ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক সাইদা খালেক হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার আনোয়ারুলকে ১০দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ।
আসামি নির্মাণশ্রমিক আনোয়ারুল ইসলামকে বহনকারী প্রিজনভ্যানটি কাশিমপুর থানা থেকে শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় গাজীপুর আদালতের উদ্দেশ্যে রওনা হয়।
নিউজবাংলাকে কাশিমপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) দিপঙ্কর রায় এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘রাজমিস্ত্রী আনোয়ারুলকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রাজমিস্ত্রী আনোয়ারুল হত্যার দায় স্বীকার করেছেন।’
‘হত্যার ঘটনায় আরও কেউ জড়িত আছে কি না- সে বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড চাওয়া হয়েছে।’
দুপুর ২টার দিকে গাজীপুর মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের পুলিশে পরিদর্শক কলিন্দ্রনাথ গোলধার জানান, আনোয়ারুলকে বহনকারী প্রিজনভ্যানটি এখনও আদালতে পৌঁছায়নি।
গাজীপুরের পানিশাইল এলাকার কাশিমপুর এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন অধ্যাপক সাইদা। গত ১১ জানুয়ারি নিখোঁজ হন তিনি।
এর দুদিন পর ১৩ জানুয়ারি তার মেয়ে সাদিয়া কাশিমপুর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। তদন্তে নামে পুলিশ। শুক্রবার সকালে গাইবান্ধা থেকে আনোয়ারুলকে আটক করে পুলিশ।
আটকের পর তার দেয়া তথ্যে গাজীপুরের কাশিমপুর ইউনিয়নের পানিশাইল এলাকার একটি আবাসন প্রকল্প থেকে শুক্রবার দুপুরে অধ্যাপকের মরদেহ উদ্ধার হয়।
আনোয়ারুল পুলিশের কাছে স্বীকার করেন, দৈনিক মজুরি দেয়ার সময় সাইদার কাছে অনেক টাকা ছিল। তা দেখে লোভ সামলাতে পারেননি তিনি। একপর্যায়ে অধ্যাপকের ওড়না দিয়েই তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। মরদেহ ঝোঁপে ফেলে পালিয়ে যান তিনি।
গাজীপুরের কাশিমপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) দীপঙ্কর রায় নিউজবাংলাকে জানান, বলেন, ‘অধ্যাপক প্রতিদিন তার বাড়ির নির্মাণকাজ দেখতে ওই প্রকল্পে যেতেন। ১১ জানুয়ারি সন্ধ্যার আগে সব শ্রমিক চলে গেলেও আনোয়ারুলকে কয়েকটি গাছ কাটার জন্য রেখে দিয়েছিলেন তিনি।
‘কাজ শেষে পারিশ্রমিক দেয়ার সময় অধ্যাপকের কাছে অনেক টাকা দেখতে পেয়ে লোভ সামলাতে পারেননি আনোয়ারুল। নির্মাণাধীন বাড়ি থেকে ৪০০ গজ দূরে তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। পরে টাকাগুলো নিয়ে পালিয়ে যান তিনি।’
নিউজবাংলাকে ওই বাড়ির মালিক মোশারফ হোসেন মৃধা বলেন, ‘ছেলে ও তার স্ত্রীকে নিয়ে ৮-৯ মাস আগে আমার বাড়ির দ্বিতীয় তলার ফ্ল্যাট ভাড়া নেন। ওনার এক ছেলে ও তিন মেয়ে। ছেলে ঢাকার একটি বেসরকারি ব্যাংকের ম্যানেজার। দুই মেয়ে অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী। আরেক মেয়ে ঢাকায় থাকেন। ম্যাডাম ফ্ল্যাটে একাই থাকতেন। একটা বিদেশি কুকুর পুষতেন। মাঝেমধ্যে তার ছেলে ও ছেলের স্ত্রী আসতেন।’
পানিশাইল এলাকার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক প্রকল্পের সিকিউরিটি ইনচার্জ জয়নাল আবেদিন বলেন, ‘বাড়ির কাজ দেখাশোনার জন্য প্রকল্পের পাশে বাসা ভাড়া নিয়েছিলেন তিনি।’