বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সিইসি-ইসি নিয়োগ আইনের খসড়ায় চূড়ান্ত অনুমোদন

  •    
  • ১৭ জানুয়ারি, ২০২২ ১৪:২২

প্রধান নির্বাচন কমিশনার বা কমিশনার হতে হলে বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে। বয়স হতে হবে কমপক্ষে ৫০ বছর। সরকারি, আধা সরকারি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে বা বিচার বিভাগীয় গুরুত্বপূর্ণ পদে কমপক্ষে ২০ বছরের কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও নির্বাচন কমিশনার (ইসি) নিয়োগ আইনের খসড়ায় চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

সচিবালয়ে সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভা বৈঠক শেষে ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য দেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।

তিনি বলেন, ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন ২০২২ এর খসড়া চূড়ান্তভাবে অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এটা আর্টিকেল ১৮(১) এর একটি বিধান আছে, রাষ্ট্রপতি প্রধান নির্বাচন কমিশনার বা নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগ দিতে পারেন। তারই পরিপ্রেক্ষিতে এই আইন নিয়ে আসা হয়েছে। এটা খুব বেশি বড় আইন না। এ ধরনের আইন আমরা আগেও হ্যান্ডেল করে এসেছি। সেই ধারা অনুযায়ীই এটা করা হয়েছে।’

মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, এখানে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশের জন্য অনুসন্ধান কমিটি গঠন করা হবে। এটা অন্যান্য আইনে যেভাবে আছে ঠিক সেভাবেই। অনুসন্ধান কমিটি একটা করা হবে সেটা রাষ্ট্রপতির অনুমতি নিয়ে। সেটার দায়িত্ব ও কার্যাবলী একজন যোগ্য প্রতিনিধির সুপারিশ করা।

কে এম নুরুল হুদার নেতৃত্বাধীন বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ফ্রেব্রুয়ারিতে। সময়ের হিসাবে মাস দুয়েক হাতে থাকলেও নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে সরগরম দেশের রাজনৈতিক অঙ্গন। এর মধ্যেই নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে আইনে চূড়ান্ত অনুমোদনের খবর আসলো।

পরবর্তী নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে সংলাপের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে বঙ্গভবনে ডেকেছেন রাষ্ট্রপতি। এখন পযর্ন্ত সংলাপে অংশ নেয়া অধিকাংশ রাজনৈতিক দলই রাষ্ট্রপ্রধানের কাছে নির্বাচন কমিশন আইন প্রণয়নের দাবি জানিয়েছেন।

স্বাধীনতার ৫০ বছরেও নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে কোনো আইন তৈরি হয়নি দেশে। সংবিধান অনুযায়ী প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের এখতিয়ার রাষ্ট্রপতির হাতে।

তবে ২০১২ সাল থেকে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের নেতৃত্বে চার কমিশনার নিয়োগের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে রাষ্ট্রপতির সংলাপের সংস্কৃতি তৈরি হয়েছে দেশে।

সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমান ২০১২ সালে এবং বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ২০১৭ সালে অধিকাংশ রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ করে সার্চ কমিটির মাধ্যমে নির্বাচন প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও কমিশনারদের নিয়োগ দিয়েছিলেন।

সংবিধানের ১১৮ অনুচ্ছেদে বলা আছে, ‘(১) প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অনধিক চারজন নির্বাচন কমিশনারকে লইয়া বাংলাদেশের একটি নির্বাচন কমিশন থাকিবে এবং উক্ত বিষয়ে প্রণীত কোনো আইনের বিধানাবলী-সাপেক্ষে রাষ্ট্রপতি প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারকে নিয়োগদান করিবেন।’

তবে সংবিধানের আলোকে ওই আইন না হওয়ায় প্রতিবারই নির্বাচন কমিশন গঠনে জটিলতা দেখা দেয়। সেই জটিলতা এড়াতে শেষ দুবার সার্চ কমিটি গঠন করে ইসি গঠন হলেও বিতর্ক থামেনি।

