প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে দিনাজপুর জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের বিভাগীয় কার্যালয় অবরোধ করেছে এলাকাবাসী।
রোববার সকালে এই ঘটনার পর তারা দিনাজপুর-ঢাকা মহাসড়কের পাশে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মধ্যে সরকার নির্ধারিত দামে প্লট বরাদ্দের দাবিতে মানববন্ধন করে। দাবি পূরণ না হলে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।
এলাকাবাসী জানান, রিফিউজিদের পুনর্বাসনের জন্য ১৯৬০-৬১ সালে তৎকালীন পাকিস্তান সরকার গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের আওতায় দিনাজপুর উপশহর এলাকার ৩৬৪ একর জমি হুকুম দখল করে। সরকার পৈতৃক সম্পত্তি ও বসতবাড়ির জমি হুকুম দখল করেছে বলে জানতে পারে এলাকাবাসী। এরপর তারা ওই জায়গা অবমুক্ত (ডি-রিকুইজিশন) করার জন্য বার বার আবেদন করে।
এলাকাবাসীর দাবি, ওই সময়ে জমি অধিগ্রহণ করলেও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হয়নি। অধিগ্রহণের পর ওইসব জায়গা ফাঁকাই ছিল। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার ও তাদের ওয়ারিশরা ওইসব প্লটে নিজ খরচে ঘর তৈরি করে বাস করছেন। এরই মধ্যে ২০১৮ সালে গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ ৬১টি প্লট বরাদ্দের জন্য আবেদন গ্রহণ করে। সেই আবেদনের লটারির তারিখ হয় রোববার। বিষয়টি জানতে পেরে ক্ষতিগ্রস্তরা ওইসব প্লট নিজেদের নামে বরাদ্দ দেয়ার আবেদন করে। কিন্তু কর্তৃপক্ষ তাদের প্লট বরাদ্দ দেয়নি। এতে করে পূর্বপুরুষদের ওয়ারিশরা গৃহহীন হয়ে পড়বেন।
তাদের অভিযোগ, গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের প্লট বরাদ্দে দুর্নীতি করা হয়েছে।
নির্ধারিত দিনে যে লটারি হওয়ার কথা ছিল সেটি পরিচালনার জন্য জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের উপ-সচিব মাহমুদুল্লাহ ও মোহাম্মদ আশরাফ দিনাজপুরে আসেন। কিন্তু এমন পরিস্থিতিতে কর্তৃপক্ষ লটারি স্থগিত রাখে।
বিকেল ৩টার দিকে ওই কর্মকর্তারা গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের কার্যালয়ে যেতে চাইলে স্থানীয়দের বাধার মুখে তাদেরকে ফেরত যেতে হয়।
ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্য আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘এক কাঠা জমির সরকার নির্ধারিত দাম সাড়ে ৫ লাখ টাকা। কিন্তু আমার কাছে এক কাঠা জমির দাম ১৭ লাখ টাকা চাওয়া হয়েছে। এসব জমি গোপনে বাইরের লোককে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। উচ্ছেদের সময়ও দুর্নীতি হয়েছে।’
জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ দিনাজপুর বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী (সিভিল) মোর্শেদ আলম বলেন, ‘যারা ক্ষতিগ্রস্ত দাবি করছেন তারা কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেননি। আমরা সম্পূর্ণ সরকারি নিয়ম মেনেই প্লট বরাদ্দ করছি।’
এ ব্যাপারে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ দিনাজপুর বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ দেলোয়ার হুসাইনের মোবাইল ফোনে বার বার যোগাযোগ করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি। কার্যালয়ে গিয়েও তার সঙ্গে দেখা করা যায়নি।