প্রায় চার বছর আগে ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের মীরেরবাগ বালুচর ওরিয়েন্টাল স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র সোহাগকে অপহরণের পর খুনের মামলায় ইয়াসিন মাহমুদ শাহীন নামে এক যুবককে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত।
ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ইসমত জাহান বুধবার এ রায় ঘোষণা করেন।
মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি শাহীনকে ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেয়া হয়েছে।
রায় ঘোষণার সময় শাহীন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায় দেয়ার পর সাজা পরোয়ানা দিয়ে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
বাদীপক্ষের আইনজীবী ফরিদ উদ্দিন আহমেদ নিউজবাংলাকে এসব তথ্য জানান।
রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছে সোহাগের পরিবার। শিশুটির বাবা ইদ্রীস খান বলেন, ‘রায়ে আমরা সন্তুষ্ট। আশা করব উচ্চ আদালতে এ রায় বহাল থাকবে। আসামির দ্রুত ফাঁসি কার্যকর করা হবে।’
মামলা থেকে জানা গেছে, ২০১৮ সালের ৩০ এপ্রিল সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সোহাগ স্কুল থেকে এসে তার মা সুফি বেগমের মোবাইল নিয়ে গেমস খেলতে খেলতে বাসার বাইরে যায়। এ সময় শাহীন ভুক্তভোগী সোহাগকে অপরহরণ করে। পরে সোহাগের পরিবারের কাছে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন শাহীন। ১ ঘণ্টার মধ্যে টাকা না দিলে সোহাগকে মেরে ফেলারও হুমকি দেন।
সোহাগের পরিবার বিষয়টি র্যাবকে জানায়। র্যাব বিষয়টি থানাকে জানাতে বলে। এই সময়ের মধ্যে আরও দু-তিনবার টাকা চেয়ে ফোন দেন শাহীন। পুলিশ প্রযুক্তির সাহায্যে শাহীনকে মীরেরবাগ বালুর মাঠ থেকে গ্রেপ্তার করে।
তার দেয়া তথ্যে বাসা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে সোহাগের হাত, নাক, মুখ, স্কচটেপ দিয়ে বাঁধা সোহাগকে উদ্ধার করে পুলিশ। মিটফোর্ড হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
ওই ঘটনায় সেদিনই দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় অপহরণের পর হত্যার অভিযোগে মামলা করেন সোহাগের বাবা।
তদন্ত শেষে শাহিন ও তার বন্ধু সাজ্জাদ আহমেদ নিশাদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। পরে সাজ্জাদকে অব্যাহতি দিয়ে শাহিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু হয় আদালতে। মামলাটির বিচার চলাকালে অভিযোগপত্রের অন্তর্ভুক্ত ২৯ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৭ জনের সাক্ষ্য নেয় আদালত।