডিরেক্টর-ইন-চার্জ ও এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক আবুল কাশেম খান বলেন, ‘দেশে জ্বালানি খাতে আমদানি নির্ভরতা বাড়ছে, যা ভবিষ্যতের জন্য নিরাপদ নয়। দীর্ঘমেয়াদি জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ও শিল্পায়ন অব্যাহত রাখতে দেশীয় সম্পদকে কাজে লাগানো জরুরি।‘

কয়লা উত্তোলন করে বিদ্যুৎ উৎপাদনের পক্ষে মত দেন আবুল কাশেম খান।

এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক মো. নাসের বলেন, ‘বিতরণ ব্যবস্থায় চরম অব্যবস্থাপনার কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সুফল বঞ্চিত হচ্ছেন দেশের ব্যবসায়ীরা।’

এ খাতে শৃঙ্খলা আনতে বিতরণ কোম্পানিগুলোর ব্যবস্থাপনার ভার বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেয়ার পরামর্শ দেন স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য সাংবাদিক মোল্লা এম আমজাদ হোসেন। তিনি বলেন, ‘তেল ও গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য সরকারের অন্তত আরও ১০০টি কূপ খনন করা উচিত।’

এ ছাড়া অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলো পুরোপুরি প্রস্তুত না হওয়া পর্যন্ত বাইরের শিল্প-কারখানাগুলোকে গ্যাস-বিদ্যুতের সংযোগ অব্যাহত রাখার পক্ষে মত দেন তিনি।

সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়াতে ওয়ান স্টপ সলিউশন, চরের অনাবাদি জমিতে সোলার প্যালেন স্থাপন, সরকারিভাবে গবেষণা ও উন্নয়নকাজের উদ্যোগ, বর্জ্য ও চালের কুড়া থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্প হাতে নেয়ার দাবি জানান কমিটির সদস্যরা।

বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান ও এনার্জিপ্যাক পাওয়ার জেনারেশন লিমিটেডের এমডি ও সিইও হুমায়ুন রশিদ।

তিনি বলেন, ‘বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে দেশীয় ও বিদেশি উৎসের মধ্যে সমন্বয় নিশ্চিত করা না গেলে দেশের জ্বালানি খাতের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে।’

বৈঠকে অন্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন কমিটির কো-চেয়ারম্যান সালাউদ্দীন ইউসুফ, মোহাম্মদ আলী দ্বীন, নাজমুল হক ও এফবিসিসিআইয়ের মহাসচিব মোহাম্মদ মাহফুজল হক।

ভর্তুকি সামাল দিতে সরকার গ্যাসের দাম বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে নির্দেশ দেওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে গত সপ্তাহে কয়েকটি বিতরণ সংস্থা গ্যাসের দাম ১১৭ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব দেয়। তবে তাদের এ প্রস্তাব আপাতত গ্রহণ করেনি বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন-বিইআরসি।

গত সপ্তাহে তিতাস, বাখরাবাদ ও পশ্চিমাঞ্চল গ্যাস কোম্পানি আবাসিকের ক্ষেত্রে দুই চুলায় ৯৭৫ থেকে বাড়িয়ে ২ হাজার ১০০ টাকা, মিটার আছে এমন চুলায় প্রতি ঘনমিটার ১২ টাকা ৬০ পয়সা থেকে ২৭ টাকা ৩৭ পয়সা করতে চেয়েছিল।

এ ছাড়া বিদ্যুৎ ও সার উৎপাদনে ব্যবহৃত গ্যাসের দাম ঘনমিটারপ্রতি ৪ টাকা ৪৫ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৯ টাকা ৬৬ পয়সা, শিল্প খাতে ১০ টাকা ৭০ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ২৩ টাকা ২৪ পয়সা, ক্যাপটিভে (শিল্প-কারখানায় নিজস্ব বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহৃত গ্যাস) ১৩ টাকা ৮৫ পয়সার স্থলে ৩০ টাকা, যানবাহনে ব্যবহার করা গ্যাসের দাম ৩৫ টাকা থেকে ৭৬ টাকা ৪৮ পয়সা করার প্রস্তাব দেয়া হয়।

বিইআরসি মনে করছে, গ্যাসের দাম বাড়ানোর এই প্রস্তাব বিধিসম্মত হয়নি। তাই সেগুলো আপাতত গ্রহণ করা হয়নি।

এ বিভাগের আরো খবর