ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রচারকে কেন্দ্র করে মাদারীপুরের সদরে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষে দুই পুলিশসহ উভয় পক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন।
উপজেলার ঘটমাঝি ইউনিয়নের মন্টারপোল এলাকায় রোববার বিকেল ৫টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত দফায় দফায় এ সংঘর্ষ হয়।
সোমবার বেলা ১১টার দিকে নিউজবাংলাকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুল ইসলাম মিঞা।
তিনি জানান, সংঘর্ষের ঘটনায় সন্ধ্যায় দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীকে আটক করে থানায় নেয়া হয় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য। পরে পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেলের উপস্থিতিতে রাত ১০টার দিকে মুচলেকা দিয়ে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়।
সংঘর্ষের ঘটনায় আহতদের মধ্যে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন মনির দর্জি, মোহাম্মদ ব্যাপারী, হায়দার খান, সরোয়ার শেখ, রুবেল মাতুব্বর, আবু ছালে, মো. ইসমাইল, সোবাহান মোল্লা, আব্দুর রহমান ও পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) এ এইচ এম সালাউদ্দিন ও সদস্য অভিজিৎ দে। অন্যরা প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফিরে গেছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে পুলিশ কর্মকর্তা জানান, আগামী ৩১ জানুয়ারি ঘটমাঝি ইউনিয়নে ষষ্ঠ ধাপের ইউপি নির্বাচনের কথা রয়েছে। ভোটে চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মোটরসাইকেল প্রতীকে নির্বাচন করছেন বর্তমান চেয়ারম্যান বাবুল হাওলাদার। তার প্রতিদ্বন্দ্বী ঘোড়া প্রতীকে লড়ছেন খলিলুর রহমান দর্জি।
দুই চেয়ারম্যান প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা রোববার বিকেলে মন্টারপোল বাজারে প্রচারে নামেন। এ সময় দুই পক্ষের মুখোমুখি প্রচারকে কেন্দ্র করে প্রথমে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়।
পরে উভয় পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় শতাধিক হাতবোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে এলাকায় আতঙ্কের সৃষ্টি হয়।
এ ছাড়া উভয় পক্ষের নির্বাচনি ক্যাম্প, ১০টি মোটরসাইকেল, বেশ কয়েকটি দোকানপাট ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়। খবর পেয়ে সদর মডেল থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় সংঘর্ষে পুলিশের দুই সদস্যসহ আহত হন উভয় পক্ষের অন্তত ১৫ জন। আহতদের উদ্ধার করে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
মাদারীপুর সদর হাসপাতালের চিকিৎসা কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান পাভেল বলেন, ‘সংঘর্ষের ঘটনায় দুই পুলিশসহ ১১ জন হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিয়েছেন। এর মধ্যে সাতজনকে ভর্তি করা হয়েছে। বাকি চারজন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে চলে গেছেন।’
তবে সংঘর্ষের বিষয়ে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থী কথা বলতে রাজি হননি। তারা বিষয়টি এড়িয়ে যেতে নিউজবাংলাকে অনুরোধ করেন।
মাদারীপুর সদর থানার ওসি কামরুল ইসলাম মিঞা বলেন, ‘প্রচারে নেমে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে চারজনকে আটক করা হয়েছে।’
‘এ ছাড়া পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীকে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। পরে লিখিত দেয়ার পর তাদের ছেড়ে দেয়া হয়। আগামীতে কেউ সংঘাতে জড়ালে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
এ ঘটনার পর থেকে ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।