করোনার টিকা দিয়ে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ফি আদায়ের অভিযোগ উঠেছে পাবনার বেড়া উপজেলার ঢালারচর উচ্চ বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে।
এয়ার কন্ডিশনারের দাম পরিশোধের অজুহাতে দুর্গম ঢালারচর ইউনিয়নে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের এমন ফি আদায়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
সরকারের দেয়া বিনা মূল্যের করোনা টিকা প্রদান করে ফি আদায়ের কোনো আইনগত সুযোগ নেই বলে জানিয়েছে উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।
দেশজুড়ে মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের করোনা টিকা দিচ্ছে স্বাস্থ্য বিভাগ। এরই ধারাবাহিকতায় রোববার সকাল থেকে ঢালারচর উচ্চ বিদ্যালয়ে টিকা দেয়ার কার্যক্রম শুরু হয়। এ সময় প্রত্যেক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে টিকা গ্রহণের ফি বাবদ ৬০ থেকে ১০০ টাকা আদায় করে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা ক্ষোভ প্রকাশ করলেও টাকা ছাড়া টিকা দিতে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অপারগতার কথা জানান একাধিক শিক্ষার্থী।
শিক্ষার্থীরা দাবি করেছেন, তাদের কয়েকজন ফি নেয়ার প্রতিবাদ করলে শিক্ষকরা ভয়ভীতিও দেখিয়েছেন।
ঢালারচর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রশিদ টাকার বিনিময়ে টিকা দেয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ‘আমাদের বিদ্যালয়ে প্রায় ১ হাজার ১০০ শিক্ষার্থী। কাশিনাথপুর বা বেড়া উপজেলা সদরে গিয়ে টিকা নিতে তাদের কমপক্ষে ৩০০ টাকা করে খরচ হবে। যাতায়াতেরও ঝুঁকি আছে। তাই বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি ও স্থানীয় ব্যক্তিবর্গের পরামর্শেই এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।’
রোববার পর্যন্ত ওই বিদ্যালয়ে ৮৫৬ শিক্ষার্থীকে টিকা দেয়া হয়েছে। প্রধান শিক্ষকের দাবি, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে অবহিত করেই শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা নেয়া হয়েছে।
তিনি আরও জানান, টিকা কার্যক্রম পরিচালনায় ১ লাখ ১২ হাজার টাকায় এসি কিনতে হয়েছে। এর মধ্যে ২৫ হাজার টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। বাকি টাকা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আদায় করে পরিশোধ করা হবে।
বেড়া উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা খবির উদ্দিন বলেন, ‘টাকা আদায়ের বিষয়টি বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আমাকে জানিয়েছে। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্যই তারা এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। উপজেলার আরও পাঁচটি বিদ্যালয়ে এভাবেই এসি ক্রয় করা হয়েছে।’
বিষয়টিকে টাকার বিনিময়ে টিকা বলতে নারাজ খবির উদ্দিন। তবে জেলা প্রশাসক ও শিক্ষা অধিদপ্তরের এ বিষয়ে অনুমোদন আছে কি না জানতে চাইলে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।
বেড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ফাতেমা-তুজ-জান্নাত বলেন, ‘স্বাস্থ্য বিভাগ টিকা প্রদানে কোনো টাকা নিচ্ছে না। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কেন টাকা নিচ্ছে বিষয়টি আমার জানা নেই।’
এ বিষয়ে পাবনা জেলা প্রশাসক বিশ্বাস রাসেল হোসেন বলেন, ‘এমন অভিযোগ এখনও পাইনি। পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’