বাংলাদেশ নিয়ে প্রকাশিত যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের (এইচআরডব্লিউ) সর্বশেষ প্রতিবেদন এ দেশ থেকেই ‘ড্রাফট’ করা বলে মনে করছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
শুক্রবার রাজধানীর মিন্টো রোডে মন্ত্রীর সরকারি বাসায় সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘হিউম্যান রাইটস ওয়াচের বিবৃতিটি আমি দেখেছি। এটি পড়ে মনে হয়েছে, বাংলাদেশ থেকে হয়তো কেউ ড্রাফট করে দিয়েছে এবং তারা তা পরিমার্জন করে প্রকাশ করেছে মাত্র, এর বেশি কিছু নয়।’
তিনি বলেন, ‘এটি কোনোভাবেই বাস্তবসম্মত নয়, একপেশে ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। সেখানে উল্লিখিত নির্দিষ্ট দু-তিনটি বিষয় ছাড়া মানবাধিকার নিয়ে তাদের আর কিছু জানা আছে বলে মনে হয় না। একজন লেখক ও রেইন ট্রি হোটেল নিয়ে কিছু ব্যক্তিবিশেষ বিভিন্ন সভা-সমিতিতে প্রায়ই যা বলে থাকেন, বিবৃতিতে সেগুলোই আছে।’
এর আগে বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এইচআরডব্লিউর ‘বৈশ্বিক প্রতিবেদন ২০২০’-এ বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে বলা হয়, ‘বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার ২০২১ সালে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে সংঘটিত বিচারবহির্ভূত হত্যা, নির্যাতন ও গুমের ঘটনার প্রমাণ নিয়ে জাতিসংঘ, দাতা এবং বেসরকারি সংস্থাগুলোর উত্থাপিত উদ্বেগগুলো খারিজ করে দিয়েছে।’
এতে আরও বলা হয়, ‘করোনা মহামারি মোকাবিলায় সরকারের পদক্ষেপের সমালোচনাকারী নাগরিক অধিকারকর্মী, সাংবাদিক ও এমনকি শিশুদের বিরুদ্ধেও বাংলাদেশ সরকার কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে।’
ওই প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান বলেন, ‘এ ধরনের সংগঠন থাকা অবশ্যই ভালো, কিন্তু বিভিন্ন দেশের ব্যক্তিবিশেষের কাছ থেকে তথ্য নিয়ে ব্যক্তিবিশেষের স্বার্থ রক্ষা ও রাজনৈতিক উদ্দেশে নিজেদের ব্যবহার করা, বিবৃতি দেয়া সংগঠনকে প্রশ্নবিদ্ধ করে, এ ক্ষেত্রে সেটিই ঘটেছে।’
তিনি বলেন, ‘কয়েক দিন আগে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা গুয়ান্তানামো বে’র বন্দি নির্যাতন কারাগার বন্ধের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি যে আহ্বান জানিয়েছে এবং হিউম্যান রাইটস ওয়াচ যে দেশে বসে পরিচালিত হয়, অর্থাৎ সেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেই যে মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন হয়, এসবের দিকে নজর দিতে হিউম্যান রাইটস ওয়াচের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি।’
'সরকার ওমিক্রন প্রতিরোধের নামে বিএনপি দমনে বেশি সচেষ্ট’- বিএনপির এমন বক্তব্যের জবাবে মন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ‘ওমিক্রন প্রতিরোধে শুধু বিএনপির সমাবেশ বন্ধ রাখতে বলা হয়নি, আওয়ামী লীগসহ সব রাজনৈতিক দলের জন্যই তা প্রযোজ্য। এখন বিএনপি ওমিক্রন প্রতিরোধ না করে ওমিক্রন বেশি ছড়াতে চায় কি না, সেটিই প্রশ্ন।’
এর আগে হাছান মাহমুদ ভিডিও কনফারেন্সে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন রাঙ্গুনিয়া উপজেলার দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা, হত্যাকারীদের বিচারের পথ রুদ্ধ করা এবং বিনা বিচারে শত শত সামরিক সদস্যের ফাঁসি দেয়া এ দেশে সবচেয়ে বড় মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা।’
কমিশনের রাঙ্গুনিয়া শাখার সভাপতি অধ্যক্ষ কে এম মুছার সভাপতিত্বে সম্মেলনে উপজেলা চেয়ারম্যান স্বজন কুমার তালুকদার উদ্বোধক ও রাঙ্গুনিয়া পৌরসভা মেয়র মো. শাহজাহান শিকদার বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন।