সীতাকুণ্ডে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন পেয়ে পথ ভুলে গহিন জঙ্গলে হারিয়ে যাওয়া এক ব্যক্তিকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।
বারৈয়াঢালা জাতীয় উদ্যানে হাঁটতে হাঁটতে শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে পথ হারিয়ে ফেলেন ওই ব্যক্তি। পরে ৯৯৯-এ ফোন পেয়ে রাত ১টার দিকে তাকে উদ্ধার করে সীতাকুণ্ড থানা পুলিশ।
নিউজবাংলাকে সীতাকুণ্ড থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আশরাফ সিদ্দিক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, অন্যান্য দিনের মতো শুক্রবার বিকেলে আসর নামাজ পড়ে হাঁটতে বের হন পঞ্চাশোর্ধ্ব মামুন চৌধুরী। এ দিন নিজবাড়ি সীতাকুণ্ডের বারৈয়াঢালা উত্তর রহমতনগর গ্রাম থেকে তিনি হাঁটা শুরু করে বারৈয়াঢালা জাতীয় উদ্যানের কাছাকাছি চলে যান।
একপর্যায়ে সিদ্ধান্ত নেন বন আর পাহাড়ি পথ পেরিয়ে হেঁটেই যাবেন পাশের উপজেলা ফটিকছড়ির ভূজপুরে। পরে হাঁটতে হাঁটতে বনের কোনো এক জায়গায় এসে পথ হারিয়ে ফেলেন তিনি। তখন বিকেল পেরিয়ে সন্ধ্যা হয়ে যায়।
এরপর নিজের মোবাইল দিয়ে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেন। গভীর জঙ্গলে নেটওয়ার্ক ঠিকমতো না পেয়ে পাহাড়ে উঠে কোনো রকমভাবে তার মেয়েকে ফোন দিয়ে জানান।
পরে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন দিয়ে বাবাকে উদ্ধারে সহযোগিতা চান তার মেয়ে।
খবর পেয়ে শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে উদ্ধার অভিযানে নামে সীতাকুণ্ড থানা পুলিশ। ৮ ঘণ্টার চেষ্টার পর ফটিকছড়ির ভূজপুরের কাছাকাছি গভীর জঙ্গল থেকে শুক্রবার রাত ১টার দিকে উদ্ধার করা হয় তাকে।
এসআই আশরাফ সিদ্দিক বলেন, ‘বিকেলে ৯৯৯ থেকে ফোন পেয়েই মামুন চৌধুরী নামের ওই ব্যক্তিকে উদ্ধারে অভিযান শুরু করি। আমরা মোবাইলে তার সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রেখে সঠিক অবস্থান জানার চেষ্টা করছিলাম।
তিনি আরও বলেন, ‘রাত হওয়ায় কিছুটা বেগ পেতে হয়। তখন হেভি টর্চলাইট আর লেজার লাইটের মাধ্যমে আমাদের অবস্থান জানাই। ওই ব্যক্তি তখন মোবাইলের টর্চ জ্বালিয়ে রাখলে তার অবস্থান নিশ্চিত হই।
'পরে ফটিকছড়ির ভূজপুর সীমানার কাছাকাছি গভীর জঙ্গল থেকে সুস্থ অবস্থায় তাকে উদ্ধার করি। অভিযানে বন বিভাগের কর্মীরা ও স্থানীয় এক যুবক সহায়তা করেন।’
উদ্ধার হয়ে ফিরে আসা মামুন চৌধুরী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘হাঁটতে গিয়ে পথ ভুলে এমন বিপদে পড়ব, চিন্তা করিনি। পথ হারিয়ে কিছুটা বিচলিত ছিলাম, তবে সাহস হারাইনি।
‘আমার মেয়ে ৯৯৯-এ কল করে জানানোর পর বিশ্বাস ছিল আমাকে উদ্ধারে অবশ্যই পুলিশ আসবে। তা সত্যি হলো। তাদের প্রতি চিরকৃতজ্ঞ।’