ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সাবেক অধ্যাপক ড. তাজমেরি এস ইসলামকে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে মুক্তি না দিলে কর্মবিরতিতে যাওয়ার হুমকি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনপি-জামায়াতপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল।
সোমবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে অধ্যাপক ড. তাজমেরি এস ইসলামকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদ ও নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে এক মানববন্ধন থেকে এ হুমকি দেন সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এস এম আমানউল্লাহ।
এ সময় অধ্যাপক তাজমেরি ইসলামের গ্রেপ্তারের ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির নীরব ভূমিকায় ক্ষোভ জানানো হয়।
অধ্যাপক আমানউল্লাহ বলেন, ‘অধ্যাপক তাজমেরি ইসলামকে গ্রেপ্তার করে আপনারা ভুল জায়গায় হাত দিয়েছেন। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে তাকে জামিন না দিলে আমরা সাদা দল কঠোর কর্মসূচির দিকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারি। প্রয়োজনে কর্মবিরতিতেও যেতে পারি। স্পষ্ট ভাষায় আপনাদের জানিয়ে রাখলাম।’
তিনি বলেন, ‘তাজমেরি ইসলামের প্রতি জামিন সন্ত্রাস করা হয়েছে, আইনি সন্ত্রাস করা হয়েছে। তাকে জামিন না দেওয়ার কোনো কারণ নেই। ওনার দ্রুত জামিনের ব্যবস্থা করুন।’
শিক্ষক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মামুন আহমেদ বলেন, ‘দেশের সব অনৈতিক কাজের বিরুদ্ধে সব সময় প্রতিবাদ জানিয়ে আসছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। অথচ শুধু জাতীয়তাবাদী বিশ্বাসী হওয়ায় তাজমেরি ইসলামের মতো একজন সুনামধন্য শিক্ষকের গ্রেপ্তারে তারা টুঁ শব্দ পর্যন্ত করেনি।
‘আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং হুঁশিয়ার করে দিচ্ছি আপনারা প্রতিবাদ না জানালে এদিন আপনাদের কাছেও ফিরে আসবে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও শিক্ষক সমিতির প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, এই প্রতিবাদে শামিল হতে।’
সাদা দলের সাবেক আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম বলেন, ‘দেশের গুণী মানুষদের কারান্তরীণ রাখার অর্থ হচ্ছে- গণতন্ত্রকে চিরদিনের জন্য নির্বাসিত করা। জোর করে ক্ষমতা ধরে রাখতে গিয়ে সরকার বিকারগ্রস্ত হয়ে পড়েছে।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদী আদর্শে বিশ্বাস করার কারণেই বানোয়াট ও ভিত্তিহীন মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে সেদিন বেশি দূরে নয়, যেদিন এই সরকারকে জবাবদিহি করতে হবে।’
সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, ‘অধ্যাপক তাজমেরি ইসলামকে গ্রেপ্তারের পর আমি শিক্ষক সমিতিকে জানিয়েছি যাতে এটির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানো হয়। কিন্তু আমি কোনো ধরনের সাড়া পাইনি। শিক্ষক সমিতির করণীয় ছিল অন্তত একটা বিবৃতি দেওয়া। সমিতির একজন কার্যনির্বাহী সদস্য হিসেবে আমি দুঃখ প্রকাশ করছি। একই সঙ্গে আজকের এই মানববন্ধন থেকে অধ্যাপক তাজমেরি ইসলামকে গ্রেপ্তারের তীব্র নিন্দা ও নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করছি।’
অধ্যাপক লুৎফর রহমান মানববন্ধনের সভাপতিত্ব করেন। সঞ্চালনা করেন দলের সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. মো. মহিউদ্দিন।
মানববন্ধনে অন্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন সাদা দলের যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. ছিদ্দিকুর রহমান খান, শিক্ষক সমিতির সাবেক সহসভাপতি অধ্যাপক ড. আখতার হোসেন খান, রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. ইমরান কাইয়ুম, প্রাণরসায়ন ও অণুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. ইয়ারুল কবির, রোকেয়া হলের সাবেক প্রভোস্ট অধ্যাপক লায়লা নুর ইসলাম প্রমুখ।