বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

পৌর ভোট: কেন্দ্রে ভোটারদের উৎসব

  •    
  • ১৬ জানুয়ারি, ২০২২ ১৫:৫১

ঝিকরগাছা ইউএনও মাহবুবুল হক বলেন, ‘দীর্ঘ সময় পর ভোট হওয়ায় সাধারণ মানুষের মধ্যেই উৎসবের আমেজ দেখা গেছে। সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিও নিয়ন্ত্রণে আছে। আশা করছি, শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণ শেষ হবে।’

সীমানা জটিলতার কারণে দীর্ঘ ২১ বছর পর যশোরের ঝিকরগাছা পৌরসভায় ভোটগ্রহণ হয়েছে। দীর্ঘদিন পর ভোট হওয়ায় কেন্দ্রগুলোতে ভোটারদের মধ্যে উৎসব ছিল চোখে পড়ার মতো। উপস্থিতিও ছিল অনেক।

রোববার সকাল ৮টা থেকে অনুষ্ঠিত ভোটের প্রথম ৬ ঘণ্টায় গড়ে ৫৫ শতাংশ ভোট পড়েছে বলে জানা গেছে। একটানা ভোট হয়েছে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।

দীর্ঘদিন পর ভোট হওয়ায় ভোটদের মধ্যে এক ধরনের উৎসবের জোয়ার দেখা গেছে। একই সঙ্গে তাদের বাড়তি আগ্রহও দেখা গেছে। তাই কেন্দ্রগুলোতে সকাল থেকেই ভিড় জমে ভোটারদের। নির্বাচন ঘিরে পৌরসভাজুড়ে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ।

সকাল থেকে পৌরসভার একাধিক ভোটকেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে, ভোটাররা শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিচ্ছেন। ভোটে যেকোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। এদিকে ইভিএমে ভোট হওয়ায় তরুণ ভোটারদের মধ্যেও বেশ উৎসাহ দেখা গেছে।

পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের প্রিসাইডিং অফিসার শামসুল আলম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘দীর্ঘ ২১ বছর পর এই নির্বাচন হচ্ছে। এ নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যেও দেখা গেছে উৎসবের আমেজ। সকাল থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত প্রায় ৫৫ শতাংশ ভোট পড়েছে।’

পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের প্রিসাইডিং অফিসার এস এম শাহজাহান সিরাজ বলেন, ‘সকাল থেকেই ভোটাররা লাইনে দাঁড়িয়ে সুশৃঙ্খলভাবে ভোট দেন। তবে ইভিএমে ভোট দিতে বয়স্কদের কিছুটা দেরি হলেও তরুণদের খুব একটা সমস্যা হচ্ছে না।’

কৃর্তিপুর খাদেমুন ইনসান কেন্দ্রে মো. তৈয়ব নামে এক ভোটার জানান, ব্যালটে ভোট দেয়ার চেয়ে ইভিএমে ভোট দেয়ার মজা আলাদা। খুব দ্রুত তারা ভোট দিতে পেরেছেন।

রেশমা নামে আরেক ভোটার জানান, ভোট দিতে গিয়ে তাদের কোনো সমস্যায় পড়তে হয়নি। কোনো বাধা ছাড়াই তারা কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিয়েছেন।

ঝিকরগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহবুবুল হক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘দীর্ঘ সময় পর ভোট হওয়ায় সাধারণ মানুষের মধ্যেই উৎসবের আমেজ দেখা গেছে। সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিও নিয়ন্ত্রণে আছে। আশা করছি, শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণ শেষ হবে।’

জেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, ঝিকরগাছা পৌরসভায় মোট ভোটার ২৫ হাজার ৯৩৯ জন। এর মধ্যে ১২ হাজার ৪৮২ জন পুরুষ এবং ১৩ হাজার ৪৫৭ জন নারী।

ইভিএম পদ্ধতিতে ১৪টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ চলছে। এবারের নির্বাচনে মেয়র পদে ছয়জন, ৯টি সাধারণ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ৬৬ জন এবং তিনটি সংরক্ষিত ওয়াার্ডে ১৮ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

পৌরসভার ভোট কেন্দ্রগুলোতে ভোটারদের মধ্যেও দেখা গেছে উৎসবের আমেজ। ছবি: নিউজবাংলা

পৌরসভা তথ্যসূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৮ সালে ৪ এপ্রিল উপজেলা সদরের ৯ দশমিক ৪৩ বর্গকিলোমিটার আয়তনের ঝিকরগাছা পৌরসভা ঘোষণা করা হয়। তখন নবগঠিত পৌরসভার প্রশাসক নিয়োগ করা হয়েছিল। ২০০১ সালের ২ এপ্রিল ঝিকরগাছা পৌরসভায় প্রথম নির্বাচন হয়। তখন চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন বর্তমান উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মোস্তফা আনোয়ার পাশা জামাল।

২০০৬ সালের প্রথম দিকে পৌরসভার সীমানা বাড়ানো হয়। এতে সদর ইউনিয়নের মল্লিকপুর, ফারাসাতপুর, পদ্মপুকুর পানিসারা ইউনিয়নের পুরন্দপুর, কাউরিয়া ও গদখালী ইউনিয়নের বারবাকপুর ও বামনআলী গ্রামের অংশবিশেষ পৌরসভায় অন্তর্ভুক্ত হয়।

অভিযোগ আছে, এসব অঞ্চল বিএনপির ভোটার অধ্যুষিত হওয়ায় নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে বিএনপি সরকার এ অঞ্চলকে পৌরসভায় অন্তর্ভুক্ত করে। কিন্তু এসব অঞ্চল প্রত্যন্ত এলাকা হওয়ায় পৌরসভায় অন্তর্ভুক্ত না হতে এলাকাবাসী কর্মসূচি পালন করে।

একপর্যায়ে কাউরিয়া গ্রামের শাহিনুর রহমান, বামনআলী গ্রামের শাহাদৎ হোসেন ও মল্লিকপুর গ্রামের সাইফুজ্জামান পৌরসভায় অন্তর্ভুক্ত না হতে হাইকোর্টে আলাদা তিনটি রিট করেন। আর এতেই আটকে যায় ঝিকরগাছা পৌরসভা নির্বাচন। ২০০৬ সালের নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা স্থগিত করে হাইকোর্ট।

এরপর দুই দশক পর গত ৩০ নভেম্বর নির্বাচন কমিশন তফসিল ঘোষণা করে। সে ঘোষণা অনুযায়ী রোববার ঝিকরগাছায় ভোটগ্রহণ চলছে।

এ বিভাগের আরো খবর