তিন দফা দাবি আদায়ে আন্দোলন চতুর্থ দিনের মতো অব্যাহত রেখেছে সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবি) বেগম সিরাজুন্নেসা হলের ছাত্রীরা।
মধ্যরাতে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়ে রোববার সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান নিয়েছে তারা।
এতে বন্ধ হয়ে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ সড়কের যান চলাচল। কোনো গাড়ি ক্যাম্পাসে প্রবেশ বা বের হতে পারছে না।
সেখানে অবস্থানরত ছাত্রীরা প্রাধ্যক্ষের পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে স্লোগান দিচ্ছেন। এ ছাড়া তাদের শনিবারের কর্মসূচিতে হামলার জন্য ছাত্রলীগকে দায়ী করে জড়িতদের বিচারও দাবি করছেন।
সিরাজুন্নেসা হলের প্রাধ্যক্ষ জাফরিন আহমেদ লিজা ও সহকারী প্রাধ্যক্ষদের পদত্যাগ, অবিলম্বে হলের যাবতীয় অব্যবস্থাপনা দূর করে সুস্থ-স্বাভাবিক পরিবেশ নিশ্চিত করা এবং ছাত্রীবান্ধব ও দায়িত্বশীল প্রাধ্যক্ষ কমিটি নিয়োগ দেয়ার দাবিতে বৃহস্পতিবার রাত থেকে আন্দোলন করছেন সিরাজুন্নেসা হলের ছাত্রীরা।
শুক্রবার উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করে দাবি মেনে নেয়ার জন্য শনিবার সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত সময় বেধে দেয় তারা।
এরপর শনিবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গোল চত্বরের সামনে অবস্থান নিয়ে সড়ক অবরোধ করে ছাত্রীরা। এ সময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উপর ছাত্রলীগের হামলার অভিযোগ ওঠে।
যদিও ছাত্রলীগ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
রাতে আন্দোলনরত ছাত্রীদের সাথে কথা বলতে আসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক আনোয়ারুল ইসলাম ও প্রক্টর অধ্যাপক আলমগীর কবির।
তারা ছাত্রীদের দাবি পর্যায়ক্রমে মেনে নেয়ার আশ্বাস দিয়ে তাদের হলে ফিরে যাওয়ার অনুরোধ করেন। তবে ছাত্রীরা প্রাধ্যক্ষের পদত্যাগের ঘোষণার পূর্ব পর্যন্ত হলে না গিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার কথা জানায়।
রাতে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়ে রোববার সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছে তারা।
নিউজবাংলাকে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী শামীমা ইয়াসমিন বলেন, ‘প্রাধ্যক্ষের পদত্যাগসহ তিন দফা দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। আজ থেকে ক্লাস পরীক্ষাও বর্জন করেছি আমরা।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. আলমগীর কবির বলেন, ‘ছাত্রীদের দাবি মেনে নেয়ার আশ্বাস দেয়া হয়েছে। তাদের হলে ফিরে যাওয়ারও অনুরোধ করেছি। তবু তারা শোনেনি।’
দু’একটি বিভাগ ছাড়া বাকি সব বিভাগে ক্লাস ও পরীক্ষা অব্যাহত আছে বলেও জানান তিনি।
ছাত্রীদের আন্দোলন প্রসঙ্গে শাবি উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘প্রাধ্যক্ষ জাফরিন আহমেদ লিজা অসুস্থতার কারণে ছুটিতে থাকায় হলে ভারপ্রাপ্ত প্রাধ্যক্ষ হিসেবে আরেকজনকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। আর ছাত্রীদের সমস্যাগুলো সমাধানের চেষ্টা চলছে।’