শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবি) ছাত্রীদের অবস্থান কর্মসূচিতে বাধা ও হামলার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে। তবে এই অভিযোগ নাকচ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতারা। তারা বলছেন, শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলন যৌক্তিক।
তিন দফা দাবিতে শনিবার সন্ধ্যায় ফের আন্দোলনে নামেন বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের ছাত্রীরা। গোলচত্বরে অবস্থান নেন শতাধিক শিক্ষার্থী। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতর যান চলাচল বন্ধ করে দেন তারা।
আন্দোলনকারী ছাত্রীদের অভিযোগ, সন্ধ্যায় গোলচত্বরে তারা শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান নেন। এ সময় ছাত্রলীগের ৩০-৪০ জন নেতাকর্মী এসে গোলচত্বর এলাকায় অবস্থান নেন। তারা ছাত্রীদের হলে ফিরে যাওয়ার জন্য হুমকি দিতে থা্কেন। একপর্যায়ে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা করেন। এতে কয়েকজন আহত হওয়ারও খবর পাওয়া গেছে।
সিরাজুন্নেসা হলের প্রাধ্যক্ষ জাফরিন আহমেদ লিজা ও সহকারী প্রাধ্যক্ষদের পদত্যাগ, অবিলম্বে হলের যাবতীয় অব্যবস্থাপনা দূর করে সুস্থ-স্বাভাবিক পরিবেশ নিশ্চিত করা এবং ছাত্রীবান্ধব ও দায়িত্বশীল প্রাধ্যক্ষ কমিটি নিয়োগ দেয়ার দাবিতে বৃহস্পতিবার রাত থেকে আন্দোলন করছেন সিরাজুন্নেছা হলের ছাত্রীরা।
শুক্রবার সন্ধ্যায় তারা দাবি পূরণে ২৪ ঘণ্টার সময়সীমা বেঁধে দিয়ে আন্দোলন স্থগিত করেন। ওই দিনই হল প্রাধ্যক্ষের কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেন তারা। ২৪ ঘণ্টার সময়সীমা শেষ হওয়ার কিছুক্ষণ আগেই শনিবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গোল চত্বরে তারা অবস্থান নেন।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, দাবি-সংবলিত প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশের প্রধান রাস্তা ‘কিলো সড়ক’ অবরোধ করে রাখেন আন্দোলনকারী ছাত্রীরা।
আন্দোলনকারী ছাত্রী শামীমা ইয়াসমিন বলেন, ‘আমাদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। আজকের মধ্যেই প্রশাসন আমাদের দাবি পূরণ করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘ছাত্রলীগ আমাদের আন্দোলনে বাধা দিচ্ছে। তারা যেকোনো সময় হামলা করতে পারে।’
শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের কোনো কমিটি নেই।
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘উপাচার্য ছাত্রীদের দাবি মেনে নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। তবু পরিস্থিতি ঘোলাটে করতে আন্দোলন করছে। আমরা তাদের হলে ফিরে যেতে বলেছি। কিন্তু হামলা বা বাধা দিইনি।’
এ প্রসঙ্গে শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আলমগীর কবির বলেন, ‘শুক্রবারই উপাচার্য স্যার ছাত্রীদের দাবি মেনে নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। তবে তিনি কিছু সময় চেয়েছেন। এখন তাদের আন্দোলনে নামা অযৌক্তি।’
উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদ শুক্রবার নিউজবাংলাকে বলেন, প্রাধ্যক্ষ জাফরিন আহমেদ অসুস্থতার কারণে ছুটিতে থাকায় হলে ভারপ্রাপ্ত প্রাধ্যক্ষ হিসেবে আরেকজনকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। আর ছাত্রীদের সমস্যাগুলো সমাধানের চেষ্টা চলছে।
শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের গত কমিটির পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক খলিলুর রহমান বলেন, ‘এটা যৌক্তিক আন্দোলন। ছাত্রলীগ হামলা করবে কেন?’
তিনি বলেন, ‘ছাত্রীদের আন্দোলনের কারণে ক্যাম্পাসের ভেতর রোগীবাহী একটি অ্যাম্বুলেন্স আটকা পড়ে। এ সময় তাদের নিজেদের মধ্যে একটু হইচই হয়েছে। এতে ছাত্রলীগের কোনো সম্পৃক্ততা নেই।’