করোনা মহামারিতে ২০২১ সালে ভারতের ধনী পরিবারগুলোর সম্পদের পরিমাণ রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে। একই সময়ে ৮৪ শতাংশ ভারতীয় পরিবারের আয় কমে গেছে। অলাভজনক বেসরকারি সংস্থা অক্সফাম ইন্ডিয়ার ‘ইনইকুয়ালিটি কিলস’ শিরোনামের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ভারতের সবচেয়ে ধনী ৯৮ জনের সম্পদ দেশটিতে নিচের অংশে থাকা ৫৫ কোটি ২০ লাখ মানুষের সম্পদের সমান।
অক্সফাম ইন্টারন্যাশনাল থেকে সোমবার প্রকাশিত এক নতুন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করোনা মহামারি চলাকালে প্রতিদিন কমপক্ষে ২১ হাজার ৩০০ মানুষের মৃত্যুর সময় বিশ্বের ১০ ধনী ব্যক্তির সম্পদ দ্বিগুণ হয়েছে। আর তাতে সমাজে বৈষম্য তীব্র হয়েছে।
ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের দাভোস সম্মেলনের আগে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, ভারতীয় ধনকুবেরের সংখ্যা ২০২১ সালে ১০২ থেকে বেড়ে হয়েছে ১৪২৷ এই বৈষম্য কমাতে তহবিল ব্যবস্থায় সহায়তা করার জন্য ভারতীয় জনসংখ্যার সবচেয়ে ধনী ১০ শতাংশের ওপর উচ্চ হারে কর আরোপের পরামর্শ দেয়া হয়েছে প্রতিবেদনে। প্রতিবেদন অনুসারে- সংগৃহীত অর্থ শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা ও সামাজিক সুরক্ষার স্কিমগুলো কভার করতে পারে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শীর্ষ ১০০ পরিবারের সম্পদ এখন ৫৭ দশমিক ৩ ট্রিলিয়ন রুপি।
অক্সফাম ইন্ডিয়ার চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার অমিতাভ বেহার রিপোর্টের সঙ্গে প্রকাশ করা এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, অসমতার একটি উল্লেখযোগ্য নেতিবাচক প্রভাব রয়েছে, যার মধ্যে লিঙ্গ সমতা রয়েছে, যা ধনীদের ওপর কর বৃদ্ধির মাধ্যমে সমাধানে সাহায্য করতে পারে।
বেহার বলেছেন, ‘মহামারি লিঙ্গ সমতাকে ৯৯ বছর থেকে ১৩৫ বছরে ফিরিয়ে দিয়েছে। নারীরা ২০২০ সালে সমষ্টিগতভাবে ৫৯ লাখ ১১ হাজার কোটি রুপি উপার্জন হারিয়েছে। ২০১৯ সালের তুলনায় এখন কর্মক্ষেত্রে এক কোটি ৩০ লাখ নারী কম। করের মাধ্যমে কুক্ষিগত সম্পদকে লক্ষ করে এই বৈষম্যের ভুলগুলো সংশোধন করা এবং জীবন বাঁচাতে সেই অর্থকে প্রকৃত অর্থনীতিতে ফিরিয়ে আনা বর্তমান সময়ে সর্বোচ্চ গুরুত্বপূর্ণ।’
‘বৈষম্য এবং দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে ভারতের লড়াইকে অবশ্যই সেই ধনকুবেরদের সমর্থন করা উচিত যারা মহামারি চলাকালে দেশে রেকর্ড মুনাফা করেছে।’