ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের সাবেক অধ্যাপক সাইদা খালেক হত্যার ঘটনায় ব্যাপক পুলিশি তৎপরতায় গ্রেপ্তার হয়েছেন অভিযুক্ত আনোয়ারুল ইসলাম। ঘন ঘন স্থান পরিবর্তন করায় তার অবস্থান শনাক্তে বেগ পেতে হয়েছে পুলিশকে। সবশেষ মোটরসাইকেলে পালানোর সময় গাইবান্ধার সাদুল্লাহপুর-পলাশবাড়ী সড়ক থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে গাজীপুরের কাশিমপুর থানা পুলিশ।
শুক্রবার রাতে এ ঘটনায় কাশিমপুর থানায় মামলা করেছেন নিহত অধ্যাপকের ছেলে।
গ্রেপ্তার আনোয়ারুল ইসলামের বাড়ি গাইবান্ধার সাদুল্লাহপুর থানার বজরুখ জামালপুরে।
নিউজবাংলাকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন অভিযানে অংশ নেয়া কাশিমপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) দীপঙ্কর রায়।
কীভাবে অভিযুক্তকে শনাক্ত করলেন- এমন প্রশ্নে এসআই দীপঙ্কর বলেন, ‘প্রফেসর ম্যাডাম নিখোঁজের আগের দিন আনোয়ারুল কাজ করেছে। ম্যাডামের সঙ্গে গাছ কাটছে। নিখোঁজের জিডি পাওয়ার পর গিয়ে দেখি সব রাজমিস্ত্রি আছে, কিন্তু ও মিসিং। তখন ওর ফোন নম্বর নিয়ে দেখি ফোন বন্ধ। তখন একটু সন্দেহ হলে প্রযুক্তির সাহায্যে লোকেশন নিই।
‘লোকেশনে দেখা গেছে গাইবান্ধা আছে। একপর্যায়ে প্রফেসর ম্যাডামের একজন রিলেটিভের সঙ্গে ওর ফোনে কথা হয়েছিল। তখন ও বলেছিল, সে চট্টগ্রাম চলে গেছে। আর আমরা প্রযুক্তির মাধ্যমে দেখছি ওর লোকেশন দেখাচ্ছে গাইবান্ধা।’
তিনি আরও বলেন, ‘ঠিক তখন আমরা মোটামুটি সন্দেহ ধরে নিলাম, যেহেতু কথা কাজে অমিল আছে, সে খারাপ কিছু করতে পারে। দুই রাত ধরে আমরা ওই প্রফেসরের সন্ধান করেছি। ডিবির একটা টিমও ছিল আমাদের সঙ্গে।’
দীপঙ্কর বলেন, ‘শ্বশুর বাড়ি, নিজের বাড়ি ও বন্ধুর বাড়িতে গিয়ে ঘন ঘন স্থান পরিবর্তন করছিল আনোয়ার। কোথাও গিয়ে স্থির থাকে নাই। একপর্যায়ে খুব টাফ হয়ে গেছিল আমাদের জন্য। আমরা ওই এলাকায় (গাইবান্ধা) গেছি, সেটা টের পেয়ে মোটরসাইকেলে করে পালাচ্ছিল। পরে সাদুল্লাহপুর-পলাশবাড়ী রোড থেকে ওকে ধরেছি।’
সাবেক অধ্যাপক সাইদা খালেককে হত্যার পর চাবি নিয়ে তার বাসায় যান আনোয়ারুল। বাসায় ল্যাপটপসহ অনেক মূল্যবান জিনিস ছিল বলেও জানান এই পুলিশ সদস্য।
তিনি বলেন, ‘বাসাতে যেহেতু ম্যাডাম একা থাকতেন, উনার সন্তানরাও ঠিক জানেন না কী কী নেয়া হয়েছে। ও হত্যার পর আনোয়ার ১০ হাজার টাকা ও দুটি মোবাইল নেয়। মোবাইল দুটি উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া তার কাছ থেকে ২ হাজার ৬৫০ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।’
শনিবার তাকে আদালতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড চাইবে পুলিশ।