ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী অরিত্রী অধিকারীর আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেয়ার অভিযোগের মামলায় প্রতিষ্ঠানটির দুই শিক্ষিকা সাক্ষ্য দিয়েছেন।
ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ রবিউল আলমের আদালতে সোমবার ভিকারুননিসার সিনিয়র শিক্ষিকা লুৎফুন নাহার করিম এবং প্রভাতী শাখার খণ্ডকালীন শিক্ষিকা আফসানা আমাতু রাব্বী সাক্ষ্য দেন।
বিচারক আগামী ৩০ জানুয়ারি পরের সাক্ষ্য নেয়ার তারিখ ঠিক করেন।
এ নিয়ে মামলাটির রাষ্ট্রপক্ষের ১৮ সাক্ষীর মধ্যে আটজনের সাক্ষ্য নেয়া হলো।
এদিন মামলার দুই আসামি নাজনীন ফেরদৌস ও জিনাত আক্তার আদালতে হাজির ছিলেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সাবিনা আক্তার দিপা বিষয়টি নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেন।
২০১৯ সালের ১০ জুলাই ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ রবিউল আলম প্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নাজনীন ফেরদৌস ও শাখাপ্রধান জিনাত আক্তারের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন।
একই সালের ২০ মার্চ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পরিদর্শক কাজী কামরুল ইসলাম ওই দুই আসামির বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দেন। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় শ্রেণি শিক্ষিকা হাসনা হেনাকে অব্যাহতি দেয়ার আবেদনও করেন তিনি।
২০১৮ সালে ৩ ডিসেম্বর রাজধানীর শান্তিনগরে নিজ বাসায় ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস দেয় অরিত্রী।
মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শুরু করে।
ঘটনার পরদিন রাজধানীর পল্টন থানায় ভিকারুননিসার অধ্যক্ষ নাজনীন ফেরদৌস, প্রভাতি শাখার প্রধান জিনাত আক্তার ও শ্রেণি-শিক্ষিকা হাসনা হেনার বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে অরিত্রীর বাবা দিলীপ অধিকারী মামলা করেন।
এজাহারে অরিত্রীর আত্মহত্যার কারণ সম্পর্কে বলা হয়, অরিত্রীর স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষা চলছিল। ২০১৮ সালের ২ ডিসেম্বর সমাজবিজ্ঞান পরীক্ষা চলার সময় তার কাছে একটি মোবাইল ফোন পাওয়া যায়। এ জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষ আমাদের (বাবা-মা) ডেকে পাঠায়। ৩ ডিসেম্বর স্কুলে গেলে স্কুল কর্তৃপক্ষ আমাদের জানায়, অরিত্রী মোবাইল ফোনে নকল করছিল, তাই তাকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
এজাহারে অরিত্রীর বাবা আরও উল্লেখ করেন, স্কুল কর্তৃপক্ষ মেয়ের সামনে আমাকে (বাবা) অনেক অপমান করেন । এ অপমান এবং পরীক্ষা দিতে না পারার মানসিক আঘাত সইতে না পেরে সে (অরিত্রী) আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়।
অরিত্রীর আত্মহত্যার ঘটনায় শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও স্কুল কর্তৃপক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করে। তদন্ত কমিটি প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়ায় স্কুলের অধ্যক্ষসহ তিন শিক্ষককে বরখাস্ত করা হয়।