ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ তাদের ‘অনুগত’ ও ‘অপদার্থ নির্বাচন কমিশন’ গঠনের চলমান প্রক্রিয়াকে দলীয় স্বার্থে আইনে রূপ দিতেই রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপ করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।
তিনি বিষয়টিকে আওয়ামী লীগের ‘সরকারি অপপ্রয়াস’ জানিয়ে বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন গঠনের সংলাপ যেই লাউ, সেই কদু। এবার সম্ভবত হতে যাচ্ছে পচা কদু।’
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয়ে মঙ্গলবার দুপুরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বিনা ভোটে অনির্বাচিত একটি অবৈধ সরকারের কাছ থেকে জনগণ এর চেয়ে বেশি কিছু প্রত্যাশা করে না। বিএনপি মনে করে, একটি নিরপেক্ষ, স্বাধীন, যোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠনের নৈতিক যোগ্যতা ও সামর্থ্য শুধু একটি নির্বাচিত সরকারের আছে।’
আওয়ামী লীগ সরকার জনগণের নির্বাচিত সরকার নয় দাবি করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘দলীয় অনুগত লোকদের দ্বারা নির্বাচন কমিশন গঠনে সরকার আইন করছে। তারা তো নির্বাচিত সরকারই নয়।’
রাষ্ট্রপতির সংলাপকে অর্থহীন দাবি করে তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রপতির সঙ্গে যারা সংলাপে অংশ নিয়ে প্রস্তাব দিয়েছেন, তাদের যেমন ক্ষমতা নেই, সেই অর্থে রাষ্ট্রপতিরও ক্ষমতা নেই। সংলাপে কোনো কিছু অর্জিত হয়নি। কাজেই সংলাপের জায়গায় সংলাপ, সিদ্ধান্তের জায়গায় সিদ্ধান্ত।’
নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠনে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ দেশের রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে একটি সংলাপ আহ্বান করেন।
এরই মধ্যে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলসহ বেশ কয়েকটি দলের প্রতিনিধিরা রাষ্ট্রপতির সংলাপে অংশ নিয়ে বিভিন্ন ধরনের প্রস্তাব দিয়েছেন।
বিএনপি নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের দাবি জানালেও তারা সংলাপে অংশ নেয়নি।
সংবাদ সম্মেলনে সংবাদমাধ্যমের কর্মীরা গত রোববার নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়েও প্রশ্ন করেন বিএনপি নেতাকে।
স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়ে নারায়ণগঞ্জে হেরে যান বিএনপি থেকে অব্যাহতি পাওয়া তৈমূর আলম খন্দকার।
তাকে আবার দলে ফিরিয়ে নেয়া হবে কি না প্রশ্নে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘এ ব্যাপারে বিএনপিতে এখনো কোনো চিন্তাভাবনা হয়নি।’
নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনকে কীভাবে মূল্যায়ন করছে বিএনপি- এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন একটি দরকারি জিনিস। কিন্তু নির্বাচনের নামে যদি নির্বাচনি প্রহসন চলে তাহলে সমালোচনা থাকবেই।’
নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভীর কাছে ৬৭ হাজার ভোটে হেরে যান বিএনপি নেতা তৈমূর আলম। ফল ঘোষণার পর কিছু অভিযোগ তুললেও পরে নির্বাচনের ফল মেনে নেন তৈমূর আলম।
সোমবার তিনি মেয়র আইভীকে কাজে সহায়তা করার কথাও জানান সংবাদমাধ্যমকে।