বিএনপি যুক্তরাষ্ট্রে লবিস্ট নিয়োগ করে দেশের বিরুদ্ধে কাজ করছে বলে সরকারের পক্ষ থেকে যে বক্তব্য দেয়া হয়েছে, সেটিকে ভিত্তিহীন বলেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাতীয় সংসদে বক্তব্য দেয়ার পর বিএনপি টাকা পাঠাতে বৈধ চ্যানেল ব্যবহার করেছে কি না- বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বাংলাদেশ ব্যাংককে চিঠি দেয়ার পরদিন দলটির পক্ষ থেকে এই বক্তব্য এলো।
বুধবার খন্দকার মোশাররফ হোসেন দলের অন্য জ্যেষ্ঠ নেতাদের নিয়ে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা জানান। এরপর গণমাধ্যমকে এসব কথা বলেন তিনি।
বিএনপি নেতা বলেন, ‘আমরা বলতে চাই- এই যে অভিযোগ (বিএনপির লবিস্ট নিয়োগ), এটা ভিত্তিহীন ও বানোয়াট। যখন আমেরিকা থেকে দেশের একটি সংস্থা এবং এর উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা এসেছে, যখন বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক সামিটে দাওয়াত পায় না, তখন কিন্তু আজকে এই কথাগুলো উঠছে। আমাদের প্রশ্ন আগে কেন এগুলো ওঠেনি?’
জাতীয় সংসদে বক্তব্য রাখার পর মঙ্গলবারও একটি অনুষ্ঠানে বিএনপির লবিস্ট নিয়োগসংক্রান্ত বিষয়ে কথা বলেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাতে যুক্তরাষ্ট্রে তিনটি লবিস্ট কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করেছে বিএনপি। এ বিষয়ে তিনটি ডকুমেন্ট পাওয়া গেছে। যার মূল ঠিকানায় বিএনপির পুরানা পল্টনের অফিসের নাম দেয়া হয়েছে।’
‘বিএনপির হয়ে যিনি চুক্তি করেছেন, তার নাম আব্দুস সাত্তার এবং একটি লবিস্ট কোম্পানির নাম ব্লু স্টার স্ট্র্যাটেজিক এলএমসি। ২০১৮ সালে করা এ চুক্তিতে ১ মিলিয়ন ডলার খরচ করেছে। সব মিলিয়ে দলটি তিনটি চুক্তিতে ৩ দশমিক ৭ মিলিয়ন ডলার খরচ করেছে।’
বিএনপি নেতা মোশাররফ বলেন, ‘নিজেদের অপকর্ম ঢাকতে আওয়ামী লীগ সরকারই ৪ বছর ধরে লবিস্ট নিয়োগ করেছে।’
তিনি বলেন, ‘আমি কিছুদিন আগে পত্রপত্রিকায় দেখেছি যে, আওয়ামী লীগ সরকার এ দেশের যে গণতন্ত্র হত্যা করছে, মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে, চুরি-ডাকাতি করে এ দেশের অর্থনীতি লুণ্ঠন করছে- এগুলো যাতে ধামাচাপা দেয়া যায় সে জন্য তারা বিদেশে লবিস্ট নিয়োগ করেছে ১৪ বছর ধরে। এটা যখন পত্রপত্রিকায় বেরিয়েছে, আজকে এই সরকার এ ধরনের একটি মিথ্যা-বানোয়াট কতগুলো ডকুমেন্ট দিয়ে তার শুধু জবাব দেয়ার জন্য বা জনগণকে বিভ্রান্ত করার জন্য এ ধরনের কথা বলছে। এগুলো সম্পূর্ণ বানোয়াট।'
এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে শিগগিরই সংবাদ ব্রিফিং করা হবে বলেও জানান বিএনপি নেতা।
বিএনপি নেতা মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও নজরুল ইসলাম খান, রুহুল কবির রিজভী, আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, খায়রুল কবির খোকন, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, নাজিম উদ্দিন আলম, ফরহাদ হালিম ডোনার, যুবদল নেতা সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, মোরতাজুল করীম বাদরু, এস এম জাহাঙ্গীর, মহিলা দলের আফরোজা আব্বাস, সুলতানা আহমেদও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।