ভোগান্তির আশঙ্কায় করোনার বিধিনিষেধে বাসে ধারণক্ষমতার অর্ধেক যাত্রী বহনের নির্দেশ প্রত্যাহার করলেও শর্ত ছিল সিটের চেয়ে বেশি যাত্রী নেয়া যাবে না। যাত্রী, চালক ও হেলপার সবাইকে পরতে হবে মাস্ক। এসব মানা হচ্ছে সামান্যই।
বাসসহ গণপরিবহনে বিধিনিষেধ কার্যকরের প্রথমদিন শনিবার দুপুর পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টের চিত্র দেখা গেছে গতানুগতিক দিনের মতোই। বেশির ভাগ বাসেই দেখা গেছে দাঁড়ানো যাত্রী। অধিকাংশের মুখে ছিল না মাস্ক।
ভ্রাম্যমাণ আদালত এড়িয়ে চলার প্রবণতা দেখা গেছে চালকদের। কোনো সড়কে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রয়েছে জানার পর বিকল্প সড়কে ঘুরে যাচ্ছে বাসগুলো।
সকাল ৯টা থেকে ইঞ্জিনিয়ার ইনস্টিটিউটের পাশে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের ভ্রাম্যমাণ আদালত। এই আদালতের মুখোমুখি না হতে মৎসভবন মোড় থেকে শাহবাগগামী কিছু বাস কাকরাইল, ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের মোড় ঘুরে যেতে দেখা গেছে।
নির্দেশনা বাস্তবায়নে বিভিন্ন সড়কে ভ্রাম্যমাণ আদালত থাকায় একটি বা দুটি এড়াতে পারলেও অন্যায় করে ছাড় পাওয়া যাবে না বলে জানান বিআরটিএর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফিরোজা পারভীন।
তিনি বলেন, ‘সড়কে আমাদের ৮ জন ম্যাজিস্ট্রেট থাকার কথা। কিন্তু সবাই না থাকলেও ৫-৬ টি স্পটে আমাদের অভিযান চলছে।’
মাস্ক না পরে বাসে ওঠায় কাউকে কাউকে জরিমানা করছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। ছবি: নিউজবাংলা
ফিরোজা পারভীন বলেন, ‘প্রথমদিন হিসেবে স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে কি না, তা আমরা দেখছি। আজকে বাসে অতিরিক্ত যাত্রী বহন করতে দেখা যাচ্ছে না। কয়েকটি পরিবহনে এক দুজন যাত্রীকে মাস্ক না পরে চলতে দেখা গেছে। তাদেরকে সতর্ক করা হচ্ছে। জরিমানাও করা হচ্ছে।’
এ ছাড়া, সড়ক পরিবহন আইন অনুযায়ী বাস ও চালকদের কাগজপত্রও চেক করা হচ্ছে। যাদের কাগজ সঠিক পাওয়া যাচ্ছে না, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলে জানান ফিরোজা পারভীন।
মদনপুর থেকে হেমায়েতপুরগামী বাসগুলোতে দেখা গেছে অতিরিক্ত যাত্রী। একই চিত্র দেখা গেছে বাড্ডা থেকে এয়ারপোর্ট ও মিরপুরগামী বাসগুলোতে। যাত্রীরাও বলেছেন, বিধিনিষেধের কোনো বালাই নেই। বাসে চলাফেরা অন্যান্য দিনের মতোই। এমনকি অনেকে মাস্কও পরছে না।
তবে সিটের চেয়ে বেশি যাত্রী পরিবহনের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন চালক-হেলপরাররা। তারা বলছেন, বিধিনিষেধ মেনেই যাত্রী পরিবহন করছেন তারা।
এ বিষয়ে বিআরটিএ’র নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফিরোজা পারভীন বলেন, ‘আজকে শনিবার হওয়াতে অফিসগামীদের চাপ নেই। আমরা বাসগুলো থামিয়ে চালক, শ্রমিক ও যাত্রীদের সতর্ক করছি।’
সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে বিআরটিএ চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের ৯টি ভ্রাম্যমাণ আদালত চলছে। স্বাস্থ্যবিধি না মেনে কেউ চলাচল করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি।’
তিনি জানান, ওমিক্রন সংক্রমণ এড়াতে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে পরিচালনা করা হচ্ছে মোবাইল কোর্ট৷ বাসে ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী বহন করা হলে, বাস চালক, হেল্পার এবং যাত্রীরা মাস্ক না পরলে তাদের জরিমানা বা সতর্ক করা হচ্ছে।
ট্রেনে দুই সিটে এক যাত্রী
বাসে প্রতি সিটে যাত্রী থাকলেও পূর্ব নির্দেশনা অনুযায়ী, প্রতি দুই সিটে একজন যাত্রী বহন করছে ট্রেন। নতুন নির্দেশনা আসার আগ পর্যন্ত এভাবেই চলবে বলে জানালেন কমলাপুরের স্টেশন ম্যানেজার মোহাম্মদ মাসুদ সারওয়ার।
নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘আগের নির্দেশনা অনুয়ায়ী প্রতিটি ট্রেন আসন সংখ্যার অর্ধেক যাত্রী নিয়ে চলাচল করছে। আমরা নতুন কোনো নির্দেশনা পাইনি।’