নির্বাচন কমিশন (ইসি) আইন প্রণয়নের উদ্যোগকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে বিএনপি অপপ্রচার ও মিথ্যাচার করছে বলে অভিযোগ করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
তার দাবি, আইনটি নিয়ে বিএনপি নেতাদের স্পষ্ট ধারণা না থাকার জন্যই তারা অন্ধকারে ঢিল ছুড়ছেন।
বুধবার দলের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে তিনি এমন অভিযোগ করেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমরা সব রাজনৈতিক দলের নেতাদের গণতান্ত্রিক রাজনীতি ও সাংবিধানিক প্রক্রিয়ার প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।
‘দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে সুদৃঢ় করার লক্ষ্যে ইসি আইন নিয়ে যে খসড়া অনুমোদিত হয়েছে, সে সম্পর্কে গঠনমূলক আলোচনা ও দায়িত্বশীল আচরণের আহ্বান জানাচ্ছি।’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিএনপি নেতারাসহ একটি চিহ্নিত মহল ইসি আইন প্রণয়নের উদ্যোগকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করতে অপপ্রচার করছে। দেশের বিশিষ্টজন ও নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলো সংবিধানের নির্দেশনা মেনে নতুন আইন প্রণয়নের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে। সেখানে বিএনপি ও তাদের দোসর দেশবিরোধী অপশক্তি দূরভিসন্ধিমূলক বক্তব্য দিয়ে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টির পাঁয়তারা চালাচ্ছে।’
কাদের বলেন, ‘সংসদীয় রীতি অনুযায়ী খসড়া আইনটি সংসদে উত্থাপনের পর আইন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে। সেখান থেকে সুপারিশ আকারে সংসদের বৈঠকে উঠবে।
‘সংসদীয় বিধান অনুযায়ী সংসদে আলোচনার মধ্য দিয়ে আইনটি চূড়ান্ত হবে। জাতীয় সংসদে প্রধান বিরোধী দল ও বিএনপিদলীয় সংসদ সদস্যরা তাদের মতামত ও প্রস্তাব উপস্থাপনের সুযোগ পাবেন। অথচ গণতান্ত্রিক শিষ্টাচার না মেনে আগে থেকেই বিএনপি নেতারা এই আইন নিয়ে বিভ্রান্তিকর মন্তব্য করতে শুরু করেছেন।’
বিএনপির রাজনৈতিক অবস্থান সব সময়ই গণতান্ত্রিক রীতিনীতি ও সাংবিধানিক প্রক্রিয়াবিরোধী বলে দাবি করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক। বলেন, ‘যেকোনো উপায়ে ক্ষমতা দখল ও গোষ্ঠীস্বার্থ উদ্ধারই হলো বিএনপির রাজনৈতিক গতিপথ। তাই বিএনপি নেতারা ইসি-সংক্রান্ত আইন প্রণয়নের উদ্যোগকে স্বাগত না জানিয়ে এটি নিয়ে অপরাজনীতি শুরু করেছেন।’
ওবায়দুল কাদের অভিযোগ করেন, ‘আইনটি নিয়ে বিএনপি নেতাদের স্পষ্ট ধারণা না থাকার জন্যই তারা অন্ধকারে ঢিল ছুড়ছেন। কারণ তাদের জন্মই সাংবিধানিক ও প্রচলিত আইন লঙ্ঘন করে চোরাগুপ্তা পথে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের মধ্য দিয়ে।’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘এই আইন প্রণয়ন নিয়ে কোনো ধরনের লুকোচুরি করা হয়নি। রাষ্ট্রপতির উদ্যোগে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে অনুষ্ঠিত সংলাপে এ বিষয়ে অনেক আলোচনা হয়েছে। কিন্তু গণতান্ত্রিক রীতি ও প্রক্রিয়াকে ভয় পায় বলেই বিএনপি সংলাপে অংশ নেয়নি।’
তিনি আরও বলেন, ‘একটি নিরপেক্ষ, স্বাধীন ও শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন গঠনে সব নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল দীর্ঘদিন ধরে ইসি আইনের দাবি জানিয়ে আসছে। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের সময় ২০১২ ও ২০১৭ সালে রাষ্ট্রপতি রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে সার্চ কমিটির মধ্য দিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠন করেন। ওই দুই মেয়াদে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে অনুষ্ঠিত সংলাপে অংশ নেয়া সব রাজনৈতিক দল ইসি আইন প্রণয়নের দাবি জানায়। বিএনপিও তখন একই দাবি জানিয়েছিল।
‘নির্বাচন কমিশন গঠনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর সদ্য সমাপ্ত হওয়া সংলাপে আইন প্রণয়নের দাবি উঠেছে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগও সংলাপে অংশ নিয়ে এই আইন প্রণয়নের প্রস্তাব দিয়েছে।’