চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শিক্ষক সমিতির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে কাল সোমবার। এবারের নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না বিএনপি-জামায়াতপন্থী শিক্ষকদের সাদা দল ও সাদা দল থেকে বেরিয়ে আসা জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম।
আওয়ামী ও বামপন্থী শিক্ষকদের হলুদ দল থেকে চারটি গুরুত্বপূর্ণ পদের বিপরীতে দলের একাধিক প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন।
সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদের মিলনায়তনে সকাল ৯টা থেকে বেলা দেড়টা পর্যন্ত ভোট চলবে।
শিক্ষক সমিতির নির্বাচনের তফসিল অনুযায়ী ১৯ ডিসেম্বর ছিল মনোনয়ন নেয়া এবং জমা দেয়ার শেষ তারিখ। এতে হলুদ দল থেকে ১১টি পদের পূর্ণ প্যানেল মনোনয়ন জমা পড়ে।
সভাপতি, সহসভাপতি, কোষাধ্যক্ষ ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে হলুদ দলের প্রার্থীদের বিপরীতে আরও চারজন শিক্ষক প্রার্থী হয়েছেন, যারা নিজেদের হলুদ দলের দাবি করেছেন।
নির্বাচনে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ছিল ২৩ ডিসেম্বর দুপুর ১২টা। গত ১১ ও ১৩ জানুয়ারি চবি শিক্ষক সমিতির কার্যালয়ে বেলা ১১ থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত চলে অগ্রিম ভোট। এতে ১৭১ জন ভোট দিয়েছেন।
নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মোহাম্মদ আবুল মনছুর নিউজবাংলাকে বলেন, ‘নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতি সম্পন্ন। ৮৬২ জনের মধ্যে ১৭১ জন গত ১১ ও ১৩ জানুয়ারি অগ্রিম ভোট দিয়েছেন।
‘নির্বাচনে একজন সাধারণ সম্পাদক ও ছয়জন সদস্য বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। ফলে সকাল থেকে চারটি পদে নেয়া হবে ভোট।’
চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা অনুযায়ী, হলুদ দল থেকে নির্বাচনে লড়ছেন সভাপতি পদে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক হানিফ সিদ্দিকী, সহসভাপতি পদে ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক আবদুল হক, কোষাধ্যক্ষ পদে চারুকলা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক জসিম উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক পদে মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক সজীব কুমার ঘোষ, যুগ্ম সম্পাদক পদে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হেলাল উদ্দিন আহম্মদ।
এ ছাড়া সদস্য পদে জিন প্রকৌশল ও জৈবপ্রযুক্তি বিভাগের নাজনীন নাহার ইসলাম, বাংলা বিভাগের শারমিন মুস্তারী, সমাজতত্ত্ব বিভাগের মুহাম্মদ শোয়াইব উদ্দিন হায়দার, রসায়ন বিভাগের ফণীভূষণ বিশ্বাস, পদার্থবিদ্যা বিভাগের সৈয়দা করিমুন্নেছা ও আইন বিভাগের হোছাইন মোহাম্মদ ইউনুছ সিরাজী।
চারটি পদে অন্য প্রার্থীরা হলেন সভাপতি পদে ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক সেলিনা আখতার, সহসভাপতি পদে ফলিত রসায়ন ও কেমিকৌশল বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সুমন বড়ুয়া, কোষাধ্যক্ষ পদে একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সুমন গাঙ্গুলী ও যুগ্ম সম্পাদক পদে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এস এ এম জিয়াউল ইসলাম।
নিজেদের ‘স্বতন্ত্র প্রার্থী’ হিসেবে দাবি করেছেন হলুদ দলের এই চারজন প্রার্থী।
একাধিক প্রার্থীদের বিষয়ে জানতে চাইলে হলুদ দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক সেকান্দর চৌধুরী বলেন, ‘আমরা অনুরোধ করেছিলাম, দলের বৃহত্তর স্বার্থে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করতে। হয়তো মনোনয়নগুলো তাদের পছন্দ হয়নি। তারাও আমাদের দলের অংশ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, এখানে সবাই নির্বাচন করার যোগ্য। কিন্তু আমরা ১১ জনের বাইরে কাউকে প্রার্থী দিতে পারব না, কেউ না কেউ বাদ যাবে।’
অন্যদিকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার বিষয়ে সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক শামীম উদ্দিন খান বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় ও দেশে কী নির্বাচনের কোনো পরিবেশ আছে? নিজের বিবেকের দংশন থেকে আমরা সব কিছু থেকে বিরত থাকছি। আমরা গত বছরও নির্বাচন করিনি, এই বছরও করছি না।’
জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের মহাসচিব অধ্যাপক এস এম নছরুল কাদির বলেন, ‘জাতীয় পর্যায়ে কোথাও নির্বাচন করছে না, তাই আমরাও করছি না।’