স্বাধীনতাবিরোধী, রাজকার, আল বদর, আল শামসদের তালিকা তৈরির বিধান রেখে তৈরি জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল আইন ২০২২ এর খসড়ায় চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
জাতীয় সংসদ ভবনে সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভা বৈঠক এ অনুমোদন দেয়। সভা শেষে সচিবালয়ে সাংবাদিকেদের ব্রিফ করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।
ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘এই কাউন্সিলের মূল কার্যালয় থাকবে ঢাকায়। কাউন্সিলের চেয়ারম্যান হবেন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী। প্রতিমন্ত্রী বা উপমন্ত্রী হবেন সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান আর সচিব হবেন ভাইস চেয়ারম্যান।
‘কাউন্সিলের সদস্য সংখ্যা ছিলেন ৯ জন, এখন হবে ১১ জন। আর মহাপরিচালক যিনি থাকবেন এই কাউন্সিলের তিনি সদস্য সচিব হিসেবে কাজ করবেন। তাদের কাজ হবে অসত্য তথ্যের ভিত্তিতে গেজেটভুক্ত ও সনদপ্রাপ্ত অমুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা।’
তিনি বলেন, ‘১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত মহান মুক্তিযুদ্ধে সময় যারা রাজাকার, আল বদর, আল শামস বাহিনীর সদস্য হিসেবে কর্মকাণ্ডে লিপ্ত ছিলেন বা আধা সামরিক বাহিনীর সদস্য হিসেবে সশস্ত্র যুদ্ধে নিয়োজিত থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছেন, যারা ধর্ষণ, লুট, অগ্নিসংযাগসহ অন্যান্য অপরাধমূলক ঘৃণ্য কার্যক্রম দিয়ে মানুষ হত্যা বা অত্যাচার করেছেন তাদের তালিকা বা পরোক্ষভাবে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছেন তাদের তালিকা প্রণয়ন ও গেজেট প্রকাশের জন্য সরকারের কাছে সুপারিশ করার ক্ষমতা ও দায়িত্ব সংধোশিত আইনে মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলকে দেওয়া হয়েছে।
‘এই কাউন্সিলের উপদেষ্টা পরিষদের প্রধান উপদেষ্টা কর্তৃক মনোনীত পাঁচজন সদস্য মনোনয়নের ক্ষেত্রে মুক্তিযুদ্ধের ফোর্স কমান্ডার, সাব সেক্টর কমান্ডার অথবা কমান্ডারদের বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা, এই বিষয়ক কর্মকাণ্ড সংশ্লিষ্ট কোনো বিশিষ্ট ব্যক্তি বা মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদের রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে।’
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘সংগঠন নিবন্ধনের ক্ষেত্রে কাউন্সিলের পরিবর্তে নিবন্ধক এবং তত্ত্বাবধায়কের পরিবর্তে প্রশাসক প্রতিস্থাপনের প্রস্তাব, আগে ওখানে ছিল কাউন্সিল এটা রেজিষ্ট্রেশন করবে, কিন্তু এখন এটা আলাদা রেজিষ্ট্রার করে দেওয়া হলো। তারাই এ সংক্রান্ত যেসব প্রতিষ্ঠান তাদের কাছে স্বীকৃতি চাইবে, তাদের রেজিস্ট্রেশন করে দেবে।
‘নতুন আইনে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বা রাষ্ট্ররোধী কোনো কার্যক্রমে লিপ্ত হলে সে সংগঠন নিবন্ধন পাবে না। কাউন্সিলের একটা তহবিল থাকবে সেটায় সরকার ফান্ড দেবে পাশপাশি তারা সাহায্য বা অন্যভাবেও ফান্ড তৈরি করতে পারবে।’