নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মেয়র পদে লড়ছেন জেলা বিএনপি থেকে সদ্য বহিষ্কৃত আহ্বায়ক তৈমূর আলম খন্দকার। তাকেই নৌকার প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভীর মূল প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে ধরা হচ্ছে।
দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে নির্বাচনে অংশ নেয়ায় তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিয়েছে কেন্দ্রীয় বিএনপি। ফলে বিএনপির অধিকাংশ নেতার সমর্থন নেই তার প্রতি, আবার বিএনপি ও ২০ দলীয় জোটের অন্য কোনো প্রার্থীও নেই এই ভোটে।
একান্ত আলাপে নিউজবাংলার কাছে তৈমূর দাবি করেন, কৌশলগত কারণে দল তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলেও দলের সমর্থন আছে তার সঙ্গে। পাশাপাশি ব্যক্তি হিসেবেও তার জনপ্রিয়তা আছে বলে তিনি মনে করেন।
তবে জেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের অধিকাংশ নেতা বলছেন, তারা তৈমূরকে সমর্থন করছেন না। কারণ তারা দলের সিদ্ধান্তের বাইরে যাবেন না।
এ অবস্থায় তৈমূর আলম খন্দকার কীভাবে জয়ের আশা দেখছেন, জানতে চাইলে সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সাধারণ সম্পাদক ধীমান সাহা জুয়েল নিউজবাংলাকে বলেন, তৈমূর আলম খন্দকারকে ভোটে জিততে হলে তিনটি সমীকরণ সরলভাবে মিলতে হবে।
প্রথমত, তৈমূর আলম খন্দকার দীর্ঘদিন বিএনপির রাজনীতি করেছেন, হঠাৎ করে একদিন যদি বলা হয় তিনি বিএনপির কেউ নন, ভোটাররা তা বিশ্বাস করবে না। বিএনপি নেতারা সমর্থন না দিলেও বিএনপির ভোট তৈমূরের ঘরেই পড়বে। বিএনপি বা জোট এই নির্বাচনে অংশ না নিলেও দলের ভোটাররা তৈমূরের দিকেই ঝুঁকবেন।
দ্বিতীয়ত, সারা দেশের মতো নারায়ণগঞ্জেও নৌকাবিরোধী কিছু ভোট আছে সেগুলোও তিনি পাবেন।
আর তৃতীয়ত, যে বিষয়টা নিয়ে এতদিন আলোচনা চলছে, আইভীবিরোধী পক্ষও সমান গুরুত্বপূর্ণ।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা সেই সংকট নিরসনে কাজ করছেন। এর পরও কি আইভির বিরোধী পক্ষ গুরুত্বপূর্ণ, এই প্রশ্নের উত্তরে ধীমান সাহা জুয়েল বলেন, ‘জোর করে তো আর ভোট দেয়ানো যায় না। তবে ভোটের যা পরিবেশ, তাতে নির্বাচনে খুব প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে মনে হচ্ছে। শেষ হাসিটা হয়তো সেলিনা হায়াৎ আইভী হাসবেন, তবে তৈমূর আলম খন্দকারও ভালো ভোট পাবেন।’
নারায়ণগঞ্জ নাগরিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল করিম দিপুর মতে, নির্বাচন হবে একপেশে ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন। প্রচারণার শুরুতে জমজমাট মনে হলেও গত কয়েক দিনে কিছু সমীকরণ বদলে গেছে। তিনি বলেন, ‘আমরা নির্বাচনি পরিবেশ পর্যবেক্ষণ করতে বিভিন্ন ওয়ার্ডে গিয়েছি, সাধারণ ভোটারদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা উন্নয়নের পক্ষে ও সব সন্ত্রাসবিরোধী কার্যক্রমের বিপক্ষে। ফলাফলটা হয়তো বিশাল ব্যবধানে সরকারদলীয় প্রার্থীর অনুকূলেই যাবে।’