পাঁচ ঠিকাদারের ১২৫ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ওঠেছে ভারতের সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) ডেপুটি কমান্ড্যান্ট প্রবীণ যাদবের বিরুদ্ধে।
রোববার দিল্লির কাছাকাছি গুরুগ্রাম থেকে যাদবকে গ্রেপ্তার করেছে ভারতীয় পুলিশ।
গুরুগ্রাম পুলিশ কমিশনার কে কে রাও গ্রেপ্তারের খবর দিয়ে বলেছেন, ‘ষড়যন্ত্রে যাদবের সঙ্গে ছিলেন তার স্ত্রী মমতা, ব্যাংক ম্যানেজার হিসাবে কর্মরত তার বোন ঋতুরাজ এবং জনৈক দীনেশ কুমার। এদের সকলকেই গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দল।’
কে কে রাও জানান, গ্রেপ্তারের সময় যাদব ও তার সহযোগীদের কাছ থেকে ১৩ কোটি রুপিসহ ছয়টি বিলাসবহুল গাড়ি উদ্ধার করা হয়েছে। অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
বিএসএফ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রথম অভিযোগটি গত ৮ জানুয়ারি করেছিলেন স্থানীয় নির্মাতা মোনেশ ইরানি। সে সময় তিনি দাবি করেন, ন্যাশনাল সিকিউরিটি গার্ড ক্যাম্পাসে নির্মাণকাজ দেয়ার অজুহাতে যাদব তার কাছ থেকে ৬৫ কোটি রুপি নিয়েছেন।
পরদিন ৯ জানুয়ারি যাদবের বিরুদ্ধে আরেক ঠিকাদার দবিন্দরের অভিযোগ পায় পুলিশ। দবিন্দর দাবি করেন, একই কাজের কথা বলে তার কাছ থেকে ৩৭ কোটি রুপি নিয়েছিলেন যাদব।
পুলিশ কমিশনার রাও জানান, যাদবের বিরুদ্ধে আরও তিনটি একই ধরনের অভিযোগ করা হয়েছিল।
অভিযোগের ভিত্তিতে, যাদবের বিরুদ্ধে তিনটি এফআইআর নথিভুক্ত করা হয় এবং অপরাধ তদন্তের জন্য সহকারী পুলিশ কমিশনার প্রীত পাল সিং সাংওয়ানের নেতৃত্বে একটি বিশেষ তদন্ত দল গঠন করা হয়।
ওই তদন্ত দলই প্রতারণার মাস্টারমাইন্ড যাদব ও তার সহযোগীদের গ্রেপ্তার করেছে। পুলিশ তাদের কাছ থেকে একটি করে বিএমডব্লিউ, হ্যারিয়ার, রেঞ্জ রোভার, জিপ, সাফারি ও ভলভো গাড়িসহ ১৩ কোটি ৮১ লাখ রুপি নগদ উদ্ধার করেছে।
পুলিশ কমিশনার জানিয়েছেন, বিএসএফের ডেপুটি কমান্ড্যান্ট যাদব সম্প্রতি স্বেচ্ছা অবসরে যাওয়ার আবেদন করেছিলেন। শেয়ার ব্যবসায় জড়িত ছিলেন তিনি। সম্প্রতি বিশাল ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন এবং মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে এটি পুনরুদ্ধারের পরিকল্পনা করেছিলেন।
সেই পরিকল্পনা থেকেই তিনি তার স্ত্রীর সঙ্গে একজন পরিচালক হিসাবে একটি প্রাইভেট ফার্ম খোলেন এবং গুরুগ্রামের সেক্টর ৮৪-এর স্ফেয়ার মলে অ্যাক্সিস ব্যাংক শাখার ম্যানেজার তার বোন ঋতুরাজকেও পরিকল্পনায় যুক্ত করেছিলেন।
জাল লেটারহেড এবং এনএসজি সিলের মাধ্যমে নিজের ফার্ম এবং এনএসজি ক্যাম্পাসের নামে দুটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলেন যাদব। এনএসজি ক্যাম্পাসে অভ্যন্তরীণ রাস্তা, একটি গুদাম, একটি আবাসিক কমপ্লেক্স, একটি পয়ঃনিষ্কাশন প্ল্যান্ট তৈরির মতো বিভিন্ন কাজ দেয়ার অজুহাতে লোকদের সঙ্গে প্রতারণা করতে শুরু করেছিলেন তিনি।