বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

নির্মাণ খাত রক্ষায় প্রধানমন্ত্রীকে এফবিসিসিআইয়ের চিঠি

  •    
  • ১৬ জানুয়ারি, ২০২২ ১৯:১৩

চিঠিতে বলা হয়েছে, দেশে নির্মাণ ব্যয় বাড়ার কারণে ঠিকাদারদের পক্ষে তাদের চলমান এবং আসন্ন প্রকল্পগুলোর কাজ সম্পন্ন করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। এ অবস্থা দীর্ঘায়িত হলে দেশের নির্মাণ খাত অপূরণীয় ক্ষতির সম্মুখীন হবে এবং বিদেশি ঠিকাদারদের সাথে প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে বেশির ভাগ স্থানীয় নির্মাণ প্রতিষ্ঠান দেউলিয়া হয়ে যাবে।

গত কয়েক মাসে অবকাঠামো খাতের মূল কাঁচামালের দাম ২০ শতাংশ থেকে ২৫ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পাওয়ায় সরকারের অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পগুলো যথাসময়ে সম্পন্ন করতে প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতা চেয়েছে ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই)।

এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি জসিম উদ্দিন সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে এ বিষয়ে একটি চিঠি দিয়েছেন।

চিঠিতে বলা হয়, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে ইতিমধ্যেই স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উন্নীত হয়েছে বাংলাদেশ এবং উন্নয়নের মহাসড়কে সফলভাবে এগিয়ে চলেছে। সরকারের ব্যবসা-বান্ধব নীতি বিদ্যমান থাকায় এবং ব্যবসার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় থাকায় ব্যবসায়ীরা সফলভাবে ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করতে পারছে। কিন্তু গত পাঁচ থেকে ছয় মাস ধরে, বিশেষ করে গত এক মাসে, অবকাঠামো খাতের মূল কাঁচামাল যেমন রড, সিমেন্ট, পাথর, বিটুমিন, কপার, অ্যালুমিনিয়াম ইত্যাদির মূল্য ২০ থেকে ২৫ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে, যা নির্মাণশিল্পের ওপর অকল্পনীয় বিরূপ প্রভাব ফেলছে।

‘বর্তমানে বাংলাদেশে নির্মাণ ব্যয় এমন একটি পর্যায়ে পৌঁছেছে যে ঠিকাদারদের পক্ষে তাদের চলমান এবং আসন্ন প্রকল্পগুলোর কাজ যথাযথ মান বজায় রেখে চুক্তিতে নির্ধারিত মূল্যে সম্পন্ন করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা দীর্ঘায়িত হলে দেশের নির্মাণ খাত অপূরণীয় ক্ষতির সম্মুখীন হবে এবং বিদেশি ঠিকাদারদের সাথে প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে বেশির ভাগ স্থানীয় নির্মাণ প্রতিষ্ঠান দেউলিয়া হয়ে পড়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। শুধু তাই নয়, দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলো দেউলিয়া হয়ে গেলে তাদের অর্থায়ন করা দেশের ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশ ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানও খেলাপি ঋণের কারণে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।’

চিঠিতে আরও বলা হয়, ‘গত তিন মাস ধরে দেশের ইস্পাত ও সিমেন্ট উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলো সিন্ডিকেট করে অযৌক্তিকভাবে রড ও সিমেন্টের মূল্য বাড়িয়ে চলেছে। এই লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধি শুধু নির্মাণ ও আবাসন শিল্পের ওপরই বিরূপ প্রভাব ফেলছে তা নয়, বরং সামগ্রিকভাবে সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডকেও ব্যাপকভাবে বাধাগ্রস্ত করছে।’

চিঠিতে এফবিসিসিআই জানায়, উৎপাদিত পণ্যের দাম বাড়ানোর আগে কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের উচিত সেই পণ্যগুলোর সংশ্লিষ্ট অন্য ব্যবসাগুলোর লাভ-ক্ষতির কথা বিবেচনায় রাখা।

ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিদের শীর্ষ এ সংগঠন বলেছে, দেশীয় রড উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো ইতিমধ্যেই সরকারের কাছ থেকে নানা রকম সুবিধা পাচ্ছে। তা সত্ত্বেও তারা তাদের অযৌক্তিক মূল্যবৃদ্ধির পরবর্তী পরিণতির প্রতি বিন্দুমাত্র ভ্রুক্ষেপ না করে দিনের পর দিন রডের দাম বাড়িয়েই চলেছে।

সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, নির্মাণ খাতে চলমান অস্থিরতা নিরসনে এটি প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছে।

দেশের নির্মাণ খাত এবং স্থানীয় নির্মাণ প্রতিষ্ঠানগুলোর স্বার্থ রক্ষায় এফবিসিসিআই স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি কিছু সুপারিশ তুলে ধরেছে। স্বল্পমেয়াদি সুপারিশের মধ্যে আছে: চলমান ও আসন্ন সরকারি প্রকল্পগুলো যথাসময়ে শেষ করতে দ্রুত বাইরের যেকোনো দেশ থেকে রড (এমএস) আমদানি করার অনুমতি দেওয়া, আমদানিসংক্রান্ত ট্যারিফ এবং ডিউটি কাঠামো এমনভাবে নির্ধারণ করা যাতে প্রকল্প সাইটে পৌঁছনো অবধি রডের টনপ্রতি মূল্য ৬০ হাজার টাকার নিচে থাকে, দরপত্র জমা দেয়ার পর আইনগত কোনো পরিবর্তনের কারণে প্রকল্পের ব্যয় বৃদ্ধি পেলে ঠিকাদারকে সেই বর্ধিত ব্যয়ের সমমূল্য প্রদান নিশ্চিত করা, সরকারি কিংবা বিদেশি অর্থায়নকৃত সকল চলমান, আসন্ন এবং ভবিষ্যৎ প্রকল্পগুলোতে মূল্যের তারতম্যবিষয়ক ধারা সংযুক্ত করা এবং ব্যালাস্টের ক্ষেত্রে আমদানি শুল্ক কেবলমাত্র এফওবি-এর ওপর প্রযোজ্য করা এবং এ জন্য একটি নির্দিষ্ট ট্যারিফ ধার্য করা।

দীর্ঘমেয়াদি সুপারিশসমূহ হলো: বড় ও অপেক্ষাকৃত জটিল প্রকল্প ছাড়া সরকারের বাকি প্রকল্পগুলোয় বিদেশি দরদাতাদের অংশগ্রহণ জোরালোভাবে নিরুৎসাহিত করা, সরকারের প্রকল্পগুলোয় স্থানীয় নির্মাণ প্রতিষ্ঠানসমূহকে অগ্রাধিকার দেয়া, সরকারি কিংবা বিদেশি অর্থায়নকৃত সকল দরপত্র যতটা সম্ভব ফিডিক-নির্ভর করা, ঠিকাদারদের অর্থ পরিশোধ করার ক্ষেত্রে ফিডিকের নিয়মনীতি অনুসরণ করা, নিয়োগকর্তার অদক্ষতা বা অদূরদর্শিতার কারণে ঘটা বিলম্বের জন্য ঠিকাদারকে আর্থিক ক্ষতিপূরণ প্রদানের বিধান সকল দরপত্রে অন্তর্ভুক্ত করা, সরকারি কিংবা বিদেশি অর্থায়নকৃত সকল দরপত্রে ১০ শতাংশ অগ্রিম অর্থ প্রদানের বিধান করা এবং দেশের নির্মাণশিল্পের টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে কনসালটেন্সি খাতে সরকারের বিশেষ মনোযোগ প্রদান।

এ বিভাগের আরো খবর