গত দুবারের অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, নতুন বছরের আগেই মধ্য ডিসেম্বরে সংলাপ শুরুর উদ্যোগ নেন রাষ্ট্রপতি। মধ্য জানুয়ারিতে সংলাপ শেষ হয়। সার্চ কমিটি গঠিত হয় জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে। নাম প্রস্তাব ও বাছাই শেষে ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে সিইসি ও ইসির নাম প্রকাশ করা হয়।

কমিশনার হতে যোগ্যতা-অযোগ্যতা

কারা প্রধান নির্বাচন কমিশনার বা কমিশনার হতে পারবেন তার যোগ্যতা ও অযোগ্যতা ঠিক করে দেয়া হয়েছে খসড়া আইনের ৫ ও ৬ ধারায়।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে, মিনিমাম ৫০ বছর হতে হবে। কোনো গুরুত্বপূর্ণ সরকারি, আধা সরকারি, বেসরকারি বা বিচার বিভাগীয় পদে কমপক্ষে ২০ বছর কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। তাহলেই উনি হয় প্রধান নির্বাচন কমিশনার বা নির্বাচন কমিশনার হতে পারবেন।’

অযোগ্যতা নিয়ে তিনি বলেন, ‘অযোগ্যতা হলো তিনি যদি কোনো আদালত কর্তৃক ইনসেন্স অর্থাৎ অপ্রকৃতস্থ ঘোষিত হন তা হলে পারবেন না। দেউলিয়া ঘোষিত হওয়ার পর দায়মুক্ত না হলেও পারবেন না। কোনো বিদেশি রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব লাভ করেন বা বিদেশি রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য ঘোষণা করেন তা হলে।

‘আমাদের যাদের সঙ্গে ডুয়েল সিটিজেনশিপ আছে সেখানে তারা থাকতে পারবেন। কিন্তু অনেকে সিটিজেনশিপ স্যারেন্ডার করে দিয়েছেন তারা আর পারবেন না। নৈতিক স্খলন যদি হয় এবং ফৌজদারি অপরাধে অনূন্য ২ বছরের কারাদণ্ড হয়, তা হলে পারবেন না। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায়ে যদি কোনোভাবে কনভিক্ট হন, তা হলেও পারবেন না।’

প্রধান নির্বাচন কমিশনার বা কমিশনার থেকে অবসরে যাওয়ার পর কী কী করতে পারবে না খসড়া আইনে তাও উল্লেখ করা আছে বলে জানালেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

আইনটি কবে নাগাদ চূড়ান্ত রূপ পেতে পারে, সে ব্যাপারে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘এর মধ্যে যদি আইনটি হয়ে যায় তাহলে এই আইন দিয়েই নতুন নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ দেয়া যাবে। এটা আজকে অনুমোদন হলো। এটা কাল-পরশু হয়তো আইন মন্ত্রণালয়ে যাবে, দুয়েক দিন লাগবে। তারা যদি পরে সংসদে পাঠান সেখানেও কয়েকদিন লাগবে। স্থায়ী কমিটিতে যাবে তারা যাচাই বাছাই করবেন।’

অনুসন্ধান কমিটিতে থাকবেন কারা

অনুসন্ধান কমিটিতে কারা থাকবেন সেটিও ঠিক করে দেয়া হয়েছে আইনে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘এতে থাকবেন প্রধান বিচারপতি মনোনীত আপিল বিভাগের একজন বিচারক, যিনি এটার চেয়ারম্যান হবেন।

‘তারপর থাকবেন প্রধান বিচারপতি মনোনীত হাইকোর্ট বিভাগের একজন বিচারক, কন্ট্রোলার বা অডিটর জেনারেল, চেয়ারম্যান পিএসসি। আরও দুজন থাকবেন রাষ্ট্রপতি কর্তৃক মনোনীত বাংলাদেশের দুজন বিশিষ্ট নাগরিক।’

এ বিভাগের আরো খবর